আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দশমাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ১০.১৪%

২০১২-১৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিতে করে মোট ২১৭৮ কোটি ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৯৭৭ কোটি ডলার।
তবে গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও আলোচ্য সময়ে রপ্তানি আয়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২২৫৩ কোটি ডলারের চেয়ে ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ কম।
মঙ্গলবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত রপ্তানি সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুধু চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ২০৮ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি।
তবে চলতি এপ্রিলের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ কম।

 
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সামগ্রিক রপ্তানি ইতিবাচক। বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা গেলে এবং একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো দূর করা সম্ভব হলে রপ্তানি আরো বাড়বে। ”
এসময়ে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের নীটওয়্যার খাত থেকে ৮৩৮ কোটি ১৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। ওই সময়ে ৭৬৯ কোটি ডলারের নীট পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।
তৈরি পোশাকের ওভেন খাত থেকে পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৮৯২ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি।


দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম বড় খাত হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিতে আয় কমেছে ১৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এর মধ্যে হিমায়িত মাছ রপ্তানিতে আয় কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ, চিংড়িতে কমেছে প্রায় ৯ শতাংশ এবং কাঁচা পাটে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে।
চা ও তামাকের রপ্তানিও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। জুলাই-এপ্রিল সময়ে ২০ লাখ ৪ হাজার ডলারের চা রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৪০ শতাংশ কম।
এসময় তামাক রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৬ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম।


চলতি অর্থবছরে দুই হাজার আটশো কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার।
আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশ থেকে যেসব পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-শাক-সবজি, শুকনো খাবার, ফল, মসলা, পেট্রোলিয়াম বাই প্রডাক্ট, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, প্রসাধনী, পিভিসি ব্যাগ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কাঠ, হস্তশিল্প, কাগজ ও কাগজ পণ্য, কাগজ, সুতা, পাটের সুতা, পাটের বস্তা ও ব্যাগ, কার্পেট, সিরামিক পণ্য, তামার তার, ফার্নিচার ও কম্পিউটার সার্ভিস।  
অপরদিকে রপ্তানি কমার তালিকায় রয়েছে যেসব পণ্য তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- কাট ফ্লাওয়ার, সিমেন্ট, কেমিক্যাল ফার্টিলাইজার, প্লাস্টিক পণ্য, রাবার, মুদ্রিত পণ্য, উল ও উলের পণ্য, বিষেশায়িত টেক্সটাইল, টেরি টাওয়েল, হোম টেক্সাটাইল, টুপি, গ্লাস, জাহাজ ও বোট ইত্যাদি।  
গত বছরের নভেম্বরে আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনস নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১২ জন শ্রমিক মারা যাওয়ার পরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
কিন্তু রপ্তানির পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, তাজরীনের ঘটনা এখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও রপ্তানি আয় কমেনি।


সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ড বা সাভারের রানা প্লাজা ধস পোশাক খাতে যতোটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে রাজনৈতিক অস্থিরতা।
এ বিষয়ে নীট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “বাংলাদেশের বাজার সহজে হাতছাড়া হবে না। কারণ চীন এ খাত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। চীনের বিশাল বাজার নেওয়ার মত দক্ষতা অন্য কারোর নেই। ”
তাজরীন বা রানা প্লাজার ঘটনা এই মুহূর্তে ব্যবসাকে প্রভাবিত করেনি, তবে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যেসব প্রশ্ন উঠেছে তার যথাযথ সমাধান না হলে আগামীতে প্রভাবব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.