আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উল্কি... কৈশোরে মন হারানোর একটি ট্যাট্টু গল্প ।

আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে । উল্কি... কৈশোরে মন হারানোর একটি ট্যাট্টু গল্প - -- --- ষোলো বছরের এক দুরন্ত বালক । হঠাৎ করে বদলে যায় তার চেনাশোনা পৃথিবী । এলোমেলো হয়ে যায় কৈশোরের দুরন্তপনায় যাপিত জীবন । বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা খেলাধুলায় মন বসেনা ।

নিজের ঘরে খিল এটে বসে থাকতেই ভাল লাগে বেশি । বড় আপার বুক শেল্ফে কয়েকটা বই খুজে পেয়েছে, প্রেমের উপন্যাস । আগে তার সাইন্স ফিকশন বা অ্যাডভেন্চার ছাড়া অন্য কোন বই পড়তে ভাল লাগত না, এখন প্রেমের উপন্যাস গুলি উল্টে পাল্টে পড়ছে । লুকিয়ে লুকিয়ে শেভ করে আর ঘুরে ফিরে বারবার আয়নায় দেখে কতটুকু গজালো দাড়ি-গোঁফ । পড়ার টেবিলে বসে অংকের খাতায় নানান আঁকিবুকি ।

লিখে ফেলে দু'চার লাইন কবিতা । সারাক্ষন মনে আসে প্রেমের গান, কখনোবা গুনগুনিয়ে সুর ভাজে । উদাস হয়ে আনমনে জানালার গ্রীল ধরে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে । আকাশে সাদা সাদা মেঘ উড়ছে, কিন্তু সে অবাক হয়ে দেখে মেঘের বদলে একটা সৌম্য-সুন্দর-রমনীয় অবয়ব । ক্রমশ অবয়বের হাত গুলো দৃশ্যমান হয়, যেনো ধবধবে সাদা-শুভ্র নরম-তুলতুলে ভরাট দুই বাহু ।

স্কুলে যাওয়ার সময় সকাল দশ ঘটিকা, কিন্তু তারও ঘন্টা দুই আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে বসে থাকে আর সারাক্ষন পায়চারি করে এপাশ থেকে ওপাশ । বারবার ঘড়িতে সময় দেখে । সময় যেনো কিছুতেই চলছেনা, ঘড়ির কাটা অচল হয়ে আছে । অপেক্ষা শুধু দীর্ঘ হয় তার । তারপর আস্তে আস্তে চলতে শুরু করে স্কুলের পথে ।

স্কুলের রাস্তা সামনে কিছুটা এগিয়ে মিলেছে পূর্ব দিক থেকে আসা আরেকটি রাস্তার সাথে । এরপর রানীর দিঘীর কাছে মোড় ঘুরে চলে গেছে স্কুলের পথে । এখান থেকে স্কুল বেশি দূরে নয় । এই মোড়ে এসে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর, অবশেষে তার দিকে মৃদু পায়ে এগিয়ে আসতে থাকে তার প্রিয় সহপাঠিনী । কাছে এসেই একটা স্মিত হাসি, বিদ্যুৎ চমক বয়ে যায় বালকের বুকে ।

কিন্তু মেয়েটার হাসিতে এমনই মোহ এমনই স্বস্তি, যেনো মেলে ধরলো শত ফুলে সাজানো বরন ডালা । এই হাসির অর্থ বুঝেনা বালক । বুকে শুরু হয় ধুকপুকানি । মাথা নিচু করে নিঃশব্দে হেটে যায় বালক, মেয়েটির পাশ দিয়ে । চলতে গিয়ে মেয়েটি হেসেহেসে টুকটাক কথা বলে, দু'চার টা এলোমেলো প্রশ্ন বালকের দিকে, কখনওবা চপল কিছু খুনসুটি ।

বালকটি নিরবে পথ চলে । মাঝে মাঝে হ্যাঁ বা না, এর বেশী কথা সে বলতে পারেনা । আপন মনে পথ চলতে থাকে বালক, মেয়েটির কোন কথাই তার কানে ঢুকছেনা যেনো । মনে মনে সুর ভাজে, গুনগুনিয়ে হঠাৎ গেয়ে উঠে দুই লাইন । অমনি মেয়েটি হেসে উঠে সশব্দে ।

মাথা নিচু করে লজ্জায় রাংগানো মুখ লুকায় বালক । মেয়েটির চোখের দিকে তাকানোর শক্তি হয়না তার । পাশে থেকে নিঃশব্দে হেটে যায় সে । আর আড়চোখে দেখে মেয়েটির খোলা বাহু । দেখতে খুব ভাল লাগে তার, আহা কি সুন্দর শ্বেত-শুভ্র বরফ-কুচির মত ।

মেয়েটির জামার হাতা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানে খোলা চামড়ায় বালকের লোভী চোখের অহর্নিশ আসা যাওয়া । "আজ চব্বিশ বছর পর কেন আমাকে এটা জিজ্ঞেস করছ ? তোমার এই প্রশ্নের কোন জবাব নেই আমার কাছে । আমি সত্যি জানিনা, কেনো তোমাকে কিছু বলতে পারিনি । । " তুমি এক পলকে তাকিয়ে আছো আমার দিকে ।

যেনো তোমার প্রশ্নের জবাব খুঁজছ আমার চোখে মুখে, আমার অভিব্যক্তিতে । নাকি তোমার দৃষ্টি খুঁজে বেড়াচ্ছে চব্বিশ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া সেই বালকের মুখ ! কিছুক্ষন চুপ থাকার পর তুমি বললে, "এই এত গুলি বছর, এতটুকুও মনে পড়েনি আমায় ??" কি বলব আমি ? কি হবে এই কথার উত্তর দিয়ে ?? কি করে বলি, 'আমার চেতনায় আমি সারাক্ষন শুধু খুজেছি নরম-তুলতুলে সাদা-শুভ্র ধবধবে নগ্ন দুই বাহু । যখনই ছুঁতে যাই, মিলিয়ে যায় । যখনই ধরতে যাই, পালিয়ে যায়' !! তারপর ওর সজল চোখের দিকে তাকিয়ে আমি বললাম, "যদি উল্কি হতে পারতাম, তাহলে আমাকে পেতে তোমার জামার হাতার নিচে, তোমার নরম তুলতুলে নগ্ন বাহুতে । যেন লেপটে আছি সারাক্ষন তোমার দুই হাতের নগ্ন বাহুতে, যেনো জড়িয়ে আছি আমার সব অস্তিত্ব নিয়ে তোমার মাঝে " !!!  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।