আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যেঘেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের সমাধান কোথায়?

আমি আছি...কাছাকাছি ছোটবেলায় সেবা প্রকাশনীর কল্যানে সেই তিন গোয়েন্দা সিরিজের বই থেকে রহস্যের সাথে পরিচয়। তারপর নিজে নিজে গোয়েন্দা বনে যাওয়া এবং কিছু মামলী ব্যাপার বিদঘুটে রহস্যময় ঘটনা মনে করে সমাধান করার চেষ্টা, অবশেষে সফল হওয়া এগুলো রহস্যপ্রেমীদের জীবনে অতি সাধারন বিষয়। কোন বিষয়ে যদি তারা রহস্যের গন্ধ না পায় তবে নাকের কাজটায়ই বা কী! রহস্যপ্রেমীদের রহস্যের সন্ধান দিতে তৈরী হয়েছে আরো একটি রহস্যময় ঘটনা এবং এলাকা। যদিও এ রহস্যের শুরু আজ নয়। ১৯৭৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর এটি প্রথম রহস্যের তালিকায় স্থান করে নেয়।

ক্যারেবিয়ান সমুদ্রে অবস্থিত ত্রিভূজাকৃতি এই এলাকার নাম বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল। এ এলাকাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গল্প,ঘটনা এমনকি চলচ্চিত্রও। মূলত ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাকে ভিত্তি করে রহস্যের বেড়াজালে আরো ভালভাবে মুড়িয়ে তৈরি করা হয় এসকল গল্প-উপন্যাস,প্রামান্যচিত্র-চলচ্চিত্র। এ জায়গাটি রহস্যজনক কারণ কোন এক অদ্ভূত কারণে এ এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় জাহাজ,উড়োজাহাজ না বলে কয়ে হঠাত্ নিখোঁজ হয়ে যায়। কিছু কিছু জাহাজ-উড়োজাহাজ ছিল যাত্রী বোঝাই।

সমস্ত যাত্রীসহ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া এসকল যানবাহন কোথায় যায়, কি হয় তাদের, তারা কি মারা যায় নাকি চলে যায় অন্যকোন জগতে। এমন হাজারো প্রশ্ন যার কোন মনভরা উত্তর পাওয়া যায় নি আজও। বারমুডা ত্রিভূজের তিন প্রান্তের এক প্রান্ত ছুঁয়েছে বারমুডায়, এক প্রান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মায়ামি এবং আরেকটি প্রান্ত স্পর্শ করেছে পুয়োর্তরিকোয় সাজ জুয়ান। রহস্যঘেরা এ এলাকার রহস্য উন্মোচন করতে নিরলস কাজ করেছেন অনেক বিজ্ঞানী,গবেষক,সাংবাদিক। সর্বপ্রথম অপরিচিত এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল আলোচনায় আসে ১৯৫০ সালের সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখে।

অ্যসোসিয়েট প্রেসের এক প্রবন্ধে সাংবাদিক ই ভি ডব্লিউ জোনস সর্বপ্রথম বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের অস্বাভাবিক ঘটনার বর্ননা দিয়ে এটিকে নজরে আনেন। তার দুইবছর পর ১৯৫২সালে "ফেট ম্যাগাজিন" এর জর্ড এক্স সান্ড লিখেন "সি মিসট্রি এট আওয়ার ব্যাক ডোর"। এই নিবন্ধে তিনি দাবি করেন, ১৯৪৫ সালে ফ্লাইট-১৯ নামের মার্কিন নৌবাহীনির পাঁচটি বোমারু বিমানের একটি বহর উধাও হয়ে গেছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে। এই বহর থেকে শেষ বার্তায় বলা হয়েছিল, "সবকিছুই খুব অদ্ভূত লাগছে। আমরা জানি না কোন দিক পশ্চিম।

সাগরকেও স্বাভাবিক দেখাচ্ছে না। পানি কোথাও সাদা কোথাও সবুজ। আমাদের মনে হচ্ছে আমরা..."। এরপর একের পর এক খবর ও ঘটনা ব্যাপারটিকে আরো জটিল করে তুলেছে। অন্যান্য অনেক দূর্ঘটনার মধ্যে আস্ত ডিসি বিমান, যাত্রীবাহী জাহাজ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনাও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।

যদি পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন নানান যুক্তি, গবেষনা করে বের করেছেন নানান অর্থ। অ্যরিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির গ্রন্থাগারিক লরেন্স ডেভিড কাসচি ১৯৭৫ সালে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যভেদ করেন বলে দাবী করেন। তিনি প্রকাশ করেন, "দ্যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল মিসট্রি : সলভড" নামের আলোচিত একটি বই। কাসচি বলেন, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে নিয়ে রচিত এবং প্রচলিত হয়েছে নানান গালগল্প। একটি সাধারন ব্যাপারকে ঘোলাটে করে অহেতুক আরো রহস্যময় করা হয়েছে।

এটি কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তার যুক্তিগুলো ছিল এরকম- ১. বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে নিরুদ্দেশ হওয়া জাহাজ-উড়োজাহাজ অন্যান্যে এলাকার চেয়ে তুলনামূলকভাবে খুব বেশী নয়। ২. সমুদ্রের ঐ বিশেষ এলাকায় প্রায়ই ট্রপিক্যাল ঝড় বিশেষ রূপ নেয়। কাজেই ঘূর্নিঝড়ে জলযান নিখোঁজ হতেই পারে। ৩. নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া জাহাজ-উড়োজাহাজের সংখ্যা যতটা না তার চেয়ে বেশী দাবী করা হয়েছে।

সেই সাথে রিপোর্ট করা হয়েছে কিন্তু ফিরে এলে তা আর আলোচনায় আসে নি। ৪. কোন কোন সময় নিরুদ্দেশ ঘটনাই ঘটেনি। বলা হয়েছে ১৯৩৭ সালে একটি প্লেন ক্র্যাশ করেছে। আসলে ঘটনা বানোয়াট। ৫. আসলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য "প্রস্তুতকৃত রহস্য"।

যা না তাকে আরো রঙচঙিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। কাসচির এমন যুক্তি অনেকের কাছেই গ্রহনযোগ্য হয় নি। তারা এই রহস্যের একটি মনভরা সমাধান চায়। হয়তো তারা চায় সত্যিই এতে রহস্য আছে যেটার রূপ ভূতুরে বা অস্বাভাবিক কোন কিছু। যার সমাধান হবে গা ছমছম করা যুক্তিতে ভরপুর।

রহস্য প্রেমীরা এখনো মানতে রাজি নয় যে শুধুমাত্র লোকমুখে এটি রহস্যে টুইটুম্বর। তাদের ধারনা এর পিছনে আছে অন্য কোন সত্য। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।