আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জ্যাঙ্গো আনচেইনড্ ও 'জাঙ্গিয়া' আনচেইনড্। এই পোস্টের জন্য ব্যান খাইলে 'জাঙ্গিয়া আন্দোলনের হুমকি দিয়া রাখলাম।

চাই চিন্তার পূনর্জাগরন ডিসক্লেইমার: প্রথম আকর্ষন (১৮+): The following writing deals with mature subject matter and is intended for adult readers. reader discretion is advised. দ্বিতীয় আকর্ষন (আপুরা পোষ্টে ঢোকার আগে দ্বিতীয়বার ভেবে নিন): The following post may contain coarse language intended for male readers. Reader discretion is advised. Django Unchained মুভিতে জিমি ফক্স এর একটা কঠিন ডায়লগ "Django. The D is silent." দিয়া শুরু করি। নাহ্ মুভি রিভিউ না, বরং এই সাইলেন্ট ডি কে আর একটু এদিক ওদিক করে কীভাবে আমাদের ইজ্জতের ত্যানা মতান্তরে 'জাঙ্গিয়া' তার স্বাধীনতা লাভ করেছিল তার একটি গল্প বলব। একটা সময় ছিল যখন আমরা চাইলেই যে কোন ডিকশনারীভুক্ত বাংলা শব্দ উচ্চারন করতে পারতাম না। জ্বী, সময়টা এখনও আছে। আমি কমপক্ষে ২০০ শব্দের লিস্টি দিতে পারব যা আপনি উচ্চারন করতে পারবেন না।

জাঙ্গিয়া-বক্ষবন্ধনী গোত্রের এরকম বহু শব্দ আছে বাংলাতে। ইউনিভার্সিটিতে তখন ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। প্রায়শই এই জাঙ্গিয়া শব্দটির ব্যবহার নিয়ে বিপদে পড়তে হত। অবশেসে সমাধান পেলাম: একদিন কী যেন একটা স্কেয়ারী মুভি দেখছিলাম ওটাতে এরকম একটা দৃশ্য ছিল- আমেরিকানদের চন্দ্রজয় লাইভ দেখানো হচ্ছে টিভিতে। সমস্ত বিশ্বের মানুষ দেখছে আমেরিকানদের গর্বের দিন।

এক বলদা এ্যাসট্রোনাট আমেরিকান পতাকা চাঁন্দের মাটিতে পুততে গিয়ে পতাকাটা পাহাড়ের খাদে ফেলে দিল। ওদিকে টিভি ক্যামেরা রেডি, এত টাকা খরচ করে পতাকাহীন চন্দ্রবিজয়ের কোন মানে হয়না। হঠাৎ আর এক বুদ্ধিমান নিডোখোর এ্যাসট্রোনাটের মাথায় আসল, তার পরনে ইউএস পতাকার ডিজাইনের একটা জাঙ্গিয়া আছে। এ্যাসট্রোনাটদের লিডারের মনে ধরল বুদ্ধিটা। উপায়-অন্ত না দেখে জাঙ্গিয়া খুলে লাঠির মাথায় বেধে চাঁন্দের মাটিতে পোতা হল।

পতাকা ওড়ানোর দৃশ্য দেখে আমেরিকার প্রেসিডেন্টসহ সকল আমেরিকানরা বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করল। নিডোখোর এস্ট্রোনাট জাঙ্গিয়ার দু্ঃখ ভুলে গিয়ে ত্যাগের মহিমায় নিজেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আমেরিকান বলে মনে করল। সেই থেকে আমেরিকানরা পেল চন্দ্রবিজয়ের সম্মান আর আমরা পেলাম জাঙ্গিয়ার একটি কোড নেম 'পতাকা'। আমরা সেই থেকে সবার সামনে বেশ অবলীলায় বলতে পারতাম 'আজ পতাকা পড়ার সময় পাইনি' বা 'নিউমার্কেটে থেকে মাত্র ৫০ টাকায় কেলভিনক্লেইনের পতাকা কিনলাম' ইত্যাদি ইত্যাদি। পতাকার হাত ধরে অবশেষে জাঙ্গিয়া শব্দটি মুক্তির স্বাদ পেল।

জ্যাঙ্গো আনচেইনড। মাঝে মাঝে বিব্রতকর পরিস্থিতিরও সম্মুখীন হতে হয়েছে। এক ছাত্র নেতার 'পতাকার মান রক্ষার' বক্তব্যে মুখ টিপে হাসতে গিয়ে বড়ভাইদের রোষানলে পড়েছি। আর একবার, বাম ছাত্রসংগঠনের চিকামারা দেখে হলে এসে বিপ্লব ভাইকে বলেছিলাম, -ভাই আপনার কি কোন লাল পতাকা আছে? -কেন? - না মানে, দেয়ালে বামের পোলাপাইন লিখছে 'বিপ্লবের লাল পতাকা আমরা ওড়াবই'। ভাবলাম আপনাকে সাবধান করি।

বামের পোলাপাইন পচাতে পেরে সবাই পৈশাচিক বিনোদন লাভ করলাম। আর এক বন্ধুর কথা: শুক্রবার সার্ফ এক্সেল দিয়ে কাপড় ধুয়ে তাকে বেশ চিন্তিত মনে হল। -দোস্ত, আমার তো পতাকা ৫ টা থাকার কথা। ৮টা কেমনে হইল? -দোস্ত, ওইগুলা আমার ফালাইয়া দেওয়া পতাকা। তুই যখন ধুইয়া আনছিস আর এক সপ্তাহ তাইলে আবার পড়ি।

আর এক বন্ধুর পিংক কালারের পতাকা দেখে ফ্রয়েডিয়ান মনোসমীক্ষন সহকারে তার সাবকনশাস মেয়েলীপনা ব্যাখ্যা করেছিলাম। আপুরা এ পর্যন্ত পড়ে ক্ষান্ত দিতে পারেন। কারন, এবার বক্ষবন্ধনী আনচেইনড। এবার ঘটনার শুরু টম এ্যন্ড জেরী দেখে। টমের ধাওয়া খেয়ে জেরী একবার প্রায় ১০/১২ তলা একটা বিল্ডিং থেকে পড়ে যেতে থাকে।

সামনে সমূহ বিপদ। হঠাৎ আর একটা বাড়ীর ছাদে শুকাতে দেয়া কোন এক মনুষ্যরমনীর বক্ষবন্ধনীর নাগাল পায় জেরী। ব্যাস, একেবারে জেমস বন্ডের মত ওটাকে প্যারাসুট বানিয়ে নিরাপদে ল্যান্ডিং করে জেরী। সেই থেকে আমরা ওটাকে বলতাম 'প্যারাসুট'। এই প্যারাসুট নিয়ে বিপদের কথা আজ আর বলবনা।

শুধু এটুকু বলি, আমরা প্রায়শই হঠাৎ হঠাৎ 'গোলাপী প্যারাসুট' বা 'কালো প্যারাসুট' বলে অনেক বান্ধবীকেই চমকে দিতাম। ম্যাচিং ড্রেস দেখে আন্দাজে ঢিলা মারতাম প্রায়ই। অনেক মারও খেয়েছি এজন্য। নিলুফার নামে এক বান্ধবীকে ওর ভালোর কথা ভেবে 'তোর প্যারাসুট দেখা যাচ্ছে' বলে এক বন্ধু ব্যাপক বিপদে পড়েছিল। ( আল্লার কসম, আমার কোন বান্ধবী সংসদ সদস্য নয়।

তাছাড়া আমার বয়সও অত বেশী না)। সর্বোপরি এই লেখা যাবতীয় ক্যাচালমুক্ত। উৎসর্গ: ব্লগার গুরুমিয়া এবং এই প্লানেটের সমগ্র পতাকা-প্যারাসুটপ্রেমী মনুষ্যকুল। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।