আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনুসংহিতা থেকে কিছু না বললেই নয় ?

একটি মানব সমাজ গড়ব যেখানে সাম্প্রদায়িকতা , গোঁড়ামি , মৌলবাদী , কুসংস্কার এগুলো থাকবে না । বর্ণ প্রথা কি সেটা নিয়ে আলোচনা করার দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না । হিন্দু সমাজে এটা একটি অসাধারণ কুসংস্কার । এবং আধুনিক সমাজেও এই কুপ্রথা চালু আছে । যেমন এখনও কোন বাবা মা ই চায় না তার সন্তান অন্য কোন নিম্ন বর্ণের মেয়েকে বিয়ে করুক ।

সুধু বিয়ে ই নয় সব ক্ষেত্রেই বর্ণ প্রথা তার কু প্রভাব ফেলে আসছে যুগ যুগ ধরে । কিন্তু এই প্রথা কিভাবে এবং কোথা থেকে আসলো ? মনুসংহিতা একটি অন্যতম মানবতা বিরোধী ধর্মগ্রন্থ যা আমাদের এই আধুনিক সমাজে ও প্রচলিত । আপনারা হয় তো ভাবছেন ধর্ম গ্রন্থ আবার মানবতা বিরোধী হয় কিভাবে ? কিন্তু একটু মুক্ত মনে চিন্তা করে দেখুন আসলেই মানবতা বিরোধী কি না । সর্বসাস্য তু সর্গস্য গুপ্তর্থং স মহাদ্যুতিঃ । মুখবাহুরু পজ্জানাং পৃথক কর্মান্যকল্পয়ত ।

। (মনুঃ ১/৮৭) অনুবাদঃ এই সকল সৃষ্টির অর্থাৎ ত্রিভুবনের রক্ষার জন্য মহা তেজ যুক্ত প্রজাপতি ব্রহ্মা নিজের মুখ , বাহু , উরু , এবং পাদ - এই ৪ টি অঙ্গ থেকে ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় , বৈশ্য এবং শূদ্র এদের পৃথক পৃথক কার্যের ব্যাবস্থা করে দিলেন । (এখানে থেকে বোঝা যাচ্ছে ব্রহ্মার মুখ থেকে ব্রাহ্মণ আর পাদ থেকে শূদ্র তৈরি হয়েছে অর্থাৎ শূদ্রকে সব থেকে নিচু করে রাখা হয়েছে ) অধ্যাপনমধ্যনং যজনং যাজনং তথা । দাদং প্রতি গ্রহইঞ্চব ব্রাম্মনাম কল্পয়ত । ।

(মনুঃ১/৮৮) অনুবাদঃ অধ্যাপন , স্বয়ং অধায়ন, যজন, যাজন , দান ও প্রতিগ্রহ (উপহার সামগ্রি গ্রহণ)-- এই ৬ টি কাজ ব্রহ্মা ব্রাহ্মণ দের জন্য নিরুপিত করে দিলেন । (সংস্কৃত লিখতে কী বোর্ড ভেঙ্গে যাওয়ার মত অবস্থা তাই সংস্কৃত টা মনুসংহিতা তে দেখার আমন্তত্রন জানাই ) এর পরের শ্লোক দেখুনঃ প্রজা রক্ষন , দান , যজ্ঞ , অধ্যয়ন , জগান - বাজনা এই কয়েকটি কাজে ব্রহ্মা ক্ষত্রিয় দের জন্য নিরুপিত করলেন (মনুঃ১/৮৯) পশুদের রক্ষা , দান , যজ্ঞ , অধ্যয়ন , বাণিজ্য , মুনাফা অর্জন , এবং কৃষিকাজ -- ব্রহ্মা কতৃক বৈশ্যদের জন্য নিরূপিত হল । (মনুঃ১/৯০) ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় , বৈশ্য , এই তিন বর্ণের লোকেরা দ্বি-জাতি , এরা নিজ নিজ কর্তব্যে নিয়জিত থেকে বেদ অধ্যয়ন করবেন । কিন্তু একমাত্র ব্রাহ্মণ ই বেদ অধ্যাপনা করবেন । বাকিদের অধ্যাপনা করা উচিত নয় ।

(মনুঃ১০/১) প্রভু ব্রহ্মা শূদ্রদের জন্য একটি কাজই সুনির্দিস্ট করে দিয়েছেন । --আর তা হল কোন নিন্দা না করে (দ্বিধা না করে ) এই তিন বর্ণের লোকদের শুশ্রূষা করা । (মনুঃ ১/৯১) আজ এপর্যন্তই শেষ করলাম । শুধু আপনাদের কাছে একটা প্রশ্ন । আপনি চিন্তা করে দেখুন আপনি যদি শূদ্র হতেন তাহলে শাস্ত্রের এই বানী আপনার কাছে কেমন লাগত ? উত্তর আশা করি কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন ।

সবাই ভালো থাকবেন । শুভকামনা । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.