আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গর্ভপাতঃ এক অনাকাঙ্ক্ষিত জীবনের কথা

নিজেকে জানার চেষ্টা চলছে । কখনো জানতে পারলে বলবো । একটি শিশুর গল্প বলি। পৃথিবীতে আসার আগে সে এসেছিল একটি সর্বাধিক নিরাপদ স্থানে, তার মায়ের গর্ভে। মা বাবার অধীর আগ্রহ আর অসম্ভব ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সে কাটিয়েছিল তার পরম প্রশান্তির কয়েকটি মাস।

বাবা মা’র হাতের পরশ, তাঁদের খুনসুটি সে উপভোগ করত এক মমতাময় উষ্ণ দেয়ালের ভেতর থেকে। আর অনুভব করত কত ভালবাসাময় একটি স্থানে তার আগমন হতে যাচ্ছে। এই পৃথিবীর পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রাথমিক শিক্ষাটা তার সেখানেই। অবশেষে এসেছিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যখন তার বাবা অস্থির হয়ে প্রার্থনা করছিলেন তার প্রিয়তমা স্ত্রীর সার্বিক কল্যাণের জন্য। আর শিশুটির জন্য তাঁর শুধু প্রার্থনাই ছিল না, ছিল এক বিস্ময়মাখা আগ্রহ, কিছুটা আনন্দ।

আর মা? জ্ঞান আর যন্ত্রণার মোহনায় থেকেও তাঁর আকাঙ্ক্ষা ছিল শুধু তাঁর অনাগত সন্তানের সুস্থ ও ঝলমলে মুখটা একবার দেখার। এলো সে চারদিক মায়াবী আলোয় উদ্ভাসিত করে, কান্নার সুমধুর রূপটা আরও একবার প্রকাশিত করে। এই পৃথিবীর পরিবেশে তার আগমন যেন তার বাবা মা’র পৃথিবীটাই রাঙিয়ে দিলো। তার কোমল ত্বকে দুটি মনের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ কিন্তু তাকে একটুও বিব্রত করেনি। একটি সুন্দর সূচনার সমাপ্তি এখানেই।

আমরা আশা করব সেই শিশুটি একদিন বড় হয়ে হয়তো অনেক বড় ডাক্তার হবে অথবা ইঞ্জিনিয়ার হবে অথবা হবে অনেক বড় বিজ্ঞানী। এটা অসম্ভব কোনও কল্পনা নয়, এমনই তো হয়ে থাকে। এবার বলি আরেকটি শিশুর কথা, তার কাহিনী এত মধুর না। মায়ের গর্ভে থাকতেই সে প্রতিনিয়ত শুনেছে তার অপ্রয়োজনীয়তা। সে কোনদিন তার উপর বাবা মা’র মধুর পরশ পায়নি।

সে অকালপক্কের মত বুঝে গিয়েছিল এই পৃথিবীর কিছু নোংরামির সারমর্ম। সে এসব শুনতে চায়নি, কিন্তু কথাগুলো এত কঠিন ছিল যে তার নমনীয় ক্ষুদ্র দুটি হাত দিয়ে সে কান ঢেকে রাখতে পারেনি। বড় অভিমান হলেও সে তার মায়ের গর্ভে মুখ লুকাতে পারেনি। হয়তো সেই গর্ভ তার জন্য নোংরা নর্দমার মত বিষাক্ত হয়ে গিয়েছিল। সে বুঝে গিয়েছিল এই ভালবাসাময় পৃথিবীতে সে অপাংক্তেয়, তার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।

তার বাবা মা’র জীবনে সে একটা লাঞ্ছনাময় বোঝা। এই পৃথিবীতে তার আগমনের বিষয়টা এত মধুময় হবেনা। ঠিকানাহীন চিঠির মত তার গন্তব্য আবার সেই প্রাক্তন পোস্টঅফিস। অবশেষে এলো সেই নিষ্ঠুর ক্ষণ, মধুময় উপহার ফিরিয়ে দেবার পালা। শিশুটি তখন চিৎকার করে বলছিল, ”মা, বাবা আমি তোমাদের অনেক ভালোবাসি, আমার এই কিছুদিনের জীবনে তোমরাই সবকিছু।

আমি তো আর পৃথিবীর আনন্দময় কিছু দেখতে পারলাম না, কিছুদিন তোমাদের মাঝে থাকতে পেরেছি, আমার কাছে এর থেকে আনন্দের আর কিছু নেই। তোমরা অনেক ভালো থেকো। যদি আবার কখনো পৃথিবীতে আসি, তাহলে তোমাদের কোলেই আসবো। আমি জানি তোমাদের পৃথিবী, তোমাদের সমাজ আমাকে ঘৃণা করবে কিন্তু তোমরা অন্তত আমাকে ঘৃণা করোনা। আর আমার ভাই বোন যদি আসতে চায়, তাহলে আসতে দিও, আমি তাদের চোখ দিয়ে এই স্বপ্নের পৃথিবীটা অন্তত একবার হলেও দেখতে চাই।

তোমাদের অনেক ভালোবাসি, অনেক, অনেক………” এই ছিল তার শেষ কথা, যদিও তার অপক্ক স্বরনালী এই কথাগুলোকে বাস্তব রূপ দিতে পারেনি। [যে সব শিশুরা ভালোবাসায় পরিপূর্ণ এই স্বপ্নের পৃথিবীতে আসতে চেয়েও বাবা মা'র ভুল সংশোধনের কারণে আসতে পারেনি......তাদের জন্য] Say NO to Abortion…  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।