আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুসাফিরের ইফতার ।

আমি মনে প্রাণে একজন মুসলিম। ঘৃণা করি ধর্ম বিদ্বেষী নাস্তিকদের এবং ধর্ম ব্যবসায়ী ছাগু তথা উগ্রবাদীদের। ক্যঁচাল পছন্দ করিনা । । গত রমজানে ইফতারী বিড়ম্বনা!.. ঢাকায় ব্যবসায়িক কাজ শেষে বিকাল ৪:৩০ এ গাবতলী থেকে রওনা হলাম উত্তর বঙ্গের উদ্দেশ্য।

বাস সঠিক সময়েই ছাড়লো। সেদিন সম্ভবত ৬:১৭ এর দিকে ইফতার হবার কথা। বাসের সুপারভাইজার বললোএলেঙ্গা আল আরিফ হোটেলে ব্রেক দিবে সেখানে আরামে ইফতার করা যাবে এবং নামাজের জায়গা আছে সেখানে নামাজ আদায় করা যাবে। সে জন্য যাত্রীরা সবাই চুপচাপ বসে আছে। বাইপাইলে এসেই জ্যম শুরু.............গাড়ী যেন এগোতেই চায়না।

অনেক দির্ঘসময় ধরে ঠেলেঠুলে অবশেষেচন্দ্রা পার হলাম। সময় তখন ৫:২০ এর মতো হবে। রাস্তায় জ্যম নেই। চলছে গাড়ী প্রচুর স্পিডে...অল্পক্ষণের মধ্য কালিয়াকৈর বাইপাস পার হলাম। যে বাসে ছিলাম সেটা নর্থবেঙ্গলের সবচেয়ে স্পিডষ্টার গাড়ি।

সবার আগে যায়। এজন্য ভাবছি হয়তো এলেঙ্গা গিয়ে ইফতার ধরতে পারবো। কিন্তু বাধ সাধলো মির্জাপুর রেলক্রসিং এ ট্রেন আসার ৫ মিনিট আগেই রাস্তা বন্ধ করে দিল। মহাসড়কে মাত্র ৫ মিনিটে কত গাড়ী যে জমা হয় যে রাস্তায় চলাফেরা করেনা তার কাছে অবাক বিস্ময়!..আমাদের দেশে চালকদের আগে যাওয়ার চেষ্টার ফলে ডাবলিং করে গাড়ি দাড় করায় এর ফলে অন্যপার্শে গাড়ী চলাচল বিঘ্নিত হয় যার ফলে নতুন করে যানজট শুরু হয়ে যায়। এবার ও তাই হলো...............................................ধিরে ধিরে চলতেছিল গাড়ী একটু চলে আবার থামতে হয়।

এভাবে মির্জাপুর বাইপস যেতেই ৬:০০ বেজে গেল। এখান থেকে রাস্তা ক্লিয়ার। গাড়ী প্রচুর স্পিডে তখন। আমি সুপারভাইজারকে বললাম গাড়ী মির্জাপুরে ঢোকাতে সেখানে ওজু করে ইফতার করে নামাজ পড়ে নেয়া যাবে। কিন্তু এক ভদ্রলোক বিরোধিতা করলেন সাথে অন্য যাত্রীরা এতে দ্বিমত করলো।

তারা বললো ড্রাইভার আপনি গাড়ি চালান যেখানে সময় হয় সেখানে একটা বাজার দেখে দাড়ালেই হবে। আমি আর কিছু বললামনা চুপ থাকলাম। সময় তখন ৬:২০ আমি মাম পানি দিয়ে ইফতার করলাম। অবশেষে (সম্ভবত জায়গাটার নাম) পাকুল্লা গিয়ে বাস থামলো। হাতে গোনা কয়েকটা দোকান!..বাস থামছে কমপক্ষে ২০ খানা গড়ে ৩০ জন করে যাত্রী হলেও ৬০০ জন!!দোকানের সব পাণীয় জুস শেষের দিকে!..আমি ড্রাইভারকে বললাম ভাই নামাজে গেলাম ।

এই বলে রাস্তার পশ্চিমদিকে একটা রাস্তা দিয়ে এগিয়ে গিয়ে একটা মসজিদ পেলাম। সেখানে নামাজ আদায় করে বের হয়ে দেখি একজন বৃদ্ধলোক চেতই পিঠা বানিয়ে বিক্রি করছেন। আমি দুইটা কিনে খেলাম। খেয়ে ধীরে সুস্থে গাড়ীর দিকে আসছি এসে দেখি যাত্রীদের মধ্য চরম হতাসা!.. কেহ ঠিকমতো খাবার পায় নাই। লাগে ফুসছে সে ভদ্রলোক যিনি গাড়ী থামাতে নিষেধ করেছিলেন।

আমি ধীরে ধীরে গাড়িতে চড়লাম ড্রাইভার সুপারভাইজারকে বললো যাত্রীগুনতে....তারপর ছাড়লো বাস। সুপারভাইজারকে বললাম এলেঙ্গায় থামাবেননা সরাসরি ফুডভিলেজে গিয়ে দাড়াবেন। সেখানে এশা পড়ে খাওয়াদাওয়া করে তারপর গাড়ী ছাড়বেন। এবার সেইলোক আবার বিরোধীতা করলো!..এলেঙ্গায় থামাতে বললো। আমি বললাম কয়বার থামাবে গাড়ী? ফুডভিলেজেতো থামতেই হবে?তারাবী পড়বেনা যাত্রীরা? আমার পক্ষে কয়েকজন সায় দিলো।

আমার মনে একটু দুষ্টু বুদ্ধি আসলো, বেচারাকে ক্ষুধায়কষ্ট করানোর ইচ্ছা কাজ করছিলো!..অবশেষে এলেঙ্গায় এসে গাড়ী দাড়াতে বললো সেই ভদ্রলোক তখন ড্রাইভার দাড়ালো তবে সময় মাত্র ১০ মিনিট। আমি নামলাম নেমে একটা চা খেয়ে নিলাম। বেচারা ভদ্রলোক হোটেলে সিট না পেয়ে আবার ফিরে এলো!.. আমি তখন হেডফোন বের করে মোবাইলে গান শুনি আর মুচকি হাসি!..আহারে বেচারা!..অধিক বুদ্ধির খেসারত দিতে হলো!!... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।