আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রামীণফোনে বাধ্য করা হচ্ছে গণপদত্যাগে

গ্রামীণফোনে গণছাঁটাই নয়, চলছে গণপদত্যাগ! অন্তত তেমনটাই দেখাতে চাচ্ছে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। আর সে জন্য ছাঁটাই তালিকার কর্মীদের বরখাস্তপত্র না দিয়ে তাদের দিয়ে জোরপূর্বক আদায় করে নিচ্ছে পদত্যাগপত্র। বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়ে গ্রামীণের নিজের তৈরি একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে কর্মীদের বিদায় করে দেওয়া হচ্ছে। এ কাজে নিয়ম নীতির সামান্য তোয়াক্কাও করছে না প্রতিষ্ঠানটি। লেটার অব রিলিজ অ্যান্ড ইনডেমনিটি শিরোনামে তৈরি এই পত্রে ছাঁটাইকৃতরা কোনো আইনী ব্যবস্থা নেবেন না বা আদালতের শরণাপন্ন হবেন না মর্মে শর্ত আরোপ করে কর্মীদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে নেওয়া হচ্ছে।

ছাঁটাইকৃত কর্মীরা যাতে কোনো ধরনের আইনী ব্যবস্থা নিতে না পারে সে লক্ষ্যেই গ্রামীণ ফোন এ চিঠি ইস্যু করেছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। চাকরিচ্যুতির ক্ষেত্রে এমন একটি পত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনাও এর আগে দেখা যায়নি বলে দাবি তাদের। রিলিজ অ্যান্ড ইনডেমনিটি লেটার শিরোনামে লেখা চিঠিটিতে দেখানো হয়েছে কর্মী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন। এবং নিজস্ব অসুবিধার কারণেই তার এই পদত্যাগ। এ পদত্যাগে বাধ্য করা হয়নি, কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হয়নি এবং কোনো শর্ত আরোপ করা হয়নি, স্রেফ নিজের ইচ্ছায় পদত্যাগ করছেন এমন শর্ত আরোপ করেই কর্মীদের স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করছে গ্রামীণ ফোন।

একটি শর্তে বলা হয়েছে, পদত্যাগের আগে প্রত্যেক কর্মীই গ্রামীণ ফোনের সকল কর্মী, কর্মকর্তা ও পরিচালকদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। কেবল তা-ই নয়, চিঠিতেই গ্রামীণ ফোন প্রতিটি কর্মীকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে যে বিষয়টি স্রেফ কর্মীর নিজের ও গামীণ ফোনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এ বিষয় নিয়ে কোনো আদালতের শরণাপন্ন হওয়া বা আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা এমন একটি চিঠিতে বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করেছেন কেবলই তাদের পাওনা অর্থ হাতে পেতে। তারা বলেছেন এটা যে কোনো কর্মীর জন্য অসম্মানের।

এ বিষয়ে শ্রম আইন নিয়ে কাজ করেন এমন একজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, এটি সরাসরি শ্রম আইনের লঙ্ঘন। এমনকি দেশের সংবিধান বিরোধীও। তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে প্রতিকার পাওয়ার ও আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার যে কারও রয়েছে। এই অধিকার হরণ করে এমন একটি মুচলেকাপত্র গ্রামীণ ফোন নিতে পারে না। ছাঁটাইকৃতদের একজন বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামীণ ফোন তার নিজের লেখা একটি চিঠি কর্মীদের লেখা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করলেও এর ভাষা থেকেই বোঝা যায় এটি চাপিয়ে দেওয়া একটি চিঠি যাতে জোরপূর্বক অথবা অনেকটা ফাঁদে ফেলে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, চিঠিতে একটি অংশে বলা হয়েছে ‘এই পত্রে যা কিছু লেখা রয়েছে তা আমি মনোযোগের সঙ্গে পড়েছি এবং এর শর্তগুলো বুঝতে পেরেছি। এবং কোনো ধরনের চাপ বা প্রভাবমুক্ত থেকেই এতে স্বাক্ষর করছি‘ যা সম্পূর্ণ কর্তৃপক্ষের তৈরি কোনো চিঠিরই ভাষা হতে পারে। কোনো কর্মী নিজে থেকে লিখলে তার ভাষা এমনটা হবে না। এ চিঠিটিতে স্বাক্ষর করিয়ে গ্রামীণ ফোন আমাদের অধিকার নিয়ে খেলেছে, অভিযোগ এই কর্মীর। তবে ইনডেমনিটি পত্রে যাই থাকুক না কেনো এ নিয়ে ছাটাই হওয়া কর্মীরা আইনি লড়াইয়ে যাবেন বলেই জানান তিনি।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.