somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুম রহমান
শেষ পর্যন্ত লেখাটাই থাকে। টিভি, রেডিও, ওয়েবসাইট, চলচ্চিত্র, মঞ্চ, বিজ্ঞাপণ, ব্লগ - লেখার যতো মাধ্যম সবখানেই লিখতে হবে। পৃথিবী পাল্টে গেছে - এখন আমরা দুহাতের দশ আঙুলেই লিখি।

আমার দেখা কিছু সেরা ছবি - ফারেনহাইট ৯/১১

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মুক্তি : ২০০৪
দৈর্ঘ : ১২২ মিনিট
রঙ : রঙিন
দেশ : যুক্তরাষ্ট্র
ভাষা : ইংরেজি
পরিচালনা : মাইকেল মুর
প্রযোজনা : মাইকেল মুর, জিম চাজমেকি, ক্যাথলিন গ্লাইন, হার্ভে উইনস্টেন, বব উইনস্টেন
চিত্রনাট্য : মাইকেল মুর
অভিনয় : মাইকেল মুর, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বেন এফলাক, স্টিভি ওয়ান্ডার
সঙ্গীত : জেফ গিবস
চিত্রগ্রহণ :
সম্পাদনা : কুর্ট এঙ্গফার, টড এডি রিচম্যান, ক্রিস সুয়ার্ড
কাহিনী সংক্ষেপ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালের সন্ত্রাসী হামলার আমেরিকার নিরাপত্তা ব্যবস্থার গভীরে চোখ রেখেছেন মাইকেল ম্যুর তার এই তথ্যচিত্রে। প্রকারান্তরে এই ছবিতে মাইকেল ম্যুর দেখিয়েছেন জর্জ ডব্লুউ বুশ কীভাবে ব্যর্থ হয়েছেন মার্কিনদের নিরাপত্তা রক্ষা করতে, শুধু তাই নয় এ ছবিতে অনর্থক ইরাক হামলার সমালোচনাও করা হয়েছে। একজন ব্যর্থ ব্যবসায়ী জর্জ ডব্লিউ বুশ কীভাবে সৌদি রাজা ও বিন লাদেনের সহযোগিতায় প্রতারণামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। যখন সন্ত্রাসী হামলা হয় কীভাবে বুশ ব্যর্থ হয় এবং নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে কীভাবে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করে Ñ এই সব সত্যই এই তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে। ছবিতে ম্যুর দেখিয়েছেন যে এ সন্ত্রাসী হামলার কথা বুশ আগে থেকেই জানতেন। এমনকি যখন প্রথম বিমানটি হামলা করে তখন তিনি ফ্লোরিডার একটা স্কুলের বাচ্চাদের সাথে গল্প করছিলেন। শুধু তাই নয় দ্বিতীয় বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উপর ভেঙে পড়লে যখন তিনি খবর পান যে, জাতি হুমকির মুখে তখন তিনি বাচ্চাদের গল্প পড়ে শোনাচ্ছিলেন। ম্যুর এ ছবিতে আরও দেখিয়েছেন যে, বুশ প্রশাসন ইচ্ছাকৃত ভাবে মিডিয়ার মাধ্যমে মার্কিন সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
বিশেষত্ব : সাহসী এই তথ্যচিত্র মুক্তির সাথে সাথে আমেরিকা ও সারাবিশ্বে ব্যাপক আলোচিত ও প্রশংসিত হয়। সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসা সফল তথ্যচিত্র এটি। শুধু আমেরিকাতেই ১২০ মিলিয়ন ডলার এবং সারা বিশ্বে ২২০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে এ ছবি। ২০০৪ সালে কান ফিল্ম ফ্যাস্টিভালে এ ছবি প্রদর্শনের পর সবাই ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে সম্মান দেখায়, কানের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে সম্মান দেখানোর রেকর্ড। কানের সবচেয়ে বড় পুরস্কার পাম ডি’অরও এ ছবি পায়। ২০০৬ সালে এন্টারটেইমেন্ট উইকলি’র করা এক জরিপে বিশ্বের ২৫টি বিতর্কিত ছবির মধ্যে এটি তৃতীয় অবস্থানে আসে।
বিশেষ তথ্য :
১. কল্পবিজ্ঞান কাহিনীকার রে ব্রাডবারি’র ১৯৫৩ সালের উপন্যাস ফারেনহাইট ৪৫১ অনুসরণে এ ছবির নাম রাখা হয় ফারেনহাইট নাইন এলিভেন। ব্রাডবেরি অবশ্য তার উপন্যাস অনুকরণে এই নামকরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ব্রাডবেরি অবশ্য নিজে উইলিয়াম শেকসপিয়র থেকে ওয়াল্ট হুটম্যান পর্যন্ত বহু লেখকের উদ্ধৃতি বা লেখা থেকে তার একাধিক বইয়ের নামকরণ করেছেন।
২. মাইকেল ম্যুর প্রথম থেকেই এ ছবিকে আর (রেস্টিকটেড) রেটিং চেয়েছেন। কারণ তার বক্তব্য ছিলো, ১৫-১৬ বছরের বালকরা এ ছবি দেখলে ইরাক যুদ্ধে যেতে চাইবে। এ ছবি অবশ্য আর রেটিং পেয়েছিলো, ‘কিছু নৃশংস এবং অস্বস্তিকর দৃশ্য ও ভাষার জন্য।’
৩. ম্যুর একজন মার্কিন কণ্ডাকটার নিক বার্গের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। পরে তাকে ইরাকে কিডন্যাপ করা হয় ও হত্যা করা হয়। ম্যুর এই সাক্ষাৎকারটি আর ছবিতে রাখেননি। তিনি এই অংশটি মিডিয়াতে নয় বরং তার পরিবারকে দেন।
৪. চলচ্চিত্র ইতিহাসে এটি একমাত্র তথ্যচিত্র যা সব ছবিকে পেছনে ফেলে ১ নম্বর অবস্থানে ঠাঁই নেয়।
৫. মাইকেল ম্যুর তার এই ছবিকে ইন্টারেনেটে সবার ডাউনলোডের জন্যে ছেড়ে দেন, যাতে করে প্রত্যেক আমেরিকান এটি দেখতে পারে।
৬. মাইকেল ম্যুর এ ছবিকে অস্কারে দিতে চাননি। কারণ তিনি চেয়েছিলেন ২ নভেম্বর ২০০৪ -এ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ ছবিটি টিভিতে দেখানো হয়। এদিকে অস্কারের নিয়মের পরিপন্থি ছিলো সেটা। তাছাড়া ম্যুর এর আগেও সেরা তথ্যচিত্রের জন্যে অস্কার পেয়েছিলেন। অবশ্য কাহিনী চিত্র জমা দেয়ার ক্ষেত্রে অস্কারের বাধ্যবাধকতা কম এবং ম্যুর অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারের জন্যে এটি জমা দিতে চেয়েছিলেন। একাডেমি অব মোশন পিকচার্স আর্টস এণ্ড সায়েন্স এই তথ্যচিত্রের জন্যে অস্কারে তথ্যচিত্র জমা দেয়ার নিয়ম-কানুনে শিথিলতা আনে এবং এটিকে টিভিতে দেখানোর অনুমতি দেয়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×