আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওয়েবে কাজ করেন কিন্তু পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট নাই সে কি কথা ! ! !

আমার সম্পর্কে কি লিখব ঠিক বুঝতে পারছিনা। যেদিন বুঝব, সেদিন লিখব। পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট এর কথা অনেকেই জানেন। তবুও আজ আমি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট নিয়ে লিখব। কারণ আমাদের অনেকেই বুঝতে পারিনা কিভাবে একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট সাজানো উচিত এবং এর উপকারিতা গুলো কি কি।

আমার এ লেখা থেকে আপনারা সহজেই বুঝতে পারবেন কেন একটি পোটফোলিও ওয়েবসাইট দরকার এবং কিভাবে এটিকে সাজানো উচিত। আশা করি আমার এ লেখার মাধ্যমে নতুন ও পুরাতন সকলেই উপকৃত হবেন। বেশ কয়েকটি বিশেষ কারণে আমাদের সকলের একটি ব্যক্তিগত পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট থাকা খুবই প্রয়োজন। আমরা যারা নতুন নতুন কাজ শিখছি ও করছি তারা সকলেই একটি বিষয় নিয়ে খুব চিন্তিত। তা হচ্ছে ইন্টারনেটের এই বিশাল দুনিয়াতে অনেক বেশি এক্সপার্ট হয়েও ভাল কাজ পাচ্ছেন না, আবার অনেকে আজ পর্যন্ত কোন কাজই পাননি।

এর মূল কারণ হচ্ছে আপনাকে কেউ চেনে না। মজার কথা হচ্ছে, আমার কিছু বন্ধু ভাল কাজ পারে কিন্তু আমি জানতাম না। কম্পিউটারের টুকিটাকি কাজ জানার ফলে অনেকেই আমার কাছে প্রোগ্রামার, ওয়েব ডেভলপারের ঠিকানা চায়। কিন্তু আমি তখন জানতাম না আমার বন্ধুরা এ কাজ পারে। তাই আমি তাদের কোন উপকার করতে পারিনি।

তখন আমার মাথায় আসলো পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট কথা। আমার বন্ধুদেরকে জানানোর পাশাপাশি আমার প্রিয় বন্ধু, আপনাদেরকেও বিষয়টা জানানোর প্রয়োজন অনুভব করলাম। এ জাতিয় সমস্যার খুব সহজ সমাধান হচ্ছে একটি সুন্দর পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট। আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হন তাহলে আপনার করা কাজ গুলো সবাইকে দেখার সুযোগ দিন এবং আপনার সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ দিন। আপনি যদি লেখক, ফটোগ্রাফার, শিল্পী ইত্যাদি হন তাহলে আপনার নিজস্ব ব্লগ তৈরি করে সেখানে আপনার শিল্পকর্ম গুলো উপস্থাপন করতে পারেন।

একটি ব্যক্তিগত পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট এর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে একজন ব্যক্তিকে তার কর্মগুণ সহ সুন্দর ভাবে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করা। কারণ পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটটি একসাথে সারা বিশ্বের মানুষ দেখবে। এখানে আপনিই একটি ব্র্যান্ড। যদি আপনি ওয়েব ডিজাইনার / লেখক / ফটোগ্রাফার ইত্যাদি হন তাহলে অবশ্যই আপনার একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট থাকা উচিৎ। আপনার পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটটি সাজাতে নিচের পদক্ষেপ গুলো অনুসরণ করতে পারেন- ১. আপনি একটি সুন্দর লোগো ব্যবহার করতে পারেন।

কারণ আপনার ওয়েবসাইট-টিতে ঢুকার পর একজন ভিজিটরের প্রথমেই চোখে পরবে আপনার লোগো। একটি সুন্দর লোগো সব সময় চোখের সামনে ভাসতে থাকে। সে যদি কোন দিন আপনার করা প্রজেক্ট আপনার ছোট সুন্দর লোগোটি দেখে তখন আপনার কথা তার মনে পরে যাবে এবং ভবিষ্যতে সে যদি কোনদিন এ জাতিয় কাজ করা ইচ্ছা প্রকাশ করে তখন প্রথমেই তার আপনার কথা মনে পরে যাবে। ২. পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট এর জন্য একটি সুন্দর নাম নির্বাচন করুন। একটি সহজ ও সুন্দর নাম সবাই মনে রাখার চেষ্টা করে।

তাই পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটটি নিজের নামে না করে একটি সুন্দর নাম দিয়ে করুন। এতে করে ভবিষ্যতে আপনার কর্ম পরিসরকে প্রতিষ্ঠানের রুপান্তর করতে চাইলে সহজেই করতে পারবেন। ৩. একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট ভিজিট করার সাথে সাথে ভিজিটর যদি সাইটটির মালিক সর্ম্পকে জানতে পারে তাহলে তার মধ্যে আপনার প্রতি একটা আগ্রহ তৈরি হবে যা আপনার জন্য পজেটিভ। এক্ষেত্রে আপনি “ট্যাগ লাইন” ব্যবহার করতে পারেন। এখানে থাকবে আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচয় এবং আপনি কি ধরনের কাজ করেন তার সারর্মম।

অর্থাৎ, আপনি কে? আপনি কি করেন? আপনি কি একজন ফ্রিল্যান্সার নাকি কোন কোম্পানিতে আছে? ইত্যাদি এ জাতিয় প্রশ্ন গুলোর উত্তর গুলো যেন ট্যাগ লাইনে থাকে। ৪. যেহেতু আপনি একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সেহেতু আপনাকে সাইটটি এমন ভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন তা ভিজিটরদের কাছে আকর্ষণীয় হয় এবং এটাই আপনার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ। যারা আপনার সাইটটি ভিজিট করবে তারা অবশ্যই আপনার অতীত কাজ গুলোর নমুনা ও বিশেষ বৈশিষ্ট্য সমূহ দেখতে আগ্রহী। তাই আপনি আপনার করা প্রজেক্ট গুলোর ভাল কিছু ছবি, যদি সম্ভব হয় ডেমো দেখার ব্যবস্থা রাখতে পারেন। সাথে প্রতিটি প্রজেক্টের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে দিন।

আরো ভাল হয় এর সাথে আপনার কাস্টমারের মতামত ও যোগ করতে পারেন। অর্থাৎ বর্তমানে যারা আপনার থেকে সেবা নিচ্ছে তারা আপনার কাজে সন্তুষ্ট এ জাতিয় মতামত। ৫. আপনার “ট্যাগ লাইন পড়ে হয়তো সবাই আপনার কাজ সর্ম্পকে স্বচ্ছ ধারনা নাও পেতে পারে। আবার অনেকেই প্রথমে আপনি কি কাজে অভিজ্ঞ তা এক নজরে জানতে চান। তাই এক্ষেত্রে বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে Services / What we do নামে একটি অপশন রাখা যাতে করে একটি ভিজিটর এক নজরে আপনার কর্ম পরিসর সম্পর্কে জানতে পারেন।

৬. এতোক্ষণ ধরে যা আলোচনা করলাম এবং আরো যা কিছু আলোচনা করবো তার সব কিছুর মূল কেন্দ্র বিন্দু হচ্ছেন আপনি। আপনাকে উপস্থাপনা করার জন্যই এতো সব প্রচেষ্টা। কে সেই ব্যক্তি যে এতো গুণের অধিকারী, তার বিষয়ে বিস্তারিত জানার সবারই বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আপনার উচিত তাদের আগ্রহকে সম্মান জানানো। এ ক্ষেত্রে আপনি আপনার অতীত সম্পর্কে হালকা ধারণা যেমন ছেলেবেলা কোথায় কেটেছে,কি স্বপ্ন ছিল, এতোটা পথ কিভাবে হেটে আসলেন, কোথায় থাকেন, এই পেশায় কতদিন ধরে আছেন ইত্যাদি।

আপনার সম্পর্কে তারা যতো বেশি জানবে ততো বেশি আপনাকে আপন করে নিবে। আপনি নিজের দিকটা বিবেচনা করে দেখুন, আপনিও কোন কাজের ক্ষেত্রে তাকেই বেছে নেন যার সম্পর্কে আপনি অনেক বেশি জানেন। সুতরাং যতোটা সম্ভব বিস্তারিত লিখুন। এতে সহজেই মানুষের বিশ্বস্ততা অর্জন করা যায়। আপনার যদি কোন রকম স্বীকৃতিমূলক সার্টিফিকেট থেকে থাকে তাও শেয়ার করতে পারেন।

এতে আপানার প্রতি সবার সম্মান বাড়বে। ৭.আপনার সম্পর্কে এতো কিছু জানার পর যে কেউই আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চাওয়াটাই স্বাভাবিক। আপনার ফোন নং, ই-মেইল ইত্যাদি এমন স্থানে দিন যেন তা সহজে দৃষ্টি গোচর হয়। এ ছাড়া একটি কন্টেক্ট ফরম এর ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে দেশ-বিদেশের যে কোন ব্যক্তি সহজেই আপনাকে ম্যাসেজ পাঠাতে পারবে।

আপনি অবশ্যই প্রতিদিন আপনার ই-মেইল চেক করবেন এবং প্রতিটি ই-মেইল এর ই রিপ্লাই দিবেন। এতে সবার সাথে আপনার একটা সুসম্পর্ক তৈরি হবে এবং আপনি আপনার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবেন। ৮.আপনি যদি আপানার সাইটের মধ্যে একটি ব্লগের ব্যবস্থা রাখেন তাহলে খুব ভাল হয়। ব্লগটি অবশ্যই আপনি যে সকল কাজ করেন বা পারেন সে সব নিয়ে হতে হবে। কেউ যদি আপনার ব্লগের নিয়মিত আপডেট পেতে চায় তাহলে সে যেন আপনার ব্লগে সাবস্ক্রাইব করতে পারে সে ব্যবস্থা রাখবেন।

আপানার পোস্টে যেন সবাই কমেন্ট করতে পারে এবং সেটা জরুরী। এতে আপনি সবার চাহিদা জানতে পারবেন। কমেন্ট করার জন্য রেজিষ্ট্রেশন আপশন, স্পাম প্রতিরোধক ক্যাপচা ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না। এতে ভিজিটররা বিরক্ত হয়। ৯. বর্তমানে সবচেয়ে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে সোসালনেটওয়ার্কীং সাইট।

তাই আপনার সাইটে যে সকল সোসালনেটওয়ার্কীং সাইট গুলোতে আপনার একাউন্ট আছে সেগুলোর প্রফাইল লিংক গুলো দিন। এতে তারা সহজে আপনার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে। এটিও আপনার জন্য পজেটিভ। ১০. আপনি যেহেতু একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সেহেতু অবশ্যই আপনার ডোমেইন ও হোস্টিং প্রয়োজন। আমার মতে ডোমেইনের ক্ষেত্রে আপনার কাজের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ একটি নাম বাছাই করে .com ডোমেইন নিন।

কারণ, যদি ভবিষ্যতে যদি বৃহৎ পরিসরে কাজ করার সুযোগ হয় তাহলে আপনা এই ডোমেইন টি একটি ব্যান্ড হিসেবে কাজ করবে। আর হোস্টিং এর ব্যপারে বলব প্রাথমিক ভাবে 100MB যথেষ্ট বলে আমি মনে করি। অযথা টাকা নষ্ট করার কোন প্রয়োজন নেই। আশা করি ১০০০ টাকার মধ্যেই আপনি প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু করতে পারবেন। তবে একটা কথা না বলেলই নয়, সেটা হচ্ছে নতুনদের অনেকেই ডোমেইন এবং হোস্টিং এর ব্যাপারে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু আপনারা এ ব্যাপারে যারা অভিজ্ঞ তাদের সাথে আলোচনা করে কিনতে পারেন। কোথায় থেকে ডোমেইন হস্টিং নিবেনঃ http://namecheap.com http://hostgator.com http://name.com আর যাদের অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম নাই বা যদি বাংলাদেশি প্রোভাইডার থেকে নিতে চান তারাঃ http://www.eicra.com http://arfitech.com/ http://www.kmmh.net আর আমার সাথে যোগাযোগ করলেও হেল্প করতে পারব অনেক ধর্য্য ধরে, অনেক কষ্ট করে এতো বড় পোস্ট করলাম। যদি কারো উপকারে আসে জানাবেন। শুনে ভাল লাগবে। কারো যদি আরো কিছু জানার থাকে আমাকে ফেইস বুকে পাবেন http://www.facebook.com/orthohinjibon016 এই ঠিকানায়।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.