আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিজিটাল ফিল্মমেকিং ১০১ - সিনেমাটোগ্রাফি ফান্ডামেন্টালস এন্ড প্রো হাই ডেফিনিশন ক্যামেরা অপারেশন

এখন পর্যন্ত সিনেমাটোগ্রাফি বলতে এককথায় প্রচলিত মুভি ক্যামেরাকে বোঝানো হয়। আগামি আরো অনেক বছর মেইনস্ট্রিম মুভি ইন্ডাস্ট্রি ৩৫ মিমি'র মুভি ক্যামেরা দিয়ে চলবে বলে আমার বিশ্বাস। মুভি ক্যামেরার নিজের দামই অনেক। তার উপর র' স্টকের দাম,এডিটিং মেশিনে কাজ করা,ডেভেলপ করার খরচ ইত্যাদি সব মিলিয়ে এটা নতুনদের জন্য প্রায় দুঃস্বপ্ন। টেকনোলজি এই সমস্যার কিছুটা সমাধান করেছেন।

প্রো হাই ডেফিনিশন ক্যামেরাকে এখন মোটামুটি সহজলভ্য বলা যায়। দেড় হাজার থেকে দশ হাজার ডলারের মধ্যে যে ক্যামেরাগুলি পাওয়া যায় তাতে ঠিকঠাকমত কাজ করতে পারলে যথেষ্ট ভাল প্রডাকশন নামানো সম্ভব। এর আরো বড় সুবিধা হচ্ছে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে নিজে নিজেই এডিটিং এর কাজ করা যাচ্ছে আর ডেভেলপের খরচ বলতে কিছু নাই। ক্যামেরা অপারেট করার টেকনিকে যাওয়ার আগে কিছু বেসিক বিষয় জানিয়ে শুরু করা যাক। > এই টিউটোরিয়াল কোন নির্দিষ্ট মডেল স্পেসিফিক না।

সব হাই ডেফিনিশন ক্যামেরার মূল কাজের ধারা মোটামুটি একই। এর মধ্যে কিছু মুভি ক্যামেরার কনসেপ্ট থেকেই নেয়া হয়েছে। কিছু আবার ডিজিটাল ক্যামেরার নিজস্ব সংযুক্তি। দামের উপর নির্ভর করে সব ক্যামেরাতে সব অপশন নাও থাকতে পারে। কোন নির্দিষ্ট অপশন আপনার ক্যামেরাতে না থাকলে ধরে নিবেন যে ক্যামেরা সেই অপশনটার একটা অটো মান নিজেই সেট করে নিয়েছে (সেই অটো ভ্যালুটা খুব একটা ভাল আউটপুট দেয় না)।

থাকুক বা না থাকুক,এখানে আলোচ্য সবগুলি ফিচারই ভালমত জেনে রাখুন। সারাজীবন নিশ্চয়ই একই ক্যামেরা ইউজ করবেন না। > এই টিউটোরিয়ালে ধরে নেয়া হচ্ছে যে ক্যামেরা চালু করার আগেই সেটের লাইট একদম ফাইনাল করা আছে। বাস্তবে লাইট আর ক্যামেরা সেটিং প্যারালাল চলতে থাকে। লাইট সেটিংসের সময় ফ্রেমটা ক্যামেরাতে বার বার দেখে নিতে হয় কারন এন্ড অফ দ্য ডে লাইটটাকে ক্যামেরার লেন্স দিয়েই দেখা হবে।

> প্রো ডিজিটাল ক্যামেরা সাধারনত তিন ধরনের মিডিয়ামে ছবি ধারন করে। মিনিডিভি টেপ,হার্ড ড্রাইভ (খুব কমন না) আর মেমরি কার্ড। আমি এই তিনটার আউটপুটের কোয়ালিটিতে তেমন কোন পার্থক্য দেখি না। হয়ত আছে,আমার চোখে ধরা পড়ে না। টেপ আজকাল প্রায় উঠে যাচ্ছে কিন্তু আমি টেপ পছন্দ করি কারন এগুলি দামে সস্তা বলে একসাথে ডজন খানেক নিয়ে লোকেশনে যাওয়া যায় এবং কখনোই শেষ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না।

প্রতিটা টেপ ৬৩ মিনিট ধারন করে এবং অসংখ্যবার ব্যবহার করা যায়। টেপের ভিডিওকে এডিটেবল ক্লিপে কনভার্ট করতে একটু বেশি সময় লাগে। মেমরি কার্ড প্রচুর এক্সপেন্সিভ। একেকটা ১৬ গিগাবাইটের কার্ড ৮০-১০০ মিনিট ধরতে পারে। এর বেশি শুট করলে আগে কার্ড খালি করে নিতে হবে।

> ক্যামেরা কিনা বা ভাড়া নেয়ার আগে অবশ্যই চেক করে নিবেন ভিডিওটা কম্পিউটারে ট্রান্সফার করার ব্যবস্থা কি! ম্যাক ছাড়া অন্যান্য কম্পিউটারে খুব কমই ফায়ারওয়ার পোর্ট (অন্য নাম IEEE পোর্ট) পাওয়া যায়। তাই ভিডিও কিভাবে ট্রান্সফার করবেন সেটা আগেই বুঝে নিন। > প্রিভিউ দেখার জন্য ক্যামেরাতে ভিউ ফাইন্ডারের পাশাপাশি এলসিডি ডিসপ্লে থাকে। ডিজিটাল ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডার মুভি ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারের মত খুব একটা রিলায়েবল না। তার চেয়ে এলসিডিটাই ভাল।

সবচেয়ে ভাল যদি আলাদা মনিটরে দেখতে পারেন। প্রফেশনাল মনিটর জোগাড় করতে না পারলে ঘরের টিভিকেও ইউজ করতে পারেন। যত বড় পর্দায় দেখবেন,ছবির দোষত্রুটি তত সহজে ধরতে পারবেন। আজকাল বোধহয় বাংলাদেশে সবার ঘরে ঘরে একটা করে ডিএসএলআর আছে,সেটা ইউজ করতে পারুক বা না পারুক। আপনাদের অনেকেই ডিএসএলআরে কিছু অভিজ্ঞতা থাকতে পারে।

তাদের জন্য ডিএসএলআর এবং ভিডিও ক্যামেরার কিছু পার্থক্য আগেই বলে নেয়া ভাল। > স্টিল ফটোগ্রাফির চেয়ে ভিডিওগ্রাফি অনেক বেশি সহজ। স্টিলে শুধু একটা ফ্রেম আর সেই ফ্রেমে প্রচুর কারুকাজ করে সেটাকে আকর্ষনীয় করতে হয়। ভিডিওতে প্রতিটা ফ্রেমকে নান্দনিক করার দরকার হয় না। যেকোন নাটক বা সিনেমার বেশিরভাগ (বা অনেকসময় সব) শটই খুব বেসিক আর নরমাল শট।

মোটামুটি সাতদিন ক্যামেরা নাড়াচাড়া করলেই আপনি বেসিক ক্যামেরা অপারেশন শিখে যাবেন। মাস খানেকের মধ্যে অন্তত বাংলা নাটকের ক্যামেরা চালানোর মত জ্ঞানী হতে পারবেন। তবে একটা সমস্যা। ক্যামেরা চালানোর পাশাপাশি সিনেমাটোগ্রাফারের আরেকটা মেজর কাজ হল লাইট সেটাপ করা। লাইটিং শিখতে সময় এবং ধৈর্য দরকার,এটা সহজ কাজ না।

কিন্তু জাস্ট ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য শর্টফিল্ম ইত্যাদি বানাতে লাইট নিয়ে অত মাথা না ঘামালেও চলে আর যেটুকু ক্যামেরা অপারেশন জানা দরকার হয় সেটা ওই মাসখানেকেই আয়ত্ব করা যায়। > স্টিল বা মুভি ক্যামেরার সাথে প্রো এইচডি ক্যামের একটা বড় পার্থক্য হচ্ছে এইচডি ক্যামে লেন্স বদলানোর ব্যাপার নাই। মাত্র কিছুদিন আগে ক্যানন ২০ হাজার ডলার দামের ক্যামেরা ছেড়েছে যেটাতে লেন্স বদলানো যায়। আমরা অত উপরের ক্যামেরার কথা বাদ দিচ্ছি। এই টিউটোরিয়ালে শুধু ফিক্সড লেন্সের ক্যামেরার কথা বলা হচ্ছে।

> স্টিলে ISO বলে একটা ফিচার আছে। মুভি ক্যামেরাতে এই ফিচারকে বলে ASA। ভিডিও ক্যামেরাতে এই ধরনের কিছু থাকে না। এবার মূল টিউটোরিয়াল শুরু হোক। [নিচে থার্ড ব্র্যাকেটে যেসব কথা লেখা থাকবে সেগুলি প্রথমবার পড়ার দরকার নাই।

এগুলি একটু এডভান্সড। পড়লে মনে রাখতে পারবেন না। তার চেয়ে এগুলি বাদ দিয়ে বাকিটা পড়ুন,ক্যামেরা নিয়ে ২-৪ দিন নাড়াচাড়া করে একটু কাজ শিখে তারপর এগুলি পড়ুন। ] সবার আগে দেখে নিন যে রেজুলুশন 1080p তে সেট করা আছে কিনা। যদি আপনার ক্যামেরাতে 1080p না থাকে কিন্তু 1080i আর 720p থাকে,তাহলে 720p ইউজ করা ভাল।

[p হচ্ছে প্রগ্রেসিভের সংক্ষেপ আর i ইন্টারলেসডের সংক্ষেপ । প্রগ্রেসিভ আর ইন্টারলেসড পরে অন্য কোর্সে আলোচনা হবে। আপাতত জেনে রাখুন যে সবসময় p অপশনকে বেছে নেয়ার চেষ্টা করবেন। ] হোয়াইট ব্যালেন্স: ক্যামেরা হাতে নিয়ে প্রথমেই এটা করতে হবে। সবসময় লোকেশনে যাবেন একটা সাদা কাগজ নিয়ে।

লাইট সেটাপ হয়ে গেলে এই সাদা কাগজকে লেন্সের সামনে এমনভাবে ধরবেন যেন পুরো ফ্রেমে কাগজ ছাড়া অন্য কিছু না থাকে। এবার ক্যামেরাতে White Balance খুজে বের করে একবার চাপ দিন। পরিবর্তনটা নিজেই বুঝতে পারবেন। যতবার লাইট সেটাপ বদলাবেন,হোয়াইট ব্যালেন্স করতে হবে। কিন্তু একই লাইটে বারবার করবেন না তাহলে সামান্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হোয়াইট ব্যালেন্সেরর পার্থক্যের জন্য দুইটা আলাদা শটে দুইরকম কালার আসবে।

এডিটিং এর সময় প্রচুর ঝামেলা। [লোকেশনে নানারকম লাইটের আনাগোনার কারনে ক্যামেরা একটু ‘কনফিউজড’ হয়ে যায়। তখন তাকে একটা রেফারেন্স পয়েন্ট দিতে হয়। এজন্যই একটা সাদা কাগজ ক্যামেরার সামনে ধরে বলতে হয়,এটা তোমার হোয়াইট কালার তাই একে রেফারেন্স ধরে বাকি কালারগুলি ঠিক করে নাও। হোয়াইট ব্যালেন্স না করলে সাধারনত ছবি ব্লুয়িশ বা অরেঞ্জিশ দেখায়।

আল্লাহর দান হিউম্যান আই প্রতি মূহুর্তে নিজেই এই কাজটা করতে থাকে। মুভি ক্যামেরাতে এই ফিচারটা নাই,দরকার হয় না। ] ফ্রেম রেট: মুভির ফ্রেমরেট 24p,টেলিভিশনের ফ্রেমরেট 30p। আপনি যেকোন একটা পছন্দ করে নিন। যেটাই পছন্দ করেন,পুরো প্রজেক্টে সেটাতেই থাকবেন।

[ফ্রেম রেট 24p বলতে বোঝায়,প্রতি সেকেন্ডে ২৪টা ফ্রেম যাবে। p হচ্ছে প্রগ্রেসিভের সংক্ষেপ] শাটার স্পিড: এটার একটা প্রচলিত নিয়ম আছে। নরমাল শট অর্থাৎ যেখানে স্লো বা ফাস্ট মোশন নাই,সেখানে ফ্রেম রেট যদি x হয় তাহলে শাটার স্পিড হবে 1/2x। অর্থাৎ ২৪পি ফ্রেম রেটের জন্য শাটার স্পিড হবে ১/৪৮,৩০পি এর জন্য ১/৬০। [ফ্রেম রেট ২৪পি এবং শাটার স্পিড ১/৪৮ সেকেন্ড বলতে বোঝায়,ক্যামেরার ভেতরে শাটার প্রতি ফ্রেমে একবার অর্থাৎ সেকেন্ডে ২৪ বার ওপেন ক্লোজ হয় এবং প্রতিবার ওপেন হবার সময় ১/৪৮ সেকেন্ড খোলা থাকে।

খুব ফাস্ট মুভিং গাড়ির ভিডিও করতে চাইলে শাটার স্পিড অনেক কমাতে হবে যেমন ১/৫০০ সেকেন্ড। খুব কম সময় শাটার খোলা বলে আলো লেন্সে আসার যথেষ্ট সময় পায় না ফলে মুভমেন্ট ঠিকমত ধরতে পারেন না। সেজন্য মুভিং গাড়ির ছবি ক্লিয়ার আসবে। একইভাবে স্লোমোশন করতে চাইলে শাটার স্পিড বাড়িয়ে ফেলুন। স্লোমো ভাল পাওয়ার জন্য একটা টিপস,১০৮০পি বদলে ৭২০পি ইউজ করুন।

শাটার স্পিড কমিয়ে ব্রাইটনেস বাড়ানো যায়। কিন্তু কোন অবস্থাতেই এটা করবেন না কারন লো শাটার স্পিডে মোশন খুব বাজে আসবে। ] এক্সপোজার/এপারচার/F stop: এটা ক্যামেরার সবচেয়ে জটিল বিষয়। অনেক কিছু জানার তো আছেই,এছাড়া এটাতে পারফেক্ট হতে চাইলে প্রচুর প্র্যাকটিসকরতে হয়। শুধু এই টপিক নিয়ে একটা আলাদা পোস্ট দেয়া যায়।

কোন একদিন হয়ত আমি দিবও। কিন্তু যেহেতু একটা একদম বেসিক টিউটোরিয়াল তাই আজকে অল্প কথায় সারতে চাই। যে নামেই ডাকা হোক,বিষয়টা হচ্ছে ক্যামেরাতে আপনি আলো কতটা ঢুকতে দিবেন সেটা নির্ধারন করে দেয়া। রিং নাড়াচাড়া করে দেখুন যে ঠিক কোন লাইটে আপনার ফ্রেমটাকে পারফেক্ট মনে হচ্ছে। কখনোই এই ফিচারকে আপনার ফ্রেমের ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রন করার জন্য ইউজ করবেন না।

আপনার যদি বেশি লাইট দরকার হয় তাহলে সেটে আরো এক/দুইটা এক্সট্রা লাইট লাগান। এক্সপোজার দিয়ে ব্রাইটনেস বাড়ালে বা কমালে সেটার আউটপুট ভাল আসবে না। আপনার সাবজেক্ট আসলে যতটুকু ব্রাইট,এক্সপোজার রিং ঠিক ততটুকুতেই সেট করবেন। সিনেমার শুটিং এ আপনারা লাইটমিটার ইউজ করতে দেখেছেন নিশ্চয়ই। ডিজিটাল ভিডিওতে লাইটমিটার খুব একটা লাগে না কারন ক্যামেরাতে জেব্রা ফিচার থাকে।

এই ফিচার অন করে রাখলে ফ্রেমের যে অংশগুলি ওভার এক্সপোজড,সেই অংশগুলি ক্যামেরারা এলসিডি ডিসপ্লেতে জেব্রা লাইন দিয়ে চিহ্নিত করে দিবে। বোঝা গেল?বোধহয় না,আরো ভালমত ব্যাখ্যা করি। ধরুন একটা সাদা দেয়ালের সামনের আপনার সাবজেক্ট বসে আছে। আপনি লাইট আর এক্সপোজার সেটআপ করলেন,কিন্তু সাদা ওয়ালে জেব্রা দেখা যাচ্ছে। এর অর্থ হল,এই অবস্থায় ছবি তুললে সাদা ওয়ালকে খুব বেশি উজ্জ্বল মনে হবে ফলে ছবির ওই অংশে রং জ্বলে যাবে।

আপনি এক্সপোজার একটু কমালে আস্তে আস্তে জেব্রা চলে যাবে কিন্তু সাবজেক্ট হয়ত ডার্ক মনে হবে। এই অবস্থায় আপনি সাবজেক্টের উপর লাইট বাড়াতে পারেন বা দেয়ালের উপর থেকে লাইট কমানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। যেটাই করেন,জেব্রা থাকাবস্থায় ছবি তুলবেন না কারন ভাল আসবে না। তবে জেব্রার অল্প ৩-৪টা লাইন থাকলে ইগনোর করতে পারেন। অনেক ক্যামেরাতে জেব্রার সেনসিটিভিটি নিয়ন্ত্রন করার ব্যবস্থা থাকে।

সাধারনত ৭০,৮০,৯০ এবং ১০০ এই চারটা অপশন থাকে। যথেষ্ট এক্সপার্ট না হওয়া পর্যন্ত ৭০ এ থাকুন। জুম: এটা নিশ্চয়ই সবাই জানেন। জানা কথা আর না বলি। [এখানে ডলি (সাবজেক্টে স্থির রেখে যদি ক্যামেরাকে সামনে নিয়ে যাই সেটা হচ্ছে ডলি শট) আর জুমের পার্থক্যটা বোঝাই।

পার্থক্যটা ডেপথ অফ ফিল্ডে। ধরুন একটা বিল্ডিং এর ২০ মিটার সামনে আপনার সাবজেক্ট দাঁড়িয়ে আছে আর ক্যামেরা আছে সেই সাবজেক্টের ১০ ফুট সামনে। ক্যামেরার ফ্রেমে সাবজেক্টের পুরো বডির সাথে বিল্ডিং এরও উল্লেখযোগ্য অংশ দেখা যাচ্ছে। এখান থেকে জুম ইন করলে সাবজেক্ট এবং বিল্ডিং দুইটাই সাইজে বড় হবে কারন জুম ইন হচ্ছে ম্যাগনিফায়ার। আর যদি ডলি করেন তাহলে শুধু সাবজেক্টটাই বড় হবে,বিল্ডিংটা একই সাইজের থাকবে।

] ফোকাস: যে সাবজেক্টকে ফোকাস করবেন,যতটা সম্ভব জুম ইন করে সাবজেক্টকে ফ্রেমে নিয়ে আসুন। সাবজেক্ট যদি মানুষ হয় তাহলে চোখে জুম ইন করুন। ফোকাস রিং ঘুরিয়ে সাবজেক্টকে একদম আউট অফ ফোকাস করে ফেলুন। এরপর আস্তে আস্তে রিং ঘোরাতে থাকুন যতক্ষন না আপনার কাছে মনে হয় যে ফোকাস ঠিকমত হয়েছে। এবার জুম আউট করে পছন্দমত ফ্রেমে ফিরে আসুন।

অনেক ক্ষেত্রে এত জুম ইন->ফোকাস->জুম আউট করার সময় পাবেন না বিশেষ করে যদি ইভেন্ট (বিয়ে ইত্যাদি) ভিডিও করেন,সেসব ক্ষেত্রে মোটামুটি আন্দাজ করে নিন যে সাবজেক্ট কত দূরে আছে। ফোকাস রিং বা এলসিডি ডিসপ্লেতে ফোকাস দূরত্ব মাপার ব্যবস্থা থাকে। রিং নাড়াচাড়া করে আপনার সাবজেক্টের দূরত্বকে সেট করে দিন। কিছু ক্যামেরাতে এমনকি ডিসপ্লেতে নির্দেশ করা থাকে যে ফোকাস এই মুহুর্তে সামনের ঠিক কোন পজিশনটাতে আছে। এই অপশনকে peaking বলে।

এটা আপনার ক্যামেরাতে থাকলে আরো ভাল। তবে এগুলি খুব রিলায়েবল না। সুযোগ থাকলে অবশ্যই ম্যানুয়ালি জুম ইন->ফোকাস->জুম আউট করে নিবেন। [সাবজেক্ট যদি চলমান হয় তাহলে ফোকাস করা একটু সমস্যা এবং কিছুটা অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। ক্যামেরা থেকে সাবজেক্টের দূরত্ব যদি সবসময় সমান থাকে,তাহলে ফোকাস বদলানোর দরকার হবে না।

এইসময় একজন সাহায্যকারী থাকলে ভাল যার কাজ হবে আপনার কোমর ধরে আপনাকে চলতে সাহায্য করা এবং নজর রাখা যেন আপনি আছাড় খেয়ে পড়ে টড়ে না যান। আপনি ডিসপ্লে থেকে চোখ বা মনোযোগ এক মুহুর্তের জন্যও সরাতে পারবেন না। ফলে আশেপাশে তাকানোর সুযোগ নাই। আপনার যদি পড়ে না যাওয়ার ভয় থাকে তাহলে মনোযোগ ভাল দিতে পারবেন। সাবজেক্ট আর ক্যামেরার দূরত্ব যদি সবসময় সমান না থাকে বা চলমান অবস্থায় ফোকাস বদলানোর দরকার হয় তাহলে বিষয়টা বেশ জটিল।

এ ধরনের শট পারলে এভয়েড করুন বা রিমোট কন্ট্রোল ইউজ করুন। আপনার একজন সহকারী লাগবে যে মনিটরে দেখে রিমোট দিয়ে ফোকাস বদলাতে থাকবে। হাটতে হাটতে ক্যামেরার ফোকাস বদলে এডজাস্ট করা সহজ বিষয় না। ] এবার দুইটা কম গুরুত্বপূর্ন ফিচারের কথা বলি। খুব এক্সপার্ট না হলে এই দুই ফিচার নিয়ে খেলাধুলা করা উচিত হবে না।

গেইন: সবসময় জিরোতে রাখবেন। গেইন বাড়ালে ব্রাইটনেস বাড়বে কিন্তু ছবিতে নয়েস বা পিক্সেল আসবে। এনডি ফিল্টার: এনডি হচ্ছে নিউট্রাল ডেনসিটি। শাটার স্পিড না বদলে এই ফিল্টার দিয়ে ব্রাইটনেস কমানো যায়। অনেকটা ক্যামেরার সামনে সানগ্লাস পড়িয়ে দেয়ার মত।

যথাসম্ভব এভয়েড করার চেষ্টা করবেন। সবকিছু সেট। এবার কাজ হচ্ছে শট নেয়া। টিউটোরিয়ালের কোন অংশ বা কোন টার্ম না বুঝলে জিজ্ঞেস করুন। কোন সংকোচ করবেন না।

সবচেয়ে বড় কথা,প্র্যাকটিস করুন। অনেক প্র্যাকটিস। ১০১ ইন্ট্রোডাকশন কোর্স হওয়ার কথা সেজন্য খুব বেসিক বিষয়গুলি লিখলাম। ইনশাল্লাহ পরে ২০১ লিখব যেখানে সিনেমাটোগ্রাফির খুটিনাটি বিষয়গুলি আরো বিস্তারিত আসবে। গুড লাক।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.