আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুর সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন (???)

পথ হারা পাখি কেঁদে ফিরি একা!!! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একমাত্র ব্যাক্তি যার লেখা ও সুর করা গান দু’টি দেশের জাতীয় সংগীতের মর্জাদায় অধিষ্ট হতে সক্ষম হয়েছে। অনেকের মতে রবীন্দ্রনাথ তিনটি দেশের জাতীয় সংগীত রচনাকারী কারণ শ্রীলংকার জাতীয় সংগীত রবীন্দ্রনাথের লেখা তবে সংগীতটি শ্রীলংকান ভাষায় (সিংহলী) অনুদিত বলে ইদানিং প্রচার প্রচারনা চালানো হচ্ছে। শ্রীলংকার জাতীয় সংঙ্গিতটি যে রবীন্দ্রনাথেরই লেখা এ ব্যাপারে আমি পুরোপুরি নিশ্চিত নই। যাই হোক, প্রসংগে আসি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আমার সোনার বংলা....” গানটি ১৯০৫ইং সালে বঙ্গভঙ্গের সময় ও বঙ্গভঙ্গ রোধের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত হয়েছিল।

“আমার সোনার বাংলা...” গানটি তখন থেকেই ব্যাপক প্রচলিত একটি দেশাত্ববোধক গান। বাংঙ্গালীর সকল মুক্তি সংগামে গানটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। ১৯৭১ এ আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিয়মিত প্রচার হতো। আমরা জানি, রবীন্দ্র গানে বিদেশী গানের সুর ও বাংলা বাউল গানের একটি প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। রবীন্দ্রনাথ যখন শিলাইদাহের কুঠিবাড়িতে জমিদারী দেখাশুনার উদ্দেশ্যে থাকতেন তখন তার সাথে স্থানীয় এক বাউল “গগন হরকরার” সাথে পরিচয় হয় এবং রবীন্দ্রনাথের নৌবিহারেও গগন হরকরা একজন সংগী ছিলেন।

গগন হরকরা পেশায় ডাকপিয়ন ছিলেন (তখনকার দিনে ডাকপিয়ন কে হরকরা বলা হতো) গগন হরকরার একটি গান- “আমি কোথায় পাবো তারে, আমার মোনের মানুষ যেরে। হারায়ে সেই মানুষে, তার উদ্দেশ্যে, দেশ বিদেশে বেড়াই ঘুরে। । ” এই গানটির হুবুহু সুরে “আমার সোনার বাংলা...” গানটি গাওয়া হয় । যেহেতু গগন হরকরার গানটি আগে রচিত ও সুররূপ করা সুতারং “আমার সোনার বাংলা....” গানের সুর যে রবীন্দ্রনাথ গগন হরকরার কাছ থেকে নিয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।

গগন হরকরার কাছ থেকে রবীন্দ্রনাথ কোনো মৌখিক কিংবা লিখিত অনুমুতি নিয়েছেন কিনা এমন কোনো প্রমাণ নেই। আর এতো বছর পর এটা প্রমাণ করাও অসম্ভব। কারণ সে প্রজন্মের কিংবা কোনো প্রকার প্রতক্ষদর্শী বর্তমান অবাধি বেঁচে থাকার কথা নয়। আমরা জানি মেধাস্বত্ব একশ বছরের পর থাকে না সেই সুবাদে রবীন্দ্রনাথের অনেক গান স্বত্বমুক্ত হয়ে গেছে। এখন বিকৃত সুরেও কেউ রবীন্দ্র সংগীত গাইলে তার জন্য কোনো প্রকার জবাদিহীতা আইনের আওতায় পরে না।

কিন্তু প্রশ্ন অন্যখানে, গানের জন্য সুর অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গগন হরকরা বাঙালী ও বাংলাদেশী ছিলেন। গগন হরকরার সুর যেহেতু রবীন্দ্রনাথ নিয়েছিলেন তাই গগন হরকরার নামটি বাংলার ইতিহাসে স্থান পাওয়া উচিৎ তার নামটা সবার জানা আমাদের দ্বায়ীত্ব বলে পরিগনিত হয়। গগন হরকরাকে কি কখনও কোনো মিডিয়া এই ভাবে তুলে ধরেছে? রবীন্দ্রনাথ অনেক বড় মাপের তাতে কারও কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই কিন্তু তাই বলে গগন হরকরা থেকে নেয়া সুরটি কি রবীন্দ্রনাথের নিজের করা বলে চালিয়ে দেয়া কি ঠিক ছিলো কিংবা ঠিক আছে? আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম তো গগন হরকরার নামটি খুঁজেই পাবে না কিন্তু “আমার সোনার বাংলা গানটির প্রথম দশ লাইন জাতীয় সংগীত হিসেবে ঠিকই থেকে যাবে। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুর সংক্রান্ত জটিলতা এখন স্পষ্ট করার সময় এসেছে।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রকৃত ডিজাইনার নিয়ে কিছু প্রশ্ন (???) বাংলাদেশের প্রিন্ট মিডিয়াকে কিছু উপদেশ ও সাবধান হতে বলছি। ফেসবুকে আমি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.