আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাপিডিয়ায় যুক্ত হোক 'ডাংগোয়াল'

হাসিনা ত শুইনা হাইসা'ই দিলেন,"ডাংগোয়াল"। হাসিনা, মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গরু খেদাইয়া (প্রয়োজনে ল্যাজে কামড় দিয়া হইলেও) ইন্ডিয়া থাইকা বাংলাদেশে চোরাই গরু আনে যেইসব দুর্ধষ ব্লাকী তারাই 'ডাংগোয়াল'। এইটা পুরুষবাচক নাকী স্ত্রীবাচক, বলিতে পারিব না। তবে কাজটা যেহেতু পোলারাই করে তাই বোধ করি পুংলিঙ্গ হওয়াটাই স্বাভাবিক।

তাইলে স্ত্রীবাচক শব্দটা কি হইবে? যাহাই হউক, ডাংগোয়াল শব্দের ব্যুৎপত্তি বিশ্লেষন করিতে গিয়া আপনাদের বিরক্তি বাড়াইতে চাইতেছিনা আপাতত। কিছু তথ্য দিয়া ঘুমঘুম ভাবখানা কাটাইতে চাই। বাড়ি আমার বাংলাদেশের ডাইন পা'এর কড়ে আঙুলের নখের মাথায়। তিন দিকে ইনডিয়া। ওই কড়ে আঙুল দিয়াই ভেপু পিঁপড়ার মত আমাদের যাওয়া আসা করিতে হয়।

অ্যাম্বুলেন্সও পার করাইতে হয়। একটু এইদিক সেইদিক হইবার জোঁ নাই। নইলে ছলাৎ করিয়া ইনডিয়ায় পড়িয়া যাবার সমুহ সম্ভাবনা। রিস্ক নিতে আমাদের আর ডর লাগে না। 'রিস্ক' শব্দটা যখন আসিয়াই গেল তখন আর প্যাঁচাল না পাইরা সোজাসাপ্টা বইলাই দেই- ডাংগোয়ালরা কী কী রিস্ক নেয়।

জীবনের রিস্ক। হ্যাঁ, জীবনের রিস্ক। বাইচা আসিলে কাড়ি কাড়ি টাকা, না আসলে লাশটাও আসে না ফিরে আর। ভাগ্যক্রমে যদিওবা ফেরে তাইলে তার এই অবস্থা হয়- ডাংগোয়ালের গরু পার করার বিষয়টা যেন একটা অন্যরকম থ্রীলার। চোরাচালান ঠেকাইতে ইনডিয়া কত কিছুই করিল।

কিন্তুক ইনডিয়ান বুদ্ধি কাহাতক আর ঢোপে টেকে। শেষমেষ বাধ্য হইয়া কাটাতারের বেড়া তুলিয়া দিল। ছোঃ। এই বাংগালী কাটাতারের বেড়া কি, চীনের প্রাচীরের ফাঁক গলাইয়াও যে কার্য সিদ্ধি করিবে সন্দেহ নাই। তাহারা কাটাতারের বেড়ার উপর দিয়া বাঁশের কপিকল বানাইল।

এরপর গরু মায় মহিষকে তাহার আগায় বান্ধিয়া এক চটকায় ওপার থাকিয়া এপার বাংলায় আনিতে সিদ্ধহস্ত হইল। এবং এই কাজটা যেহেতু অতি দ্রুত সম্পন্ন করিতে পারে তাই গরুকে পোক্তভাবে বাধিয়া লইবার জন্য সুরক্ষা বেল্ট আবিষ্কার করিল। হয়ত অবিশ্বাস্য শুনাইতে পারে, কিন্তু ইহা বাস্তবিক সত্যি যে, মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই তাহারা এক একটি কপিকলের সাহায্যে শ'খানেক গবাদি 'পার' করিতে পারে। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ২০টা অথবা পাঁচ সেকেন্ডে একটা। ছবি--- প্রতি রাইতে এক একটা ডাংগোয়ালের ইনকাম কত জানেন? ন্যুন্যতম ৩০ হইতে ৫০ হাজার টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ব সরকারি কিংবা বেসরকারী ব্যাংকগুলো ডাংগোয়ালের টাকা নেয় না। এমনকি একাউন্টও খোলে না। একবার ত এক ডাংগোয়াল দুই কোটি টাকা বস্তায় ভরিয়া লইয়া আসিয়াছিল। পরে এইসব অবৈধ কালো টাকা ব্যাংক নিতে রাজি না হওয়ায় নিরাশ হইয়া তাহাকে ফেরতই যাইতে হইল। ভাবিতেছেন, প্রশাসন? এই এলাকায় একবার চাকুরীখানা জমিয়া উঠিলে জোকের চোষক যেমন চিপ্টাইয়া ধরে চামড়া, চাকুরীজীবিও চিপকাইয়া থাকে নেহায়েত নুনের ছিটা না পড়িলে।

এইবার আসি ডাংগোয়ালের বউ প্রসঙ্গে। ইহারা অতিশয় ডেঞ্জারাস প্রজাতির। স্বামী ডাংগোয়ালী(ডাংগোয়াল-পেশায় যারা জড়িত) করিতে যায়। সারা রাইত দুঃশ্চিন্তা নয়, আতংক আর উৎকন্ঠায় থাকিতে হয়। বিএসএফ এর একটা গুলিই পারে সব স্বপ্নকে বারুদের ধোঁয়ার মত উড়িয়ে নিতে।

অল্প বয়েসে বৈধব্য, আর সামাজিক অপবাদ(ডাংগোয়ালের বউ) অতিষ্ট করে দিতে পারে বেঁচে থাকা! তবু এরা হার মানে না কেউই। স্বামীর বুলেটবিদ্ধ ক্ষতবিক্ষত দেহ টেনে হিঁচড়ে বর্ডার পার করে আনার দুঃস্বাহস এরা রাখে। পঁচা লাশ কাঁধে বয়ে আনার অদম্য সাহস এদের নির্জলা ভালবাসায়। এরা যাবার সময় হাসিমুখে বিদেয় দেয় স্বামিকে। কাঁদে না এতটুকুও- পাছে 'সাইত' নষ্ট হয়,অথবা দুর্ঘট কোনো কিছু ঘটে যায়! স্বামীর অবর্তমানে এরা খোঁজ রাখে পুরো গ্যাং-এর।

স্বামীর পুরো নকশা আর গেমপ্ল্যান এরাই ঠিকমত বোঝার সামর্থ রাখে। ডাংগোয়ালের সাথে নিবিড়ভাবে জড়াইয়া আছে এইখানকার হোটেল ব্যাবসা। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষন পার হইয়া যাহারা ফিরিয়া আইসে কাড়ি কাড়ি টাকা নিয়া, তাহারা খাইতে গিয়া আর কী বাছ বিছার করিবে! 'যা আছে নিয়ে আয় স-ব'- এই কথাটা হোটেল বয়কে বলিয়া দিতে হয় না কোনদিনই। এক ঘন্টায় ২০-৩০ হাজার বিল তুলিয়া তবেই নিষ্ক্রান্ত হয় এক একটা ডাংগোয়াল টিম। তবে ভাইবেন না, পাটগ্রাম এলাকাটা এই ডাংগোয়ালের টাকায় দিনকেদিন টাকার জোয়ারে ফুলিয়া ফাঁপিয়া উঠিতেছে।

ডাংগোয়ালরা এই যে জীবন বাজি রাখিয়া বর্ডার ক্রস করিয়া গরু পার করিয়া লইয়া আসে- তার বিনিময়ে যে মোটা অংকের টাকাটা পায় তাহা সে ধরিয়া রাখিতে পারে না কোনোমতেই। মদ আর জুয়াতেই উড়িয়া দিয়ে আসে স-ব ইনডিয়া ওপারে। হতবাক বোবা কান্নায় শংকিত আর আচ্ছন্নের মত একলা বিছানায় গুমড়ে মরে বিরহপিয়াসী। ------------------------------------------------------------------ কিছু ছবি- পড়ে আছে বুলেট আর মাথার মগজ লাশের গন্ধে নাকঢাকা দেয়া বিএস্এফ অপেক্ষা, কখন আসবে লাশ! উৎসুক নদী, উৎসুক জনতা। আর- স্বজনহারা বোবা কান্না- বিডিআর বিএসএফ পতাকা বৈঠক- তারপর রুটিন ওয়ার্ক- এ যেন এক প্রহসন মাত্র- বিচার বহির্ভূত হত্যা, ঘটনার ব্যাখ্যা দেয় বি এস এফ এভাবে- সীমানার এই টাওয়ারে চড়ে পাখির মত গুলি করে মানুষ মারা বন্ধ হবে কি? {এডিট চলছে} ------------------------------------------------------------------ ------------------------------------------------------------------ ডাংগোয়াল নিয়ে আরও অনেক কিছুই লিখতে চেয়েছিলাম।

আজ আর মন চাইছে না। ভাল লাগলে পরে একসময় পোস্টাব আরো বড় কলেবরে। আপাতত ডাংগোয়াল নামটার পরিচিতিটা হোক। ------------------------------------------------------------------ ডাংগোয়ালরা প্রায়ই অপঘাতে মরে কীনা বিএসএফ-এর গুলিতে- নিষ্ফল আবেদন ছাড়া করার কিছুই থাকে না তখন আর। প্রতিবাদ করবে কীভাবে?গুমড়ে মরে প্রতিবাদের বানী।

তাই- হ্যাকিং এর দায় স্বীকার করেছে বাংলাদেশ সাইবার আর্মি। ৩১ জুলাই '২০১২ ------------------------------------------------------------------ আমার ব্লগে স্বাগত সবাইকে। এলে কৃতার্থ হব... Click This Link ------------------------------------------------------------------- ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.