*****
মধুসূদন ইংরেজী ছেড়ে তার আপন ভাষা বাংলায় ফিরে এসে সবার কাছে ব্যপকভাবে সমাদৃত হয়েছেন। এই ফিরে আসার প্রশংসাকারীদের মধ্যে হয়তো আমিও একজন; কিন্তু এটাও মনে করিয়ে দেই ভদ্রলোক ইংরেজীতে সাহিত্যচর্চা করতে গিয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত ইংরেজ সমাজে অপদস্থ না হয়েছিলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তার এই বোধ কিন্তু জাগেনি। তার মতো ভাগ্যবান কেউ কেউ এমনভাবে সুবিশাল বাঁশ খাওয়ার বদৌলতে হলেও হুঁশ ফিরে পায়। কিন্তু যাদের এই বাঁশটা খাওয়ার সৌভাগ্য হয়না বা যতক্ষণ পর্যন্ত তার বিস্বাদ আস্বাদিত করার সুযোগ না হয় তারাতো সেই ঘোরে চলতেই থাকে।
একটি ভিন্ন দেশে গিয়ে বসবাস বলি আর ভ্রমণ বলি; তার কিছু প্রভাব নিজের উপরে না আসাই হয়তো অস্বাভাবিক।
কিন্তু তার মানে নিশ্চয়ই এই নয় যে নিজের অস্তিত্ব বিকিয়ে দিতে হবে।
নিজের মুল্যবোধ (সংশ্লিষ্ট আচরণ, পোষাক এমনকি খাবার ইত্যাদি এগুলো সব বা যে কোনটির মাধ্যমে) বিকিয়ে দিয়ে হয়তো এরা প্রমাণ করতে চায় তারা বিদেশে আছে ! হায়রে অভাগা! - আমি অবশ্যই চরমপন্থার কথা বলছিনা - কিন্তু যেখানে কোন ধরণের যৌক্তিক কারণ বা চাপই থাকেনা সেখানে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এরা নিজেদেরকে তাদের একজন বলে উপস্থাপন করতে চায়। যার মুল্যবোধই বিকৃত তাকে কিছু বলাও হয়তো বৃথা, কিন্তু যারা নিজেদেরকে ঐ শ্রেণীভুক্ত বলে মনে করেনা- তারা নিজের মুল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক কোন একটি বিষয়ে (উপরের যে কোনটিই হতে পারে) কিভাবে অন্ধানুকরণ করতে পারে!
"যেইসব বংগে জন্মি হিংসে বংগবাণী, সেইসব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি"
কবিপ্রবর, শুধু বংগবাণী নহে তোমার থিম এখন তাহাদের জীবনের পরতে পরতে। বেচারা মধুসূদন যদি জানতেন যে তার মতো কোয়েলের (ময়ুর বললামনা) পালক পরা কাকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয় তাহলে হয়তো ফিরে আসার তাগাদাটা অনুভব করার আগে এদের মতো নির্বোধ হওয়ার কথাটা হয়তো ভেবে বসতেও পারতেন।
অ.ট. কাকের ময়ুরের পালক পরার গল্প আমরা সবাই জানি।
কিন্তু এই গল্পে হয়তো ময়ুরের পক্ষে একটু পক্ষপাতিত্বই করা হয়। বাস্তব হলো কাকের ময়ুরের পালক পরা উচিত কিনা তারও আগে যেটা বলা দরকার ছিল যে- কাকের আদৌ ময়ুর হওয়ার কোন প্রয়োজন আছে কিনা? আমাদের সৌখিন চোখে ময়ুরের কদর কাকের চেয়ে যতই বেশী হোক প্রকৃতির কাছে তাদের প্রয়োজন কোন অংশেই কারো চেয়ে কম নয়। ময়ুর, কোকিল, কাক, চিল, ফড়িং, প্রজাপতি - যাই বলি সবাই নিজ নিজ অবস্থানে নিজের পরিচয়ে অধিষ্ঠিত - দৃষ্টিভংগি বদলাতে পারলে নিজের স্বকীয়তা বিসর্জনের কোন প্রয়োজনই হয়তো থাকবেনা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।