আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ভারত ভ্রমণ -২য় পর্ব ((আগ্রা ফোর্ট +ফতেপুর সিক্রি ))

চোখ কেড়েছে চোখ ,উড়িয়ে দিলাম ঝরা পাতার শোক...। আমার ভারত ভ্রমণ --১ম পর্ব (( কালের কপোলে শিশির বিন্দু, তাজমহল-আগ্রা )) তাজমহল দেখা শেষে গেলাম আগ্রা ফোর্ট। যাওয়ার পথে উত্তর প্রদেশ সরকারের কুটির শিল্পের বিপণন সম্ভার পরিদর্শন। ভারত সরকার নিজেদের কুটির শিল্পের সাথে টুরিস্টদের পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য পুরো ভারত জুড়েই এমন অনেক বিপণন সম্ভার করে রেখেছে। এসব দোকানে কাপড় তো আছেই ।

আছে কাঠ,শ্বেতপাথর,চামড়ার তৈরি নানা রকম জিনিসের প্রদর্শনী এবং সেগুলো বিক্রির ব্যাবস্থা । (বিপণন সম্ভারে সাজানো আগ্রার ঐতিহ্যবাহী শ্বেতপাথরের নানা রকম জিনিস) এই জিনিসটা আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। আমাদের দেশেও যদি এই ব্যাবস্থা করা যেত ! যাইহোক , ***** আগ্রা ফোর্ট ***** আগ্রা ফোর্ট 'যমুনা'র তীরে অত্যন্ত প্রাচীন একটি অবস্থানে অবস্থিত। তাজমহল থেকে ২কিমি দূরে ষোড়শ শতাব্দীতে সম্রাট আকবরের তৈরি এই দুর্গ ,যার আকর্ষণ তাজের থেকে কোন অংশেই কম নয় । আগ্রা ফোর্ট ইউনেস্কোর অন্যতম বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত।

(ফোর্টের সামনে আমরা) আমাদের সাথে একজন গাইড ছিলেন,যিনি ফোর্টের ইতিহাস বলছিলেন ঘুরে দেখাতে দেখাতে। এক সময় এটি ছিলো চৌহান রাজপুতদের অধিকৃত ইট-নির্মিত একটি দুর্গ । ১০৮০ খ্রিস্টাব্দে গজনোভিদের বাহিনীর আওতায় চলে আসে এ দুর্গ। সিকান্দার লোদী (১৪৮৭ থেকে ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন) ছিলেন দিল্লীর প্রথম সুলতান, যিনি দিল্লী থেকে আগ্রা এসে এই ফোর্টে বসবাস করেন। তিনি এখান থেকে দেশ শাসন করায় আগ্রা দেশের দ্বিতীয় রাজধানীর গুরুত্ব লাভ করে।

সিকান্দার লোদী ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দে আগ্রা ফোর্টে মৃত্যুবরণ করেন। তারপর তাঁর পুত্র ইব্রাহিম লোদীর অধিকারে এ দুর্গটি ছিলো প্রায় ৯ বছর। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে ইব্রাহিম লোদী পানিপথে পরাজিত ও মৃতু্যবরণ করার পর আগ্রা ফোর্ট চলে যায় মোঘলদের অধিকারে। তবে লোদীদের সময়ে এ ফোর্টে পৃথক ক'টি রাজপ্রাসাদ, কূপ ও মসজিদ নির্মিত হয়। (প্রধান প্রবেশ দ্বার) 'কোহিনূর' নামক বিখ্যাত হীরকসহ বিপুল পরিমাণ ধন মোঘলদের করায়ত্ত হয় আগ্রা ফোর্ট তাদের অধিকারে চলে আসার পর।

১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে আগ্রা ফোর্টে সম্রাট হুমায়ুনের রাজ্যাভিষেক হয়। ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে চৌসাতে তার পরাজয়ের পর তিনি আগ্রাতে পুনরায় চলে আসেন। হুমায়ুন নামাতে কথিত আছে,নিজাম নামের এক পানি বহনকারী হুমায়ুনকে ডুবে মরে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করায় তাকে আগ্রা ফোর্টে অর্ধদিবসের জন্যে রাজমুকুট পরিয়ে কৃতজ্ঞতাসূচক সম্মান প্রদর্শন করা হয় এবং এর স্মরণে মুদ্রাও প্রচলন করা হয়। ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন বিলগ্রামে পরাজিত হন। এতে আগ্রা ফোর্ট ৫ বছরের জন্যে শেরশাহের অধিকারে চলে যায়।

১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথে মোঘলরা চূড়ান্তভাবে আফগানদের পরাজিত করে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতে তাদের দেড়শ' বছরের নিরবচ্ছিন্ন শাসন কায়েমের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করে। মোঘল সম্রাট আকবরের শাসনকাল ছিলো প্রায় পঞ্চাশ বছর (১৫৫৬-১৬০৫)। তিনি এটিকে তাঁর রাজধানীতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি 'বাদলগড়' নামে ইট-নির্মিত আগ্রার এই ফোর্টকে জরাজীর্ণ অবস্থায় দেখতে পেয়ে একে লাল বেলে পাথর দ্বারা পুনঃ নির্মাণের নির্দেশ দেন। অভিজ্ঞ স্থপতিদের দ্বারা এ ফোর্টের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।

বৃহদায়তনে বেশ স্থূলভাবে এ ফোর্টের সীমানা প্রাচীরের অভ্যন্তর ভাগ ইট দ্বারা নির্মাণ করে এর বহিরাংশে দেয়া হয় লাল বেলে পাথর। ১৫৬৫ থেকে ১৫৭৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৮ বছর পর্যন্ত চলে এ ফোর্ট পুনঃ নির্মাণের কাজ। এ সময়ে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার নির্মাণ শ্রমিক এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এখন পর্যন্ত এটি লাল বেলেপাথরের চারিদিকে পরিখা এবং বাগান ঘেরা দারুণ সুরক্ষিত এক দুর্গ । শত্রুসৈন্য দুর্গের কাছে এসেও যাতে সহজে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্যে পরিখায় থাকতো কুমিরের মতো হিংস্র জলজ প্রাণী, আর বাগানে থাকতো শ্বাপদ_হিংস্র জন্তু।

(পরিখা এবং বাগানের ধ্বংসাবশেষ) এ দুটো বিপদসঙ্কুল পর্যায় অতিক্রম করে শত্রু যদি দুর্গে প্রবেশও করে তখন ছিল অন্য ব্যাবস্থা। প্রধান প্রবেশ পথ ধরে গেলাম ভেতরে । ধীরে ধীরে উপরে উঠে গেছে সমতল সিঁড়ি (অনেকটা হুইল চেয়ারে চলাচলের জন্য যেমন সিঁড়ি থাকে ,সেরকম) । রাজারা যেহেতু ঘোড়ায় চলাচল করতেন,তাই পথটা এমন। দুই পাশে বিশাল বিশাল দেয়াল ।

দেয়ালে একধরনের ছিদ্র আছে,শত্রু আক্রমণ করলে যেখান দিয়ে গরম তেল ঢেলে দেওয়া হত । যাতে ঘোড়াগুলো আর এগুতে না পারে। এটা ছিল দুর্গ রক্ষার সব শেষ উপায়। (দুপাশে বিশাল দেয়াল ও সমতল সিঁড়ি,যেখানে সর্বদা থাকতো সতন্ত্র পাহারা) পুরাটাই পাথরের নির্মিত ফোর্ট , কোথাও ইট চোখে পড়ে না। ইতিমধ্যে আমরা দুইটা প্রধান গেট পার করে এসেছি।

ভিতরে প্রবেশ করতেই চোখ জুড়িয়ে গেল, নির্মাণ শৈলী অসাধারণ । এই দুর্গে দ্রষ্টব্যগুলি হল- যোধাবাঈয়ের মহল, শাহজাহানের খাস মহল, অঙ্গরী বাগ, মিনা মসজিদ, দেওয়ানি আম, দেওয়ানি খাস, শিশমহল, নাগিনা মসজিদ, মছি ভবন, মিনা বাজার প্রভৃতি। এখান থেকে তাজমহলও দেখা যায় । মৃত্যুর পরে যার স্থান হয়েছে তাজমহলে ,জীবিত কালে সেই মমতাজ নাকি এখানেই থাকতেন। জীবনের শেষ দিনগুলোয় শাজাহান ও এখানেই থেকেছেন ছেলেদের হাতে বন্দী হয়ে।

(আগ্রা দুর্গ এবং দূরে তাজমহল) আগ্রা ফোর্টের সম্মুখে সংরক্ষিত একটি বিরাট শিলালিপিতে উৎকীর্ণ আছে এর প্রকৃত ইতিহাস। এতে লিখা আছে, ''আগ্রা ফোর্ট হচ্ছে ভারতের সবচে' গুরুত্বপূর্ণ ফোর্ট। বাবর, হুমায়ুন, আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহ্ জাহান ও আওরঙ্গজেবের মতো মহামতি মোঘল সম্রাটগণ এখানে বসবাস করেছেন। এখান থেকেই তারা সমগ্র দেশ শাসন করতেন। সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও টাকশাল ছিলো এখানেই।

এ ফোর্টটি বিপুল সংখ্যক রাষ্ট্রপ্রধান, বিদেশী রাষ্ট্রদূত, উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ ও পর্যটক পরিদর্শন করেছেন। আগ্রা ফোর্ট ব্যতীত ভারতের অন্য কোনো ফোর্ট বা দুর্গের এতোটা খ্যাতি নেই। '' ফোর্টের চারদিকে চারটি গেট ছিলো। নদী অভিমুখী গেটটির নাম ছিলো খিজরী গেট, যার সম্মুখে নির্মাণ করা হয় বিভিন্ন প্রকারের বহু কূপ। ইতিহাসবিদ আবুল ফজলের বর্ণনামতে, বাংলা ও গুজরাটি সুন্দর নকশায় আগ্রা ফোর্টে পাঁচ শতাধিক অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়েছিলো, যার কিয়দংশ সম্রাট শাহ্ জাহান সাদা মার্বেলে প্রাসাদ নির্মাণের প্রয়োজনে ভেঙ্গে ফেলেছিলেন।

জানা যায়, আকবর সহ অন্যান্য মোঘল সম্রাট নির্মিত আগ্রা ফোর্টের অধিকাংশ অট্টালিকা ব্রিটিশ কর্তৃক সৈন্যদের ব্যারাক নির্মাণের প্রয়োজনে ধ্বংস করা হয়। ফোর্টের দক্ষিণ-পূর্বাংশে বড় জোর ৩০টি মোঘল স্থাপনা টিকে আছে। (ভতর দিক থেকে দুর্গের গেট) দিল্লী গেট, আকবর গেট এবং 'বেঙ্গল মহল' নামে একটি প্রাসাদই এখন আকবরের অট্টালিকা সমূহের প্রতিনিধিত্ব করছে। দিল্লী গেটটি ছিলো শহরমুখী। আরোহীসহ হাতীরূপী দুটি লাইফ সাইজের পাথর অভ্যন্তরীণ গেটে স্থাপিত, যার নাম ''হাতী-পল''।

দিল্লী গেটকেই সম্রাটের আনুষ্ঠানিক প্রবেশের স্মারক হিসেবে নির্মাণ করা হয়। ব্রিটিশ কর্তৃক 'আকবর গেটে'র পুনঃ নামকরণ করা হয় 'অমর সিং' গেট। এ গেটটি দিল্লী গেটের মতোই। এ দুটো গেটই লাল পাথরে নির্মিত। 'বেঙ্গল মহল'ও তৈরি একই পাথরে, যা বর্তমানে 'আকবরি মহল' ও 'জাহাঙ্গীর মহলে' বিভক্ত।

আকবরের মৃত্যুতে ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পুত্র জাহাঙ্গীরের সম্রাট হিসেবে রাজ্যাভিষেক হয় এই আগ্রা ফোর্টে। পরবর্তীতে সম্রাট শাহ্ জাহান ১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে আগ্রা ফোর্টে তাঁর রাজমুকুট পরিধান করেন। আগ্রা ফোর্টে সাদা মার্বেলে নির্মিত যতো প্রাসাদ আছে সবই তাঁর গড়া। তিনি এ ফোর্টে মোতি মসজিদ, নাগিনা মসজিদ ও মিনা মসজিদ নামে সাদা মার্বেল পাথরে তিনটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে সামুগড়ের যুদ্ধের পর সম্রাট শাহ্ জাহানের তৃতীয় পুত্র আওরঙ্গজেব আগ্রা ফোর্ট ঘেরাও করেন এবং নদী থেকে এ ফোর্টের পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন।

শাহ্ জাহান কূপের পানি পান করতে না পারায় পুত্রের নিকট আত্মসমর্পণ করেন। আওরঙ্গজেব তাঁর পিতা শাহ্ জাহানকে কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ দণ্ড ভোগ করতে হয় তাঁকে আগ্রা ফোর্টেই। ১৬৫৮ থেকে ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এখানেই ৮ বছর কারাবাস করেন শাহ্ জাহান। মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহ এখান থেকে নৌকাযোগে নিয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজের পাশে তাজমহলে সমাহিত করা হয়।

সম্রাট শাহ্ জাহান মৃত্যুর পর আগ্রা তার আড়ম্বর ও জমক হারায়। আগ্রা ফোর্টের আঠারশ' শতাব্দীর ইতিহাস হচ্ছে অবরোধ ও লুণ্ঠনের এক গদ্য কাহিনী। জাট ও মারাঠারা ছিলো যে কাহিনীর মুখ্য চরিত্রে। (অমরসিং দরওয়াজা) আমরা অমরসিং দরওয়াজা দিয়ে ঢুকে সামনেই দেখলাম জাহাঙ্গির মহল। সাদা মার্বেলে তৈরি সম্রাটের নিজস্ব মহল 'দেওয়ান-ই-খাস।

' গুরুত্বপূর্ণ অর্থাৎ খাস ব্যাক্তিদের জন্য এই দরবার। দারুণ কারুকার্যময় এক স্থাপত্য। এখানেই ছিল বহুল আলোচিত ''তখত-ই-তউস'' অর্থাৎ ময়ূর সিংহাসনটি, পরে যেটি দিল্লী ফোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। ('দেওয়ান-ই-খাস। ' যোধা-আকবর সিনেমার এক দৃশ্যে ঐশ্বরিয়া রাই নাকি এখানে তরবারির কসরত দেখিয়েছিলেন।

এই তথ্য গাইড মহাশয় আমাদের ফ্রিতে দিয়েছিলেন) (এই বেদিতে বসানো ছিল ময়ূর সিংহাসন। পেছনের দরওয়াজা দিয়ে সম্রাট দরবারে প্রবেশ করতেন। ) ''দেওয়ান-ই-আম'' নামে সাধারণ প্রজাদের জন্য আরেকটি দরবার কক্ষ আছে। যার মেঝে এবং ছাদ লাল বেলে পাথরে নির্মিত। 'দেওয়ান-ই-আমে'র ব্যালকনিতে বসে সম্রাট প্রজাদের অভিযোগ শুনতেন।

(''দেওয়ান-ই-আম''। মাঝে মাঝে এর উঠানে প্রজাদের সঙ্গে নিয়ে জলসাও উপভোগ করতেন সম্রাট) এর কাছেই নদীর পার্শ্ববর্তী অবস্থানে রয়েছে জেসমিন প্রাসাদ। সুসজ্জিত, অলঙ্কৃত এ প্রাসাদে বন্দী অবস্থায় জীবনের শেষ ক'টা দিন কাটান সম্রাট শাহ্ জাহান। এ প্রাসাদের আয়না দিয়ে তিনি দেখতেন তাঁরই অমর সৃষ্টি প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজের সমাধি_তাজমহল। জেসমিন প্রাসাদ লাগোয়া সুউচ্চ দেয়াল ঘেরা সাদা মার্বেলের ছোট্ট মিনা মসজিদে শাহ্ জাহান বন্দী অবস্থায় ইবাদতে মশগুল থাকতেন।

(জেসমিন প্রাসাদের বারান্দা থেকে তাজমহল) ফোর্টে রয়েছে মোতি মসজিদ। গাইড বললেন ,এক সময় এখানে ছাদ থেকে সোনার শিকল দিয়ে ঝোলানো থাকতো বিশালাকৃতির বহু মূল্যবান মুক্তা। (উঁচু পাঁচিলে ঘেরা মোতি মসজিদ) *****ফতেহপুর সিক্রি****** আগ্রা ফোর্টের পরে গেলাম ফতেহপুর সিক্রি। আগ্রা থেকে ৩৬কিমি দূরে সম্রাট আকবরের একসময়ের রাজধানী শহর ফতেহপুর সিক্রি। মাইল ছয়েক দীর্ঘ এক পাহাড় চূড়োয় তৈরি হয়েছিল।

অনুপম ভাস্কর্যমণ্ডিত বুলন্দ দরওয়াজা দিয়ে প্রবেশ করলে সামনেই জামি মসজিদ। মসজিদ চত্ত্বরের মাঝে আছে মুসলমান ফকির শেখ সেলিম চিস্তির সমাধির। (বুলন্দ দরওয়াজা,ছবি নেট থেকে) কথিত আছে, নিঃসন্তান আকবর সন্তানকামনায় খাজা সেলিম চিস্তির দ্বারস্থ হলে পিরবাবার আশীর্বাদে সম্রাটের হিন্দু মহিষী যোধাবাই-এর গর্ভে জন্ম নেয় এক পুত্র সন্তান। গভীর কৃতজ্ঞতায় সম্রাট সেই সন্তানের নাম রাখেন ‘সেলিম’, যিনি পরে সম্রাট জাহাঙ্গির নামে ইতিহাসে পরিচিত। আর খাজা সেলিম চিস্তির সাধনভূমিতে আকবর গড়ে তোলেন এক অনুপম নগরী।

ফতেহপুর সিক্রি স্থান পায় ইতিহাসে। (ফতেহপুর সিক্রি) আগ্রা ভীষণ ঐতিহ্যমণ্ডিত ,গুরুগম্ভীর এক শহর। যেখানে একসময় ছিল জাঁকজমক, হর্ষধ্বনির উৎফুল্লতা । আজ যা পড়ে আছে কালের স্বাক্ষী হয়ে। আগ্রা ফোর্টের আরও কয়েকটি বোনাস ছবি----> (কাছ থেকে 'দেওয়ান-ই-খাস।

') (বেগম মহল) (দরবার শেষে মহলে প্রবেশের টানা বারান্দা) (কারুকার্যময় রত্নখচিত পিলার) (শ্বেতপাথরের সূক্ষ্ম নকশা কাটা দেয়াল) (বেগমের সজ্জা ঘর ও স্নান করার ফোয়ারা) (মমতাজ মহলের বারান্দা। যেখানে পরবর্তীতে সম্রাট শাহজাহান বন্দী থেকেছেন। এই বারান্দা সংলগ্ন কক্ষ থেকেই তিনি আয়না দিয়ে তাজমহল দেখতেন) (সম্রাট আকবর কবুতর ভীষণ ভালবাসতেন। এটা কবুতর উড়ানোর বেদী,যেখানে রোজ সকাল-বিকেল যোধা-আকবর একসঙ্গে অবসর কাটাতেন আর কবুতরদের খাবার দিতেন) (''দেওয়ান-ই-আম'' এ জলসা বসলে এখানে বসে সম্রাজ্ঞী তার সখীদের নিয়ে তা উপভোগ করতেন। মাঝের বক্স আকৃতির কুঠুরিতে বসতেন সম্রাজ্ঞী নিজে এবং আশেপাশের গুলোতে তার সঙ্গিনী ও রাজপরিবারের অনান্য মহিলাগণ।

কুঠুরিগুলো ঢাকা থাকতো দামী ঝালর/পর্দা দিয়ে) (লাল বেলেপাথরের অপরূপ কারুকার্য দুর্গের সবখানেই) (হিন্দু রাণী যোধার মহল। যার একদিকে সম্রাটের বানিয়ে দেয়া কৃষ্ণ মন্দির এবং অন্যদিকে যোধার শোবার ঘর। ) (যোধা মহলের মিনার) (দুর্গের পেছনের দিকের ফটক) ভর দুপুর বেলায় ক্লান্ত হয়ে ফিরে এলাম হোটেলে । দুপুরের খাওয়া সেরে গেলাম টুকটাক শপিং করতে । শ্বেতপাথরের রেপ্লিকা তাজমহল,নবাবী আতর এসব ছাড়া কি আর আগ্রা থেকে ফেরা যায় ! আজকের রাতটাই আগ্রাতে।

কাল ভোরেই আবার যাত্রা শুরু । আবার সেই ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা,আবার লাগেজ নিয়ে ছুটোছুটি করে ট্রেনে ওঠা ,বাঙ্ক খুঁজে বের করা,আবারও ছুটে চলা ঝড়ের বেগে । এবার আমরা যাচ্ছি রাজস্থানের জয়পুর । আমার অনেকদিনের দেখতে চাওয়া জায়গাগুলোর একটা । : ***সূত্র ঃ উইকিপিডিয়া,স্মারক বই-আগ্রার ইতিহাস (আগ্রা থেকে কিনেছিলাম) *** ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.