আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরে ভাই আর মাত্র তো ৩ টা বল, হেলমেট লাগবে না।

দুরে তুমি দাড়িয়ে এইটা ছবিটা দেখে আবার সেই ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা মনে পড়ে গেল। দিনাজপুর স্টেডিয়াম এ সিন্তেথিক টার্ফ এ একটা ২০-২০ ম্যাচের শেষ ওভারে বল করছিলাম। ২য় বলে একটা বোল্ড করলাম একজন কে। কিন্তু পরের ব্যাটসম্যান তারাহুরা করেই হেলমেট ছাড়াই মাঠে নেমে পড়ল !!! বেটার সাহস দেখে অবাক হলাম !!! যেখানে সাধারন টার্ফ এই পেস বোলারদের সামনে সবাই হেলমেট পড়ে, সেখানে কি না সিন্তেথিক টার্ফ এ ছেলেটা হেলমেট ছাড়াই নামল !!! আমি সাবধান করার জন্য বললাম, ভাই হেলমেট টা পড়েন, কিন্তু বেটা বলে কি !!! আরে ভাই আর মাত্র তো ৩ টা বল, হেলমেট লাগবে না। ফিল্ডিং এর সবাই বলল হেলমেট নিতে, এমন কি আম্পায়ার ও বললেন, কিন্তু বেচারা সুনল না।

আমার ও মেজাজ টা বিগ্রে গেল। ৩য় বলটা গুডলেংথ থেকে বাউন্স করালাম, বাই ৪ খেলাম। মেজাজ আরও গরম। ৪র্থ বলটা ইচ্ছে করেই ওর মুখ বরাবর একটা "বিমার" মারলাম, কিন্তু কোনরকম সে গ্লাভস দিয়ে আটকালো। তখনও বললাম, ভাই হেলমেট নেন।

কিন্তু ও শুনল না। আমার মেজাজ তখন আরও গরম হয়ে গেল। বোলিং ইন্ড এ জাচ্ছি আর ভাবছি, একটা চরম বাউন্স দিব, সাথে গতি বেশি। ইনিংস এর ৫ম বল, অনেক গতি দিয়ে শর্টপিচ থেকে ব্যাটসম্যান এর শরীর বরাবর একটা বাউন্স দিলাম। আমি স্পষ্ট দেখলাম, বলটা ব্যাটসম্যানের বাম চোয়ালে লেগেছে !!! কিন্তু কেউ কিছু বুঝে অঠার আগেই আমি বুঝতে পারলাম কিছু একটা খারাপ হয়েছে।

সাথে সাথেই ব্যাটসম্যান আস্তে করে পিছন দিকে হেলে পড়ে গেল !! কোন কথা নেই কার মুখে, সবাই দৌড়ে এলো ব্যাটসম্যানের কাছে, সবাই ব্যাটসম্যানকে বলছে কি হয়েছে ?? কিন্তু ও কোন কথাই বলছে না, শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। আমিও গেলাম সামনে, গিয়ে দেখি ওর মুখ থেকে রক্ত গরিয়ে পরছে, আর ছেলেটি এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ওর চোয়ালের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, বলের সুতা টা বাম চোয়ালে একেবারে গভীর দাগের মত হয়েছে। এই দৃশ্য দেখে আমি সাথে সাথেই মাটিতে শুয়ে পরলাম। সবাই আমাকে বলতেছে, এটা কি করলি ???? ওই সময় নিজেকে অনেক অপরাধী বলে মনে হচ্ছিল।

আমি অনেক্ষন ওভাবেই শুয়ে থাকলাম মাঠে। ওই ছেলেটিকে দিনাজপুরের কোন এক হাস্পাতালে নাকি ভর্তি করেছিল। আর আমি ছিলাম, মালদহপট্টির ডায়মন্ড A নামের এক হোটেলে। সারা রাত ঠিক মত ঘুমাতে পারি নি। পরে শুনেছি ধীমান এর কাছ থেকে।

ওর চোয়াল এর হার গুলো নাকি একেবারে গুরো হয়ে গিয়েছিল। ৬ মাস নাকি বেচারা কথা বলতে পারে নি, নাক দিয়ে খাওয়াতে হয়েছিল। কোন এক অজানা ভয়ে সেদিন বা তার পরের কোন সময়ও তার সাথে দেখা করতে যেতে পারি নি। অনেক খারাপ লেগেছিল জদিও। ভাই আমাকে মাফ করে দিও।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।