আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাধারতো অভ্যাস জল ঘোলা করে খাওয়া।

গাধা নাকি পরিষ্ড়্গার জল পান করতে পারে না। এটা তার চিরদিনের অভ্যাস। আগে জল ঘোলা করবে। তারপর পান করবে। আবুল হোসেনের পদত্যাগের ঘটনা নিয়ে সরকার যা করল- তাতে তার মধ্যে গাধার এ বিমূর্ত রূপটিই পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে।

পদ্মা সেতু নিয়ে এই যে এত কথা, এত ভয়াবহ জটিলতা- এসব কিছুই হতো না যদি সময়ের কাজটি সময়ে করা হতো। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতির অভিযোগ উঠল, তখনই যদি সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা পালন করত, তবে হয়তো পরিস্থিতি এত জটিল হতো না। কিন্তু সরকার এ কাজটি তখন করেনি। কেন করেনি? উত্তর খুবই সহজ। এটি হচ্ছে প্রবল আমিত্ববোধের দায়।

আর এই দায় শেষ পর্যন্ত চাপিয়ে দেয়া হয়েছে জাতির কাঁধে। কী আশ্চর্য! প্রধানমন্ত্রী নিজে যেহেতু তার ল্যাপটপ থেকে এ মন্ত্রিসভার জন্ম দিয়েছেন, কাজেই যে যাই বলুক, মন্ত্রীরা যত অপকর্মই করুক, তারা কখনও খারাপ হতে পারে না- এই হচ্ছে তার অহংকার। এই অহংবোধের কারণেই পদ্মা সেতু সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক উত্থাপিত দুর্নীতির সঠিক তদন্ত না করে তিনি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা উল্টো বিশ্বব্যাংককে ‘একহাত’ দেখে নেয়ার জন্য হম্বিতম্বি করেছেন। কিন্তু এতে লাভ কী হল? শেষ পর্যন্ত নথ তো খসাতেই হল। মাঝখান থেকে বিশ্বদরবারে এ জাতি আরও একবার দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত হল।

পদ্মা সেতুকে বলা হয় স্বপ্নের সেতু। এ সেতুকে কেন্দ্র করে দেশের মানুষের অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন। যদি কোন একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য এ সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়, তাহলে মানুষ বিষয়টিকে অবশ্যই সহজভাবে নেবে না। এজন্য ক্ষমতাসীন দলকে পরবর্তী নির্বাচনে চড়া মাসুলও গুনতে হতে পারে। কাজেই একজন ব্যক্তি ও তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করার সংকল্পে অনড় না থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক আগেই উচিত ছিল জনগণের আবেগ-অনুভূতির মূল্য দিয়ে শুরুতেই বিষয়টির ফয়সালা করে ফেলা।

কিন্তু তারা তা করেনি। সারাবিশ্বের দুর্নীতি পরিস্থিতি নিয়ে টিআইবি প্রতি বছর যে ধারণাসূচক প্রকাশ করে থাকে, তাতে ২০১১ সালে এ দেশের দুর্নীতি পরিস্থিতির কিঞ্চিত অগ্রগতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অবস্থানগতভাবে কিছুটা এগোলেও দুর্নীতির বৃত্ত-বলয় থেকে যদি দেশ মুক্ত না হয় তবে এ অর্জন অর্থহীনতায় পর্যবসিত হওয়ারই শামিল। টিআইবি-র ভাষ্য অনুযায়ী, সংসদ বর্জন সংস্ড়্গৃতি, সংসদীয় কমিটির কার্যকর ভূমিকা পালন না করা, বাজেটে কালো টাকা সাদা করতে দেয়া, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন সংশোধন, টেলিকমিউনিকেশন আইনের সংশোধন, দুদক আইনের সংশোধন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারসহ নানা কারণে দেশকে দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে।

এজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আইনি উদ্যোগ। ঢাল নেই, তলোয়ার নেই- নিধিরাম সর্দার সেজে বসে থাকলে তা দুদকের জন্য যেমন মর্যাদার বিষয় হবে না, তেমনি দুর্নীতির ভারে নুøব্জ এ জাতিও সে ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোন সুফল পাবে না। বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকার শীর্ষকাতারে স্থান দখল করে থাকায় বিশ্ববাসীর কাছে দেশের প্রতিটি মানুষের মাথা হেঁট হয়ে গেছে। অথচ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের এখানে কোন ভূমিকাই নেই। তবে কেন অন্যের কাছে তাদের মাথানত হবে? আমরা মনে করি, এ দায় রাজনীতিক ও আইনপ্রণেতাদের।

দুর্নীতির কলংক মোচন করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে তারা একটা সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে দেবেন- এ প্রত্যাশা আমাদের সবার। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.