জেরুজালেমে আবার শুরু হল বোমা বৃষ্টি। গায়ের জোরে হঠাৎ করা হল একগাদা নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করা হলো পাখীর মতন ছটফট করতে মারা গেল ছোট ছোট শিশুগুলো। প্যালেস্টাইন আর ইসারাইলির কয়েকটা রাজনৈতিক নেতাগুলো উসকানীতে শুধু শুধু বলি হল নিরাপরাধ মানুষগুলো। পালেস্টাইন আর ইসরাইলের লাশের অনুপাত ছিল ২০০:৫। এখানে পরিসংখ্যন দেখে একটা ছোট বাচ্চা বলে দিতে পারবে হিংস্র আগ্রাসনে অগ্রভাগে কারা ছিল। সারা বিশ্ব পাকিস্তানের মালালাকে নিয়ে এত হৈ চৈ করেছে। সহজ সরল মালালা শিক্ষার জন্যে আন্দোলন করেছে। কিন্তু বর্হিবিশ্ব তিলকে তাল বানিয়ে বলেছে মালালা সন্ত্রাসীর বিরূদ্ধে লড়াই করছে। সেই থেকে সবাই তাকে বাহবা দিচ্ছে। অথচ এতগুলো প্যালেস্টাইন বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেললো বর্হিবিশ্বে কেউ টু শব্দ করলো না। কোন মুসলিম দেশ তীব্র প্রতিবাদ জানালো না। আবার প্রমান করল, আমাদের মুসলিম দেশগুলো মেরুদন্ডহীন এবং নির্বোধ। কারোর প্রতিবাদ করার মতন সাহস এবং একতা নেই। আমি প্যালেস্টাইনে ইসরাইলের আগ্রাসনের নিন্দা জ্ঞাপন করে একটা কবিতা লিখেছিলাম।

খেলার বিকালের মাঠে বারুদের গন্ধ
-----------------------------------------------
শরতের আকাশ কিঞ্চিত বাদামী ,
প্রায়শই আজকাল নীল থাকে না ।
তুলতুলে মেঘে আমি সাদা ভাগটুকু পাই না
ওখানেও কালো কালো ছোঁপ একটু ময়লাটে ;
গতকাল কিন্তু এরকম ছিল না ।
স্পষ্ট দেখে এসেছিলাম সবুজ মাঠে একলা প্রজাপতি ,
ছোট ছোট পোষা কুকুরগুলো হাঁটছিলো পায়ে পায়ে ,
খেলার মাঠ জুড়ে অসংখ্য ক্ষুদে খেলুড়ে
কারো পায়ে ফুটবল ,
কারো বুকে আঁগলে থাকে ঘুড়ি ,
একটু লম্বা লম্বা পা ফেলে দ্রুত হেঁটে যায় বয়স্ক দেহ ,
কোণায় কোণায় কংক্রিটের বেঞ্চে এসে বসে অনাগত শিশুর মা ,
নির্মল হাওয়ার খোঁজে একটু জিরায় ক্লান্ত পথচারী ,
সবারই ভিতর আরেকটু বেশী ভালো থাকার আকাঙ্খা ।
আলো মিইয়ে গিয়ে যখন সন্ধ্যা নামে ,
কুয়াশার সাথে তখন ভাব করে ঝি ঝি পোকার দল,
এগুলো কিন্তু অতীত গত দু’দিনের কথা ।
বর্তমান আজ সেই জায়গাগুলোতে গণকবর ;
যে ছেলেটা ঘুড়ি নিয়ে বসে থাকত
ও ঘুড়ি হাতে নিয়ে মাটির নিচে চাপা পড়েছিল
একটা বোমারু বিমানকে বন্ধু ভেবে টক্কর দিতে ঘুড়ি উড়িয়েছিল ।
অনাগত শিশুর মা এখন মুমূর্ষ,
অনাগত শিশুটাকে বাচাঁনো যায় নি, মাকে বাঁচানোর শেষ প্রচেষ্টা।
গুটি ক’টা ডাক্তারের অসহায় মুখমন্ডল,
হাসপাতালগুলোতে সম্মুখে লাশের মিছিল ,
কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ বাড়ীর ছোট ছেলে , কেউ মিষ্টি গানের মেয়ে
গতকালে রাতের গুলির তীব্রতা ও বারুদের পোড়া ঝাঁ ঝাঁ গন্ধে
নিস্তবদ্ধ শেষ বিকালের খেলার মাঠ অসংখ্য গর্তের কলোনি , ভাঙ্গা গুঁড়ো স্কুল দালান।
কাল বিকালের কেউ নেই সেই ছেলেটি, সেই মেয়েটি, সেই মা, সেই বাবা, সেই ক্লান্ত দাদু।

আমরা আজ ওদের কবর খুঁড়ছি নীরবে নিভৃত শক্ত চোখের জলে।

২৩ ই নভেম্বর,২০১২
--------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ১৬৩/৩৬৫