হারব বলে আসিনি,কাঁদব বলে হাসিনি -তুমি আমার পাশে বন্ধু হে,বসিয়া থাকো,একটু বসিয়া থাকো ।
-সারাক্ষণ খালি গান গাস কেন ?গান গাওয়া ছাড়া ভাল্লাগেনা???তাও আবার হেড়ে গলায় । গিটারও তো বাজাতে
পারিস না । খালি গলায় গান গেয়ে গেয়ে খালি মুড অফ করাই দেস । মনে হয় যেন একটা ফাটা বাঁশ থেকে শব্দ বের হচ্ছে ।
এসবের কোন মানে আছে?
-না তো। কোন মানেই নাই ।
-তাহলে গাস কেন?
-এমনেই ।
-বিরক্তিকর । তোকে না কত বার বলেছি আমার সাথে এমনি জাতীয় কিছু না বলতে??
-স্যরি ।
-স্যরি?আজব !আর কোন কথা নাই তোর মুখে? তুই এরকম কেন?? গান গাওয়ার সময় তো ঠিকই লাফাইতে থাকোস । আশে পাশে
কে আছে না আছে কোন কিছুর খেয়াল তো থাকে না ।
-হু ।
-হু মানে??আল্লাহ কি তোকে জবান দেয় নাই?? নাকি গলা কি খালি গান গেয়ে মেয়ে দেরকে বিরক্ত করার জন্য দিয়েছেন??
কিছুই বললাম না আমি । চুপ করে থাকলাম কিছুক্ষণ ।
আমাকে চুপ থাকতে দেখাটাও উনার পছন্দ না । আবার শুরু করলেন ঘ্যান ঘ্যান
-চুপ করে আছিস কেন?
-আসলে তোর সামনে আসলে কেন জানি আমার মুখে আর কথা থাকে না । চল বিয়ে করে ফেলি ।
-কি ? কি বললি??
-না কিছু না ।
-আমি কিন্তু শুনেছি তুই কি বলসোস ।
-শুনলে আবার জিজ্ঞেস করস কেন??
কিছু বলল না । গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে চলে গেল ।
আমি কিছুই বললাম না । মনও যে খারাপ হল তা কিন্তু না । আসলে এমন কিছু যে হবে তা আমি আগেই জানতাম ।
জানা ছিল আগেই
তাই তেমন গায়ে লাগল না ।
ও যে আমার প্রথম প্রেম তাও কিন্তু না । এর আগেও বেশ কয়েকজনকে ভাল লেগেছিল । ভাল লাগাকে প্রেম বললে অবশ্যই ওর সিরিয়াল তিন কিংবা চারে থাকবে । তবে ভালবাসা এইটাই প্রথম ।
আসলে ইউনিভার্সিটিতে যখন ওকে প্রথম দেখি,তখনই প্রেমে পড়ে যাই বললে সেইটা হবে ডাহা মিথ্যা কথা । আর আমি মিথ্যা কথা একেবারেই পছন্দ করি না । যাই হোক ওর ব্যাপারে তেমন একটা ইন্টারেস্ট ছিল না। তাই তেমন কিছু জানতাম না । আসলে জানার আগ্রহই বোধ করি নাই ।
এমনকি নামটাও জানতাম না । ও যে খুব সুন্দরী তাও না । ওর থেকে আরো অনেক সুন্দরী আমাদের সাথে পড়ত,এখনো পড়ে । তবে এখন আমার ওকেই ভাল লাগে । আহামরি সুন্দরী হয়ত না,তবে একদম ঠিকঠাক ।
প্রথমে তেমন কিছুই মনে হয় নাই । আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম যে ওকেই আমার দরকার । আসলে সুন্দরী মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করা যায় । তবে ভালবাসতে হলে হয়ত ওর মতই কাউকে লাগে । আর তাই আমার একশোটা ফারিয়ার(ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে) দরকার নাই ।
একটা চৈতিই যথেষ্ট । প্রথম যেদিন থেকে ওকে ভাল লাগা শুরু
হয় তা নিয়ে বলি,
ইউনিভার্সিটি তে কয়েকদিন ক্লাস করেছি । তার কিছুদিন পরের কথা । খুব সম্ভবত বর্ষাকাল তখন । অনেক বৃষ্টি পড়ছিল ।
ক্লাসে যাব কি যাব না চিন্তা ভাবনা করছিলাম । শেষমেষ ভাবলাম ক্লাস না করলেও ক্যাম্পাস থেকে একটু ঘুরেই আসা যাক ।
মাঠে দাঁড়িয়ে একা একা ভিজা যাবে । আর ব্যাঙের ডাকও
শোনা যাবে ।
আমার খুব পছন্দের শব্দগুলোর একটা হল ব্যাঙের ডাক ।
অন্তত এইটা শোনার জন্য হলেও যাওয়া দরকার ।
বেরিয়ে পড়লাম বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে । আমার মেস থেকে দশ মিনিট লাগে হেঁটে যেতে । তবে টেম্পুতেও যাওয়া যায় ।
টেম্পুতে উঠতে ইচ্ছে করছিল না ।
তাই হেঁটেই যাব সিদ্ধান্ত নিলাম । বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যাচ্ছি । আমার শার্ট প্যান্ট সব ভিজে
যাচ্ছে । ব্যাগ ও আনি নাই । এমনকি মোবাইল ও রেখে এসেছি ।
কারো যে আমাকে খুব দরকার তাও না । সবার সাথে
দেখা হলে কথা হয় এই যা । এর থেকে বেশি বন্ধুত্ব তখন কারো সাথে ছিল না । সহজে তখন কারো সাথে মিশতে পারতাম না ।
যাই হোক ভিজতে ভিজতে কাক ভেজা হতে হতে মাঠে চলে আসলাম ।
মাঠের পাশে একটা পুকুর আছে । ঐ পুকুরের পাশে বসতে ইচ্ছে করছিল । বসে দেখতাম বৃষ্টির পানি পুকুরে পড়লে কিভাবে ঢেউ এর মত করে তরঙ্গ আকারে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে ।
রবিদার কেয়াপাতার কবিতাটা মনে পড়ছে। দুই লাইনই জানি ,
''কেয়া পাতার নৌকা গড়ে সাজিয়ে দেব ফুলে
তাল দিঘীতে ভাসিয়ে দিব,চলবে দুলে দুলে ''
তবে বসব না ।
দূর থেকে দেখতেই অনেক সুন্দর লাগছে । হাঁটতে হাঁটতে কল্পনার চোখে দেখতে পেলাম
যেন আমার গ্রামে চলে এসেছি । ছোট্ট ছেলে তখন আমি । মাঠে দাঁড়িয়ে দেখতাম দূরের পুকুরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুইটি খেজুড়ের গাছ । তার পাশে পুকুর ।
পাশে ব্যাংগুলা বড্ড ডাকাডাকি করত । একটা ছড়াও মনে পড়ল ।
''-একটা কথা,
-ব্যাঙের মাথা,
-কেমন ব্যাঙ?
-সরু ব্যাঙ
-কেমন সরু?
-মিহি সরু
-কেমন মিহি?
-তাঁতীর মিহি
-কেমন তাঁতী?
-বামুন তাঁতী
-কেমন বামুন?
-ভাট বামুন
-কেমন ভাট?
-আচ্ছা ভাট
-কেমন আচ্ছা ?
-বাঁদর আচ্ছা
-কেমন বাঁদর?
-বনের বাঁদর
-কেমন বন?
-সুন্দর বন
-কেমন সুন্দর?
-খোকার মতন
-এই খোকাটা কাদের?
-কপাল ভাল যাদের...
এই ছড়াটা মনে পড়ে যাওয়ায় হয়তবা আপন মনেই বলতে শুরু করেছিলাম । ভেবেছিলাম পুরা মাঠ জুড়ে আমি একা ।
হঠাৎ পিছন থেকে খুব সুন্দর হাসির শব্দ শুনে চমকে গেলাম ।
-মজার তো!
পিছনে তাকিয়ে দেখলাম তাকে । বৃষ্টিতে ভিজে গেছে । তবে যেরকম বৃষ্টি পড়ছে তাতে সে অনেক আগে আসল না মাত্র আসল
বুঝা গেল না । আমি আসলে নিজের মাঝে এতোটাই ডুবে গেছিলাম কিছু খেয়াল করি নাই ।
-না মানে আসলে .........
-হয়েছে আর মানে মানে করতে হবে না ।
এমন বৃষ্টির দিনে কি আর কবিতা বা গান না গেয়ে থাকা যায় ?আমার নিজেরই তো গান
গাইতে ইচ্ছা করছে ।
বলে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মৌসুমি ভৌমিক এর একটা গান শুরু করল ,
''আমি শুনেছি সেদিন তুমি সাগরের ঢেউয়ে চেপে,
নীল জল দিগন্ত ছুয়ে এসেছো ।
আমি শুনেছি সেদিন তুমি নোনাবালি তীর ধরে,
বহুদূর বহুদূর হেটে এসেছো।
আমি কখনো যাইনি জলে, কখনো ভাসিনি নীলে;
কখনো রাখিনি চোখ, ডানামেলা গাঙচিলে।
আবার যেদিন তুমি সমুদ্রস্নানে যাবে,
আমাকেও সাথে নিও, নেবে তো আমায়?
বলো নেবে তো আমায়?
কেন শুধু ছুটে চলা, একে একে কথা বলা;
নিজের জন্য বাচা নিজেকে নিয়ে।
যদি ভালবাসা নাই থাকে, শুধু একা একা লাগে;
কোথায় শান্তি পাবো কোথায় গিয়ে;
বলো কোথায় গিয়ে?
আমি শুনেছি তোমরা নাকি, এখনো স্বপ্ন দেখো;
এখনো গল্প লেখো, গান গাও প্রাণ ভরে;
মানুষের বাচামরা এখনো ভাবিয়ে তোলে,
তোমাদের ভালোবাসা এখনো গোলাপে ফোটে।
আস্থা হারানো এই মন নিয়ে আমি আজ,
তোমাদের কাছে এসে দু’হাত পেতেছি;
আমি দু’চোখে গহ্বরে, শূন্যতা দেখি শুধু;
রাতঘুমে আমি কোন স্বপ্ন দেখিনা।
তাই স্বপ্ন দেখবো বলে,
আমি দু’হাত পেতেছি''
তখন মনে আছে পুরো মাঠে আমরা দুজন আর কয়েকটা
ব্যাঙ ছাড়া কেউ নেই । আমি আসলে কক্ষনো কল্পনা করি নাই আমার সাথে এমন হবে । আমার পাশে বসে কেউ দাঁড়িয়ে কেউ বৃষ্টিতে
ভিজতে ভিজতে আমাকে এভাবে গান শোনাবে ।
তাৎক্ষনিক ভাবে প্রেমে পড়ে গেলাম । ওকে নতুন ভাবে দেখতে শুরু করলাম ।
আসলে ওইদিন ওকে যেরকম সুন্দর লাগছিল তেমন আর কখনোই লাগে নাই । প্রতিমা টাইপের কিছু একটা বলা যায় । তারপর অনেক্ষন
দুইজন চুপ করে বসেছিলাম ।
তারপর ধীরে ধীরে কথা বললাম । ওর ব্যাপারে অনেক জানলাম, ওও আমার ব্যপারে জানল । তারপর আমরা আসলে খুব ভাল বন্ধু হয়ে যাই । এভাবেই তিন বছর কেটে গেল । কখনো ওকে কিছু বলা হয় নাই ।
আজকেই প্রথম ওকে
কিছু বললাম । আর তার ফল হইলো কি?ঠাটানো একটা থাপ্পড় । ভাগ্য ভালো আশে পাশে কেউ ছিল না ।
আমি জানি থাপ্পড় টাপ্পড় যাই দেক ও আমাকে ভালবাসে । এক প্রকারের বিশ্বাসই বলা যায় ।
মন থেকেই আসলে কথাটা আমি বিশ্বাস করি । বিশ্বাসটা কোথা থেকে আসল তা অবশ্য জানি না । তবে এইটাই সত্যি । মানে অন্তত আমার কাছে সত্যি ।
ঐ ঘটনার পর কয়েকদিন আর ওর সামনে যাই নাই ।
ওর সাথে যেন দেখা না হয় এ জন্য বেশ কয়েকটা ক্লাস মিস দিতে হয় । তবে কতই বা এড়ানো যায় ? এ ঘটনার পর প্রথম যেদিন দেখা হইল আমাদের ,ওইদিন আমি আর ও যেন কেউ কাউকে চিনি না । আমি মনে করলাম হ্যা । এইটাই হয়ত ভাল । ও হয়ত সময় নিচ্ছে ।
নেক সময় নেক । মনে মনে খুশিই হলাম । ও আমার জন্য এতটা সময় ব্যয় করছে! আমি ভাবতাম হয়ত ওর ম্যাচিউরিটির পরিচয় পেলাম । সময়টা তখন এমনই ছিল যে ও যাই করত তাই আমার ভাল লাগত । ওর ব্যপারে ভাবতেও ভাল লাগত ।
ভাল লাগত আসলে না, ওকে নিয়েই তো ভাবতাম ।
ওর সাথে দেখা হত কথা হত না,এই জিনিসটাই আমার জন্য অনেক বেশি কষ্টদায়ক ছিল । রাতে ঘুমাতে পারতাম না । ওর কথা ভেবেই ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতাম । কিন্তু আমার খুব সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস ।
ভোরের দিকে হয়ত ঘুম আসত । কিন্তু ছোটবেলায় একটা জিনিস নিয়ে নিজের সাথে বাজি ধরেছিলাম যে যত রাতেই ঘুমাই না কেন আমাকে সকাল ৮ টা বা এর কাছাকাছি সময়ের ভিতরেই উঠতে হবে । ১৫ মিনিটের বেশি এদিক সেদিক হওয়া যাবে না । ঠিক কি কারণে জানি না,হয়ত বা মনে নেই । তবে এখনো সে অভ্যাসটা রয়ে গেছে ।
দেখা গেল ভোর ৩ টায় ঘুমালাম কিন্তু ৮ টা বাজে উঠলাম । মাঝে মাঝে ৫ টাও বাজত। ঐ কয়েকদিন প্রায়ই এমন হত । এবং ওইটাই ছিল আমার জীবনের সবচাইতে সুন্দর সময় । ফলে চোখের নিচে কালি পড়ে গেল,গাল ঝুলে গেল ।
আয়নার সামনে নিজেকে চিনতে পারতাম না মাঝে মাঝে । কিন্তু তখন কখনো এমন কোন রাত পার করি নাই যে ওর কথা ভাবি নাই । ভাবতাম আর কী?ছোট্ট একটা স্বপ্ন । ঐ একই জিনিস ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতাম । ছোট্ট একটা ঘর,তার মাঝখানে বিশাল এক টিভি ।
তাতে আমি আর আমার ছেলে মেয়ে একসাথে সিনেমা দেখছি । আর মাঝে মাঝে উনি এসে আমাদের সাথে যোগ দিচ্ছেন । উনার তো অনেক কাজ তাই বেশি সময়ও দিতে পারতেন না । এই জাতীয় ছোট খাটো স্বপ্ন দেখতাম । এইটাই আসলে আমার জীবনের ইচ্ছে ছিল তখন ।
ছাত্র হিসেবে ভাল ছিলাম ,তবে টাকা পয়সা কিছুর জন্য আমার চিন্তা ছিল না। টিউশনি করাতাম । চলার মত টাকা পয়সা হয়ে যেত। অনেক ভাল ছাত্র হলেও ভবিষ্যতে বড় কিছু হবার স্বপ্ন আমি দেখি নাই । আমি আমার ঐ ছোট্ট সংসারের কথা ভাবতাম সারাদিন ।
আসলে স্বপ্ন যে আমি ঘুমিয়ে দেখতাম তা না । স্বপ্নটা জেগে জেগেই তৈরি করতাম ।
একদিনের কথা । ওর এক বান্ধবী আমাকে ডাকল । ওর বান্ধবীও আমার ক্লাস মেট ছিল ।
যাই হোক এসে বলল
-কি ব্যপার কি খবর তোমার?
-ভালই । তোমার কি খবর ।
-হু আমারো ভাল ।
-শুনো চৈতি তোমাকে এটা দিতে বলেছে ।
বলে সে আমাকে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিল ।
আমি খুব খুশি হয়ে গেলাম । যাক এতদিনে হয়ত ওকে নিজের করে পাব । ভেবে ফেললাম অনেক কিছুই । কিছুক্ষণের জন্য আমি ''টপ অফ দা ডে'' ছিলাম । তাই ভাবলাম এখন আর পড়ব না ।
যতক্ষন না পড়ব ততক্ষণই আমি টপ অফ দা ডে থাকব । ভেতরে ভেতরে একটা উৎকণ্ঠা কাজ করছে । এই উৎকণ্ঠাটাও মধুর । এত সহজে নষ্ট করা ঠিক হবে না । কি লিখতে পারে ও।
সারাক্ষণ এইটাই ভাবলাম । মেসে এসেও ভাবলাম আর ভাবলাম । শেষে আর থাকতে না পেরে খুলেই ফেললাম । সাথে সাথেই যেন আমার পা থেকে মাটি সরে গেল । মুখ থেকে মনে হল সব রক্ত সরে গেল ।
ওইটা কয়েক মুহূর্তের জন্যই । তারপর স্বাভাবিক হয়ে গেলাম । ভান ধরলাম যেন আমার কিছু হয় নাই । ভাগ্য ভাল রুম মেটরা ছিল না । চিরকুটে অনেক বড় বড় করে লেখা ছিল
NO
ভাল মত খুঁজে দেখলাম আর কিছু লেখা আছে কিনা ।
নাহ!একদম কিচ্ছু নেই । পুরোটা ফাঁকা ।
আসলে অনেক বেশি স্বপ্ন দেখে ফেলেছিলাম । স্বপ্নটা ভেঙ্গে যেতে বেশি সময় লাগে নাই । আমি অনেক বেশি বাস্তববাদী একটা মানুষ ।
তাই খুব আশাহত হলেও কিছুটা পরে মেনে নিয়ে ছিলাম । অদ্ভুত ব্যপার তার পরের দিনই আমি একটা স্কলারশিপ পেয়ে গেলাম । অস্ট্রেলিয়া যাবার । জীবনে যা কিছু জমিয়েছিলাম তা দিয়ে বিদেশ চলে যাব ঠিক করেছিলাম । কয়েকমাস ধরেই কেন জানি টাকা জমাচ্ছিলাম ।
হয়ত বা ছোট্ট সংসারের জন্য । কিন্তু এখন আর কিছুই আসে যায় না । আমাকে খুব দ্রুতই এ শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে । চৈতির কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যেতে হবে ।
যাব আমি চলে যাব ।
দশ বছর পরঃ
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সামনে দাঁড়িয়ে আমি । পাশে আমার ছেলে নীল আর মেয়ে চৈতি আমার হাত ধরে আছে । জীবনে প্রথম বারের মত ওরা বাংলাদেশে আসছে । নামার সাথে সাথে চৈতি আমাকে বলল
-বাবা এত গরম কেন ?
আমি কিছু বললাম না , খালি হাসলাম । মাথার ভেতর কে জানি গান গাচ্ছে,
(আমি শুনেছি সেদিন তুমি .........................................................)
'
(গল্পের শেষ দিকে এসে আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারি নাই ।
তাই দ্রুত শেষ করে দিয়েছি । এই গল্পের শেষ অনেক গুলা । তার ভিতর থেকে একটা বেছে নিলাম । অবশ্যই এইটা হ্যাপি এন্ডিং না । হয়ত আসল চৈতির বিয়ে হয়ে গেছে ।
কিংবা কে জানে ও হয়ত মারা গেছে । আমি চাইলে দুইজনকে মিলিয়েও দিতে পারতাম । কিন্তু আমি কিছুই করলাম না । কারণ হ্যাপি এন্ডিং শুধু সিনেমা আর গল্পে হয়। আমার জীবনে যেমন হ্যাপি এন্ডিং বলতে কিছু নাই ।
সেইরকম এই গল্পের ও কিছু নাই । ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।