আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্ব-বিকশিত হুমায়ূন অ-বিকশিত অধ্যাপক রাজ্জাক!

রাস্তায় খুঁজে ফিরি সস্তায় ঘুরে ঘুরে এক কাপ চা ''আমি হ্যারল্ড লাক্সিকে চিনি না। কেন তিনি জগত বিখ্যাত তাও জানিনা। আমি তার ছাত্রের প্রতি সবার সমীহ দেখে অবাক হই। এমন না যে অধ্যাপক রাজ্জাক অনেক বইপত্র লিখে নিজেকে বিকশিত করেছেন'' :হুমায়ূন আহমেদ দেশের কোন মফস্বল শহরে এক উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবার বসবাস করে। কর্তা এবং কর্তীর সন্তান চারজন।

একমাত্র ছেলে সন্তানের পাশে তিনজন মেয়ে সন্তান। সেক্যুলার ধারণা সেখানে ছড়িয়ে পড়েনাই তাই এই অবস্থাটি প্রকাশে ছেলে মেয়ে আলাদা উল্লেখ করা। এই পরিবারের উপার্জনের কেন্দ্র হল ব্যাবসা। যেহেতু মেয়েরা কর্তার অবর্তমানে প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান চালাতে পারবেনা তাই এই কাজের দায়ভার ছেলেটির উপর পড়বে। দিনগুলি এভাবে গেলে মন্দ হত না কিন্তু সমস্যা বাধল যখন ছেলেটি পিতার ব্যাবসা কার্য চালিয়ে যেতে অস্বীকার করল।

কর্তা তখন ছেলেটিকে বুঝাতে চেষ্টা করলেন যে দুনিয়াটা টাকার গোলাম,উন্নতির জন্য ব্যাবসার বিকল্প নাই,চাকরির গোনা টাকা দিয়ে পেটে ভাত তোলা যায়না ইত্যাদি ইত্যাদি ছোটতর গল্পটা আজকে এখানেই শেষ। এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল কর্তা তার ছেলেকে এটা বুঝাতে চাইছেন যা তার নিজের পেশা। মফস্বলে ব্যাবসা করেন কিন্তু উচ্চ মধ্যবিত্ত তার মানে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। একজন ব্যাক্তি যখন একটা বিষয়েই দক্ষ হন তখন তার কাছে বাকি বিষয় গুলো হয়ে যায় ঐচ্ছিক। তার চিন্তা ধারণা যখন একটা বিষয়কে ঘীরে আবর্তন হচ্ছে তখন অন্য বিষয়গুলোর গুরুত্ব লোপ পাবে এটার মাঝে নতুনত্ব নেই।

গুরুত্ব লোপ পাওয়ার মানে এই নয় তাকে অন্য বিষয়গুলোকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে হবে কিংবা ওই বিষয়টাকে অস্বীকার করতে হবে অথবা নিজের বিষটাকে মুক্তির একমাত্র শুদ্ধতম পথ মনে করতে হবে। স্বাধীনতা-উত্তর বাঙলাদেশের সাহিত্যে শামসুর রহমান বাচ্চু এক পরিচিত ব্যক্তিত্ব। তিনি মমতাজ আহমেদ শিখু ছদ্মনামে কবিতা রচনার মধ্য দিয়ে লেখালিখিতে প্রবেশ করেন কিন্তু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন ঔপন্যাসিক হিসেবে। শামসুর রহমানের ডাকনাম ছিল কাজল এছাড়া তিনি হুমায়ূন আহমেদ নামে বহুল পরিচিত। প্রত্যেকের নিজের আলাদা আলাদা একটা স্থান আছে।

যেমন গল্পে কর্তা ব্যবসায়ী অন্যদিকে হুমায়ূন লেখক এইটাই তার স্থান,অবস্থান। হুমায়ূন আহমেদ লেখক তাই তিনি এই মত ব্যক্ত করেছেন লেখালিখিটাই বিকশিত হওয়ার মাধ্যম। লেখালিখি বিকশিত হওয়ার একটি মাধ্যম সেটা স্বীকার করতে দ্বিধা করার যৌক্তিকতা পাচ্ছিনা। কিন্তু যুক্তির অভাববোধ করি যখন এটিকে একমাত্র মাধ্যম হিসেবে পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হয়। ছোটতম গল্পটিতে কর্তা নিজের কার্যকে আয়ের একমাত্র পথ মনে করছেন তেমনি হুমায়ূন বিকশিত হওয়ার পথ হিসেবে লেখালিখিকে চিহ্নিত করেছেন।

যে কারনে কর্তা নিজের পেশা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন সেই একই কারনে হুমায়ূন নিজের ধারণা নব্য পাঠকদের আমূলে গেঁথে দিচ্ছেন। কর্তার ভয়ের উৎস নিজের প্রতিষ্ঠানের বিলুপ্তি আর হুমায়ূনের রয়েছে মৃতত্মার মহত্ত্বের দর্শনে ছোট হওয়ার জুজু। অধ্যাপক রাজ্জাক কেন লিখেন নাই সেই ব্যাখ্যায় আহমদ ছফা বলেছেন,''হ্যাঁ,রাজ্জাক সাহেবের যদি চাকুরিবাকুরির ক্ষেত্রে উন্নতি করার আকাঙ্ক্ষা থাকত অবশ্যই তাঁকে লিখতে হতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে যে গবেষণা হয়েছে তার বেশিরভাগই চাকুরির প্রোমোশনের উদ্দেশ্যে লেখা। রাজ্জাক সাহেবের যদি সেই বালাই থাকত লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকসের হ্যারল্ড লাক্সির মৃত্যুর পর তার লেখা থিসিসটা বগলে নিয়ে বিনা ডিগ্রিতে লন্ডন থেকে ফিরে আসতেন না।

রাজ্জাক সাহেব যদি সংসার ধর্ম পালন করতেন,তা হলেও হয়তো জাগতিক উন্নতির প্রয়োজনের তাঁকে কিছু লেখালেখি করতে হতো। '' সত্যবাদী হুমায়ূন সত্যের বুলিতে স্বীকার করেছেন অর্থের জন্য কলমের কালি বিক্রি করছেন,সেই একই হুমায়ূন কিভাবে ভাবতে পারেন সবাই তার মত কলমের কালি বিক্রি করে ভাতের যোগান দিবে! এ যেন নিজের লজ্জা ঢাকতে অন্যের সম্ভ্রমে আঘাত করাটা তার কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নিজেকে দিয়ে বিচার করার মানসিক দীনতার উৎস সম্পর্কে জানার আশা প্রকাশ করছি। হুমায়ূন আহমেদ পাঠকদের আনন্দ দান করেন। বিনিময়ে তিনি প্রাপ্য বুঝে নেন।

অনেকে এটাকে বলে থাকে সস্তা সাহিত্য,অনেকে তাঁকে বলে থাকে ইতিহাস বিকৃতিকারী,আবার অনেকে তার লেখাকে অপন্যাস বলে,বলতেই পারে। যাই হোক সেই আলোচনায় যাওয়ার প্রয়োজন দেখছিনা তবে পাঠকদের হিতে বিকশিত(!) চুটকি বাক্য প্রয়োগ করে বিকৃতিকারীর অপবাদ এড়াতে পারেন না। এই সম্পর্কে কবি আখতারুজ্জামান আজাদ বলেছেন,''আপনি চুটকি টাইপের লেখা লিখতে পছন্দ করেন, লিখুন। কেউ আপনাকে মানা করবে না। ইতিহাসকে দয়া করে চুটকি বানাবেন না।

ইতিহাসকে যারাই চুটকি বানাতে চেয়েছে, ইতিহাস তাদেরই পুঁটকি মেরে দিয়েছে। '' উল্লেখ্য,কবি আখতারুজ্জামান আজাদ হুমায়ূন ভক্ত সমালোচক। পুঁটকি শব্দ দেখে কারও জ্বালা করলে পড়ে নিবেন ব্রাত্য রাইসুর উক্তি,''ইন্টারনেটে সামাজিক ফোরামগুলারে মিডলক্লাস বুদ্ধিজীবী আর তাদের অনুসারীরা ভাইবা নিছে সোশ্যাল ক্লাব। এইখানে মধ্যবিত্ত চলবে কিন্তু ছোটলোক চলবে না। এমনকি ভাষা আকারেও এরা ছোটলোকরে এইখানে ঢুকতে দিবে না।

তো যে ছোটলোক তার ডেইলি লাইফে সপারিবারিক 'পুটকি' বইলা অভ্যস্ত তারে বুদ্ধিজীবীরা বলাবে 'গুহ্যদ্বার'। তো এই গুহ্যদ্বার-বুদ্ধিজীবীদের থিকা সাবধান থাকবেন, ডিয়ার ব্লগারবৃন্দ। '' বিকশিত হতে হলে রাজ্জাক স্যারকে বইপত্র লিখতে হত। যেহেতু তিনি লিখেননাই সেহেতু তিনি বিকশিত নন। এই যুক্তিতে হুমায়ূন দুইদিন পর নতুন 'আমি আমি আমি আমি' গ্রন্থে বলতে পারেন সক্রেটিস লিখেননাই সেহেতু তিনি বিকশিত না...পাঠক অবাক হবেন না,যুক্তি বলে কথা ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।