আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল্লাহর নামে হানাহানি ! স্রষ্টার নামে খুনাখুনি !!

হাসান নাঈম বলেছেন: "পৃথিবীতে সবচে বেশি মানুষ নিহত হয়েছে কার নামে? মহান সৃষ্টিকর্তার নামে" দু:খিত মানতে পারলাম না। এটা নাস্তিকদের একটা জনপ্রিয় প্রচারনা মাত্র। শুধুমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যত মানুষ নিহত/ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা অন্য সকল যুদ্ধের নিহতের যোগফলের চেয়ে খুব একটা কম হবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ধর্মের জন্য বা ধর্মের নামে হয় নাই। রুশ বিপ্লব ও বিপ্লব পরবর্তি প্রতিবিপ্লব দমনে সত্তর লাখেরমত মানুষ নিহত হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়।

সেটা স্রস্টার নামে হয় নাই - বরং স্রস্টা অস্বীকারকারীদের দ্বারাই হয়েছিল। ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে বরং দেখা যাবে ষোড়শ শতাব্দির পর যখন বিশ্ব রাজনীতি ও জীবনাচরণ থেকে ধর্মের প্রভাব কমতে শুরু করেছে তখন থেকেই বিশ্বব্যাপি পুজিবাদী আগ্রাসন, উপনিবেশ, সংঘাত, যুদ্ধ বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসাথে ভোগবাদী নীতির কারণে পুজির শোষণ, পরিবেশ দুষণ ও প্রাকৃতিক বিপর্য়য়ে প্রতিনিয়ত বিশ্বব্যাপী যত মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তার কিছুই ধর্ম বা স্রস্টার নামে হচ্ছে না। বরং পৃথিবীকে অনিবার্য বিপর্যয় ও সুনিশ্চিত ধ্বংস থেকে রক্ষার জন্য ব্যাক্তি সামাজ ও রাস্ট্রীয় ব্যাবস্থায় স্রস্টাকে পুনরায় বিবেচনায় আনার প্রয়োজনীয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ShusthoChinta বলেছেন: "স্রষ্টার নামে সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝড়েছে" পুরা একটা ফাউল ডায়ালগ,পুরাই প্রোপাগান্ডা! প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রধানত রাজ্যবিস্তার এবং উগ্র জাতীয়তাবোধের কারণে রক্ত ঝড়েছে! হুন,গ্রীক,স্পার্টান,পারসিয়ান,রোমান এরাই প্রাচীনকালে সর্বাধিক যুদ্ধ করেছে এবং সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝড়িয়েছে,এদের কেউ কি ধর্মের জন্য যুদ্ধ করেছে? স্রষ্টার জন্য রক্ত ঝড়িয়েছে? আর মধ্যযুগের কিছু ক্রুসেড বাদ দিয়ে খৃষ্টান এবং মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের রাজা বাদশারা জাস্ট রাজ্যবিস্তারের নেশায় যুদ্ধ করেছে! মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝড়েছে আধুনিক যুগে,অথচ এই যুগে যুদ্ধের ক্ষেত্রে ধর্ম কোন ফ্যাক্টর ই নয়! লক্ষ লক্ষ আমেরিকান,অষ্ট্রেলিয়ান আর আফ্রিকান আদিবাসিদের নির্বিচারে কচুকাটা করেছে ইউরোপীয়ানরা,কিন্তু এর পেছনে কোন ধর্মীয় উদ্দেশ্য ছিল না,সৃষ্টিকর্তার জন্য এসব বলি হয়নি! প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কোটি কোটি মানুষের রক্ত ঝড়ার পেছনে কোন ধর্ম ছিল না! সোভিয়েত ইউনিয়ন আর চীনে সমাজতন্ত্রের নামে লাখ লাখ মানুষ খুনের পেছনে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের কোন উদ্দেশ্য ছিল না! তারপরও বলবেন সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝড়েছে মহান সৃষ্টিকর্তার নামে? নষ্ট ছেলে বলেছেন:[/sb] ২য় বিশ্বযুদ্ধে মারা গেছে প্রায় ৪-৭.২ কোটি (পৃথিবীর জনসংখ্যার ১.৭% - ৩.১%) মঙ্গলদের জন্য মারা গেছে প্রায় ৩-৬ কোটি (৭.৫% - ১৭.১%) চীনের মিং রাজাদের জন্য মারা গেছে প্রায় ৩ কোটি(৬.৭%) চীনের কিং রাজাদের জন্য মারা গেছে প্রায় ২.৫ কোটি(৪.৮%) চীনের ডানগান বিদ্রোহে মারা গেছে ২-১০ কোটি (১.৬%-৮%) এইযুদ্ধ গুলা সৃষ্টিকর্তার নামে হইছে? বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ খুন হয় ভারতে, প্রতিবছরে, ৪২০০০+ ব্রাজিলে ৪০০০০+ ম্যাক্সিকো ২৫০০০+ ইথিওপিয়া ২০০০০+ ইন্দোনেশিয়া ১৮০০০+ নাইজেরিয়া ১৮০০০+ সাউথ আফ্রিকা ১৫০০০+ আমেরিকা ১৪০০০+ বাংলাদেশে প্রায় ৪০০০ এইগুলা কি সৃষ্টিকর্তার নামে খুন হয়? দেখি তাই বলি বলেছেন: যতদূর জানি দুই দুইটা বিশ্বযুদ্ধ ধর্মের নামে বা ধর্মের কারণে ঘটেনি।

আমরা জানি সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে স্ট্যালিন কী করেছিলেন। আমরা জানি তিয়েন আনমেন স্কোয়ারের কাহিনী। আমরা জানি রাশিয়া আফগানিস্তানে কি করেছিল। ইরান ইরাক যুদ্ধ হয়েছিল তেলের জন্য। এমনকি লাদেনকে উপলক্ষ্য করে শুরু করলেও ইরাকে আমেরিকা সৈন্য পাঠিয়েছে তেলের কর্তৃত্ব নেয়ার জন্য।

বিপরীতে ধর্মের কারণে যুদ্ধ খুব সীমিত তো বটেই এর কারণে মৃত্যুর হার এগুলোর তুলনায় কিছুই না। .................................................... পৃথিবীর ইতিহাসের সেরা কয়েকটি যুদ্ধের কারণ ধর্ম ছিল না। সেরা কয়েকটি গণহত্যার বেশীরভাগই ধর্মের কারণে না। যেগুলোর বাহ্যিক কারণ ধর্ম- তার আড়ালেও রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ। যেমন আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হলেও তাদের মূল টার্গেট ছিল এ দেশে শোষণ অব্যাহত রাখা।

এমন উদাহরণ আরো অনেক দেয়া যাবে। তবু এই বহুল ব্যবহৃত গোয়েবলসীয় প্রচারণা কেন কিছুতেই বুঝতে পারছি না। একটা পোষ্টে দেখলাম দাবী করা হচ্ছে স্রষ্টার নামেই নাকি সবচেয়ে বেশী খুনাখুনি হয়েছে, জবাবে সেই পোষ্টের কমেন্টগুলো ভাল লাগল তাই এক করে দিলাম ! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.