আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জরুরী দো‘আ সমূহ #৩

বিভিন্ন সময়ের দো‘আ সমূহ ১. শুভ কাজের শুরুতে : (ক) খানাপিনা সহ সকল শুভ কাজের শুরুতে বলবে- ‘বিসমিল্লা-হ’ (আল্লাহর নামে শুরু করছি)। [মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৪১৫৯, ৬১; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪২০২। উল্লেখ্য যে, ঔষধ সেবনের সময় ‘আল্লাহ শাফী, আল্লাহ কাফী’ বলা ভিত্তিহীন। ডাক্তার খানায় বা মেডিকেলে এগুলো লেখা দেখা যায়। যা বর্জনীয়।

] (খ) শেষে বলবে- ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ (যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য)। [বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪১৯৯, ৪২০০, ‘খাদ্য সমূহ’ অধ্যায়-২১, পরিচ্ছেদ-১। ] (গ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা বিসমিল্লাহ বল, যখন তোমরা দরজা-জানালা বন্ধ কর অথবা কোন খাদ্য ও পানীয়ের পাত্রে ঢাকনা দাও। যদি ঢাকনা দেওয়ার কিছু না পাও, তাহ’লে পাত্রের উপর কোন কাঠি বা কাষ্ঠখন্ড রেখে দাও। যার ফলে তা অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ থাকবে।

[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪২৯৪-৯৬, ‘খাদ্য সমূহ’ অধ্যায়-২১, অনুচ্ছেদ-৫। ] উল্লেখ্য যে, কোন অন্যায় কাজের শুরুতে ও শেষে ‘বিসমিল্লাহ’ ও ‘আলহামদু লিল্লা-হ’ বলা যাবে না বা আল্লাহর সাহায্য চাওয়া যাবে না। কেননা এগুলি শয়তানের কাজ। আর আল্লাহর অনুগ্রহ কেবল ন্যায় ও সৎ কাজের সাথে থাকে। ২. (ক) মঙ্গলজনক কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে, ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ (খ) পসন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে, ‘আলহামদুলিল্লা-হিল্লাযী বিনি‘মাতিহি তাতিম্মুছ ছা-লিহা-ত’ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যার অনুগ্রহে সকল শুভ কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে)।

(গ) অপসন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে, ‘আলহামদুলিল্লা-হি ‘আলা কুল্লে হা-ল’ (সর্বাবস্থায় আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা)। [ইবনু মাজাহ হা/৩৮০৩, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়-৩৩, অনুচ্ছেদ-৫৫; হাকেম, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬৫। ] (ঘ) বিস্ময়কর কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে, ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ (মহাপবিত্র তুমি হে আল্লাহ!)। অথবা বলবে, ‘আল্লা-হু আকবার’ (আল্লাহ সবার চেয়ে বড়)। [বুখারী হা/৬২১৮-১৯, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়-৭৮, ১২১ অনুচ্ছেদ; ঐ, হা/৪৭৪১, ‘তাফসীর’ অধ্যায় সূরা হজ্জ (২২), অনুচ্ছেদ-১।

] (ঙ) ভয়ের কারণ ঘটলে বলবে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ (আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই)। [বুখারী হা/৩৫৯৮, ‘মর্যাদা সমূহ’ অধ্যায়-৬১, ‘নবুঅতের আলামত সমূহ’ অনুচ্ছেদ-২৫। ] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন যে, ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়ালহামদুলিল্লা-হ’ এ দু’টি বাক্য আসমান ও যমীনের মধ্যের ফাঁকা স্থানকে ছওয়াবে পূর্ণ করে দেয়। ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ মীযানের পাল্লাকে ছওয়াবে পরিপূর্ণ করে দেয়। [মুসলিম, মিশকাত হা/২৮১, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়-৩, পরিচ্ছেদ-১।

] ৩. দুঃখজনক কিছু দেখলে, ঘটলে বা শুনলে (ক) ‘ইন্না লিল্লা-হে ওয়া ইন্না ইলাইহে রা-জে’উন’ (আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী)। (খ) অতঃপর নিজের ব্যাপারে হ’লে বলবে, ‘আল্লা-হুম্মা আজিরনী ফী মুছীবাতী ওয়া আখলিফলী খায়রাম মিনহা’ (হে আল্লাহ! এই বিপদে তুমি আমাকে আশ্রয় দাও এবং আমাকে এর উত্তম বিনিময় দান কর)। [মুসলিম, মিশকাত হা/১৬১৮, ‘জানায়েয’ অধ্যায়-৫, অনুচ্ছেদ-৩। ] ৪. হাঁচি বিষয়ে : (ক) হাঁচি দিলে বলবে, ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ (আল্লাহর জন্য যাবতীয় প্রশংসা =বুখারী)। অথবা বলবে, ‘আলহামদুলিল্লা-হি রবিবল ‘আ-লামীন’ (বিশ্বচরাচরের পালনকর্তা আল্লাহর জন্য যাবতীয় প্রশংসা)।

[তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৭৪১, ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়-২৫, ‘হাঁচি ও হাই তোলা’ অনুচ্ছেদ-৬। ] অথবা বলবে, ‘আলহামদুলিল্লা-হি ‘আলা কুল্লে হা-ল’ (সর্বাবস্থায় আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা)। [তিরমিযী, দারেমী, হাকেম, মিশকাত হা/৪৭৩৯, ৪৭৪৪, অধ্যায়-২৫, অনুচ্ছেদ-৬। ] (খ) হাঁচির জবাবে বলবে, ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ (আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন)। (গ) হাঁচির জবাব শুনে বলবে, ‘ইয়াহদীকুমুল্লা-হু ওয়া ইউছলিহু বা-লাকুম’ (আল্লাহ আপনাকে (বা আপনাদেরকে) হেদায়াত করুন এবং আপনার (বা আপনাদের) সংশোধন করুন)।

[বুখারী, মিশকাত হা/৪৭৩৩, অধ্যায়-২৫, অনুচ্ছেদ-৬। ] অথবা বলবে, ‘ইয়াগফিরুল্লা-হু লী ওয়া লাকুম’ (আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে (বা আপনাদেরকে) ক্ষমা করুন)। [তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৭৪১। ] (ঘ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যদি কেউ হাঁচির পরে ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ না বলে, তাহ’লে তুমি তাকে ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলো না। [মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৩৫।

] (ঙ) যদি কোন অমুসলিম হাঁচি দেয়, তখন কোন মুসলিম তাকে ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলবে না। কেবল তাকে ‘ ইয়াহদীকুমুল্লা-হু ওয়া ইউছলিহু বা-লাকুম’ বলবে। [তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৭৪০। ] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ হাঁচি পসন্দ করেন এবং হাই তোলা অপসন্দ করেন। অতএব তোমাদের কেউ যখন হাঁচি দেয় এবং ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ বলে, তখন যে মুসলিম তা শুনে, তার উপরে কর্তব্য হয়ে যায় ঐ ব্যক্তির উদ্দেশ্যে ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলে দো‘আ করা।

তিনি বলেন, হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। অতএব যখন তোমাদের কেউ হাই তোলে, তখন সে যেন সাধ্যপক্ষে তা চাপা দেয়। কেননা তোমাদের কেউ হাই তুললে ও ‘হা’ করে মুখ খুলে শব্দ করলে শয়তান হাসে। [বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৩২, অধ্যায়-২৫, অনুচ্ছেদ-৬। ] তিনি একথাও বলেছেন যে, তোমাদের যখন হাই আসে, তখন মুখে হাত দিয়ে তা চেপে রাখবে।

নইলে শয়তান সেখানে ঢুকে পড়বে। [মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৩৭। উল্লেখ্য যে, এ সময় ‘লা হাওলা অলা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’ বলার কোন প্রমাণ নেই। ] (ছ) ছালাতের মধ্যে হাঁচি আসলে ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ বলা যাবে। কিন্তু তার জওয়াবে মুখে ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলা যাবে না।

[তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৯৯২; মুসলিম, মিশকাত হা/৯৭৮। ] চলবে ......। জরুরী দো‘আ সমূহ #১ জরুরী দো‘আ সমূহ #২ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.