আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হায় সংবাদপত্র ১

........................... আমার হাতে এই মূহুর্তে ২ টি সংবাদপত্র রয়েছে। একটির নাম বাংলাদেশ প্রতিদিন, আরেকটির নাম যুগান্তর। গতকাল বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সাহেব 'মিট দ্য রিপোর্টার্স' নামক অনুষ্ঠানে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু কথা বলেন, যা নিয়ে উভয় সংবাদপত্র রিপোর্ট করেছে। আমার মতো সাধারন মানুষ/ আম জনতা যারা আছেন, তারা দেশের অবস্থা, রাজনীতির অবস্থা, নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন দলের অবস্থান জানতে মূলত সংবাদপত্রের উপর নির্ভর করি, করতে হয়। যদিও টিভি মিডিয়া এখন বেশ 'ফ্লারিশ্‌ড', তার পরেও বাসায় স্টার প্লাস নামক এক যন্ত্রনার কারণে দেশীয় চ্যানেলগুলো খুব একটা দেখার সৌভাগ্য হয় না।

সকালবেলা চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সংবাদপত্র না পড়লে দিনটা মাটি হয়ে যায়। তো সেই রিপোর্টের দিকে নজর দেয়া যাক, নিজস্ব প্রতিবেদকের বরাত দিয়ে 'বাংলাদেশ প্রতিদিন' শিরোনাম করেছে, 'তৃতীয় শক্তি এলে প্রতিহত করবে বিএনপি'। ভাল কথা, টিপিক্যাল বাংলাদেশী রাজনৈতিক নেতাদের ডায়লগ, পড়তে পড়তে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। নতুন কেউ দেশের হাল ধরুক, এটা আ.লীগ, বি.এন.পি. কেউ চায়না। চমকে গেলাম কিছুক্ষন পরে, 'যুগান্তর' পত্রিকা হাতে নিয়ে যখন দেখলাম তারা রিপোর্ট টির শিরোনাম দিয়েছে, 'রাজনৈতিক তৃতীয় শক্তি ক্ষমতায় এলে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো, মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে ফখরুল'।

কি ব্যাপার বুঝতে বেশ সময় লাগলো। আমার জায়গায় ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সয়ং থাকলেও চমকে যেতেন নিশ্চত। তিনি আসলে সম্মেলনে কি বলেছেন, তা নিয়ে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়তেন। এই তো হচ্ছে আসলে দেশের সংবাদপত্র গুলোয়। সঠিক সংবাদ পরিবেশন নয়, বরং সংবাদের বিকৃতির মাধ্যমে কাটতি বাড়ানোই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।

এইসব সাংবাদিক নামের কলঙ্কগুলোর মানসিক সুস্থতা নিয়ে আমি সন্দিহান। কয়েকদিন আগেই তারা বিকৃত সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের একজন সনামধন্য ব্যক্তত্বকে নাজেহাল করলো। এভাবেই ছোট বড় সব সংবাদেই থাকে কল্পনার আঁচড়, যা সত্য থেকে বিচ্যুত, ফলে আমার মত আম জনতারা হচ্ছেন বিভ্রান্ত। এইসব অর্ধশিক্ষিত, থার্ড ক্লাস লোকগুলো, সাংবাদিক হওয়ার আগ পর্যন্ত যারা পাড়ায় মাস্তানি করা আর মেয়েদের স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে ইভটিজিং করা ছাড়া আর কিছুর যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, তাদেরই হাতে তুলে দেয়া হয়েছে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্ত্র, যার নাম 'কলম'। কোন বাছবিচারের বালাই নেই, মানদন্ড নেই, যে যেভাবে পারছে সাংবাদিক হচ্ছে, আর কলম হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে দেশের সম্ভ্রান্ত লোকজনের উপর।

আপনারা দেখবেন, সংবাদপত্রগুলোয় এখন সবচেয়ে বেশী লেখা হয় দেশের তথা বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত দুইটি পেশার লোকদের বিরুদ্ধে, একটি হল 'শিক্ষক', আরেকটি হল 'ডাক্তার'। যা না তা বানিয়ে এই দুই পেশার লোকদের হেয় করার মিশনে নেমেছে উন্মাদগুলো। এখন মাস্তানরা আর নেতা হতে চায় না, তাতে জীবনের রিস্ক অনেক বেশী, এরচেয়ে সবাই সাংবাদিক হয়ে যায়। সাংবাদিক রা এখন দেশের সবচেয়ে বড় মাস্তান গোষ্ঠী, নেতারাও যাদের ভয়ে প্রকম্পিত। হায় আমাদের বাংলাদেশ, হায় আমাদের সংবাদপত্র! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।