আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিজিটাল ইলেক্ট্রিক শক!

লহ এ বিদ্যুৎ, ‘ফিরিয়ে দাও সেই’ প্রদীপের বাতি আর হাতপাখা। যে বিদ্যুতের দাম মাসে মাসে সুনামির মত্ততায় আমাকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায়, সেই অভিশপ্ত বিদ্যুতের ‘শক’ থেকে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও উপদেষ্টার কাছে মুক্তি চাই। যে সভ্যতার উন্নয়ন আমার শ্বাসরোধ করে, তার পৈশাচিকতা থেকে আমি বাঁচতে চাই। যে বিদ্যুতের নাম দায়মুক্তিপ্রাপ্ত লুটপাটের অবাধ আয়োজন। সে বিদ্যুৎ ফিরে যাক! হাঁ! প্রিয় দুর্ভাগা জনগণ, অবশেষে ০১ সেপ্টেম্বের,২০১২ থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়ল ভয়াবহ মাত্রায়।

০১ জুলাই,২০১২ থেকে, নতুন অর্থবছরে সরকারের উপহার হিসেবে বিদ্যুতের দাম ৫০% ভাগ বাড়ানোর আযোজন চলছিল। বিদ্যুতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ানো হচ্ছে পেট্রোল ডিজেল কেরাসিন ও গ্যাসের দাম। আর এসব পণ্যের একচেটিয়া ব্যবসাদার স্বয়ং সরকার বাহাদুর। যাক! অন্তত সিণ্ডিকেটের ঝামেলা এখানে নেই। সরকার বলতে পারে তুই বেটা বিদ্যুৎ ব্যবহার বাদ দিতে পারিস না? অবশ্যই পারি।

জন্মের পর বহুকাল অবধি বিদ্যুৎ এর মুখ দেখিনি। অচল তো ছিল না আমার দুনিয়া। কিন্তু হুজুর, বিদ্যুৎ, পেট্রোল ডিজেল কেরাসিন ও গ্যাসের দাম বাড়লে যে আর সবকিছুর দাম তালে তাল দিয়ে বাড়ে, আর আমার নাভিশ্বাস ওঠে। বিদ্যুতের এই যে নিত্য দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও লোড শেডিং কি কমেছে? এর চেয়ে বেশী লোড শেডিং কোন কালে ছিল? কিন্তু এরকম ভয়ঙ্কর মুল্যবৃদ্ধি তো ছিল না! যদিও লোডশেডিং কমে নাই, কমলেও জীবনবিদারি এই দামে তা নেয়ার সামর্থ আমার নাই। ক্ষমতার এমনই মহিমা সরকারের মহামহিমদের অনতিকালেই চেহারায় চিকনাই আসন গাড়ে,ঘাড়ে গর্দানে গালে স্ফীতি ছলকিয়া যায়।

আকর্ণ বিস্তৃত মধুর বিভৎস হাসিতে ক্ষমতার সুখ উছলিয়া পড়ে। তা তিনি বুর্জোয়া আদর্শের আদরের দুলালই হোন আর প্রলেতারিয়েত আদর্শধারী দুর্ভিক্ষের নায়কই হোন। তার উপর আছেন মহান দাপুটে আমলাদের, দোহাই তোদের রাজনীতি করিবারে মোর দে অবসর-আবদার আর আল্লাদ। শেষোক্ত শ্রেণীর দুইজন রাজনীতিক পেয়ে বাংলাদেশী বাঙ্গালী ও নৃতাত্বিক আদিবাসী জনগণের চৌদ্দপুরুষের স্বর্গে যাবার যোগাড়। একজন মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও অপরজন মাননীয় জ্বালানী উপদেষ্টা।

তবে জ্বালানী উপদেষ্টার জ্বালানোর পারঙ্গমতায় স্বর্গে যাবার আগে জ্বলে পুড়ে ছারখার হতে হচ্ছে। আচ্ছা, ক্ষমতা একবার হাতে পেলে দেশ চালানোর মতো সহজ কাজ আর কি হতে পারে? যে কোন সমস্যা জনগণ নামের গাধার উপর চাপিয়ে দিয়ে চাবকাও। চওড়া এক মধুমাখা বিষাক্ত হাসি দিয়ে ৫০% দাম বাড়িয়ে দাও। বলুন তো চোখ বুজে দাম বাড়িয়ে দেশ চালাতে কোন দক্ষতাটা লাগে? অবশ্য আমলাগিরির আয়েসি জীবনের ক্ষমতা অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অমুল্য তো বটেই। কতবড় তামাশা ! জনগণকে জ্ঞান করা হয় প্রজাতুল্য এবং ক্রীতদাস, আর বলা হয় দেশের মালিক-ক্ষমতার উৎস।

রেন্টাল-কুইক রেন্টালের খাই মেটাতে প্রাণঘাতি দামের বিদ্যুৎ থেকে আমাদের রেহাই দিন। আর না হয় মাসে মাসে শক না দিয়ে একবারে মেগা ডিজিটাল ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে আমাদের বাঁচার সাধ মিটিয়ে দিন। অবশ্য সাধ আর বেশী বাকীও নেই! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.