আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরথম আলুতে আমগো শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যারের রাজনীতি লইয়া চিন্তাভাবনা দেইক্ষা আমি ব্রাট মুগ্ধ।

...ঘুম সকল রোগের মহৌষধ... একটা কথা অনেক ভাবেই বলা যায়। একটা বুদ্ধিমান পাব্লিকে নিজের বা অন্য কার স্বার্থ সিদ্ধির লাইগা ইচ্ছা করলে একটা পানির মত শহজ সরল কথারে অনেক ঘুরায়া পেঁচাইয়া জটিল কইরা কইতে পারে, কিন্তু আসল কথা টা আরেকটা বুদ্ধিমান পাবলিকের বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু গত দুইদিন ধইরা পরথম আলুতে আমাগো শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যারের ইনিয়ে বিনিয়ে বলা কিছু কথাবার্তার মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশে খুব কম পাবলিকই আছে যারা বুঝতে পারে নাই। দুঃখের বিষয় হইল, আমাগ যে সব বুঝতে আর বাকি নাই হেইডা আমাগো স্যার আজকে বহুত বছর পরেও এখনও বুঝবার পারে নাই। স্যার, আগে কিছু সত্য কথা কইয়া লই।

আপনার স্যার কলম দুইটা। একটা কলাম লেখার আইগা, প্রতিবাদ জানানর লাইগা, আরেকটা হইল পলাপাইনের লাইগা সায়েন্স ফিকশন আর গল্পলেখার লাইগা। আপনার দুইটা কলমই স্যার বহুত দামি, ওই কলম দিয়া কিছু একটা লেখলেই পাবলিকে হুমড়ি খাইয়া আইয়া পড়ে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হইল কি জানেন? যখন এই দেশে একটা নির্দিষ্ট সরকার গদিতে বইয়া থাকে, তখন আপনার প্রথম কলমের দৌড় দেখলে মাথা খারাপ হইয়া যায়। কিন্তু আবার যখন আরেকটা সরকার, যারা “জনগনের” (পড়তে হবে “আপনার”) আশা আকাঙ্খার প্রতীক, তখন ওই কলমটা আপনে আলমারিতে তুইল্লা রাখেন, মাঝে মাঝে বাইর করেন হেগ “গোল্ডেন এ+” দেওনের লাইগা।

স্যার, এই যে এইদেশে একটা ছাত্র সংগঠন আছে (পলাপাইন আসলেই কি মনে কইরা ওইখানে আছে হেইডা আমি আজকেও বুঝবার পারি নাই) হেগ লাইগা আপনার চিন্তার সীমা নাই, ঘিন্নার শেষ নাই। এবং আমরা সবাই মানি এটা ঠিক আছে। কিন্তু স্যার, যখন আপনার পেয়ারের সরকারের পেয়ারের কুত্তালীগ যখন জগন্নাথে, জাহাঙ্গীরনগরে নিরীহ পলাপাইনরে পিডায়া বেড়ায়, ঢাকা ভার্সিটিতে নিরীহ মাইয়ারে ধরশন করে, আবু বকরের মত নিরীহ পোলারে (আপনার গল্পের একটা চরিত্রের মত পোলা, ছুটিতে বাড়িত গিয়া ধান কাইটা পরার খরচ চালায়) খুন করে, রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে শিবিরের কিছু পোলারে টুকরা টুকরা কইরা ম্যানহলের ভিতরে হান্দায়া রাখে তখন আপনে স্যার একটা কথাও কন না কিল্লেইগা? আপনে না বিরাট মানবতাবাদী? নাকি স্যার আপনার মানবতাবাদ খালি শিবিরে আকাম করলেই উথলায়া পড়ে? আবার শিবিরে যখন এডি করে তখন তো স্যার কলম আপনার আর থামেই না! গত বিএনপি সরকারের আমলে ছাত্রদলের নানা আকামের বিরুদ্ধে আপনে বহুত কলাম লেখসেন, সেই সময় ওইসব কলাম পইড়া রক্ত গরম হইয়া উঠত স্যার। কিন্তু আজকে বুঝি, অইগুলা স্যার আপনে “সময়ের প্রয়োজনে” না, লেখসেন নিজের দলের প্রয়োজনে। মানবতাবাদ না স্যার, আপনার লেখা গুলা আছিল সুবিধাবাদ।

নারীজাতির মুক্তি লইয়া চিন্তার তো শেষ নাই আপনার স্যার, কিন্তু কই আছিলেন স্যার যখন ভিকারুন্নেসার ছাত্রীরা আপনারে ধরল পরিমলের ব্যাপারটা দেশের কাছে তুইলা ধইরা কিছু একটা কইতে? যাই হউক স্যার, আসল প্রসঙ্গে আসি। এই দেশের কপাল এমুনি খারাপ, যে আর কোন দল বা কোন মানুষের উপর আর এই দেশের পাবলিকের কুন ভরসা নাই। জি স্যার, আপ্নের পেয়ারের দল যখন গত নির্বাচনে ক্ষমতায় আইল, তখন দেশের মানুষের আশা ভরসা আছিল অনেক। আম্লিগ প্রতিশ্রুতি অনেক দিসে, সেই সাথে বিএনপি সরকার দুর্নীতিতে যেই রেকর্ড দেখাইসে তাতে আম্লিগের জয়ী হওয়াটাই স্বাভাবিক আছিল। ঠিক আছে হেরা ক্ষমতায় আইসে ভালা কথা।

কিন্তু এই পর্যন্ত স্যার একটা কাম দেখান যার লাইগা হেরা স্যার “গোল্ডেন এ+” কি, মিনিমাম কইরা হইলেও “ডি” পাওয়ার দাবি রাখে। স্যার হেরা কইসিল হেরা চাইলের দাম কমাইব? কমাইসে, স্যার? স্যার হেরা কইসিল বাংলাদেশ নাকি ডিজিটাল করব, কিন্তু আজ পর্যন্ত কয়েকটা রিকশাতে মোটর লাগান ছাড়া এই দেশের ডিজিটাল হওয়ার কুন নিশানা আমরা দেখি নাই স্যার। আর সত্যি কথা হইল প্রযুক্তির বেশির ভাগ চেঞ্জ এম্নিতেই হয়, এতে সরকারের হাত তেমন একটা থাকে না। বিএনপি সরকারের প্রথম দিকে দেশে আছিল আমপাড়া মোবাইল ফোন, শেষের দিকে আইসে ক্যামরা ফোন, হেইডাও কি হেগো ক্রেডিট? ঠিক আছে বাদ দিলাম। হেরা কইসে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভালা করব (আসলে কইসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিব, এজিবি কলনির মাঠে আমি নিজে এই ওয়াদা হুনছি), কিন্তু আজকে এই যে এই লেখাটা লিখতাসি স্যার এখনও আমার ল্যাপটপের চার্জ খরচ কইরা।

রাইতের বেলায় কারেন্ট জাওনের চোটে ঘুমাইতে পারি না স্যার। আজকে পরথম আলুতে দেখলাম হেরা মোলায়েম কইরা কইসে “বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আরও অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে”। শুইনা দুঃখের চোটে হাসি আইয়া পরসে। কই যামু? অসহনীয় নাকি “হয়ে উঠতে পারে”, তার মানে এখনও সহনীয়। রাস্তা ঘাটের অবস্থা দেখলে দুই চোখ দিয়া ওয়াটার নামে।

এর নাম নাকি রাস্তা! আর আইনশৃঙ্খলার কথায় গেলে তো আর কথা শেষ হইব না। বিডিআর বিদ্রোহ, আবু বকর, মিলন, লিমন, ট্রানজিট, সাগর-রুনি, ইলিয়াস, আমিনবাজার, চেঙ্গের খাল, খুনের আসামিরে নিঃশর্ত ক্ষমা, চোরঞ্জিত, আবুইল্লা ইত্যাদি ইত্যাদি যা কইতে গেলে লিস্ট আর শেষ হইব না। এই দেশে এখন মানুষে খালি চিল্লায় “বিদ্যুৎ নাই, পানি নাই, খাওন নাই, থাকার জায়গা নাই, চাকরি নাই, শান্তি নাই” আর আপনে বইয়া বইয়া আম্লিগের উদ্দেশ্যে গোল্ডেন এ+ প্রসব করেন। হাউ ফানি! যাই হোক, আপনে স্যার কইসেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হইলে আপনি হেগ গোল্ডেন এ+ দিবেন। ভালা কথা স্যার।

এই কাম টা করলেই তাদের এত ক্রেডিট কেন দিতে হইব এই প্রসঙ্গে নাইবা গেলাম। বিচারের নামে স্যার সেই ডায়ালগ ছারতাসেন কিন্তু আসলে কি কাম করতাসেন হেই দিকে যাই একটু। “যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে জাফর ইকবালের আরেকটি মন্তব্য, "যাদের ধরা হয়েছে আমাদের প্রজন্ম তাদের সবাইকে চেনে, আমাদের চোখের সামনে একাত্তরে তারা সেই ভয়ংকর কাজগুলো করেছে,..." অর্থাৎ নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদীরা জাফর ইকবালদের সামনেই অপরাধ করেছে। তাহলে তো এই বিচার নিয়ে সরকারের এত চিন্তা করার কোন কারণ ছিলনা। যখন রাজাকারের নাতি জাফর ইকবালই অপরাধের চাক্ষুস সাক্ষী তখন তিনি সাক্ষ্য দিতে ট্রাইবুনালে যাচ্ছেন না কেন? এমনকি সাঈদীর বিরুদ্ধে জাফর ইকবালের পিতার হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

সেখানে জাফর ইকবালকে সাক্ষী করা হয়েছিল। কিন্তু জাফর ইকবাল সাক্ষ্য দিতে যাননি। শেষ পর্যন্ত ট্রাইবুনাল তাকে পলাতক ঘোষণা করেছে। এই হলো চাক্ষুস সাক্ষী জাফর ইকবালের অবস্থা। নিজের পিতার হত্যার বিষয়েও সাক্ষ্য দিতে যায় না।

আর বলে কিনা, "যদি দেখা যায় বিচারকাজে অবহেলার কারণে শেষ পর্যন্ত ফাঁকফোকর দিয়ে এই যুদ্ধাপরাধীগুলো বের হয়ে গেছে তাহলে আমরা বুঝব ঠিকঠিক ভাবে বিচার হয়নি। " অর্থাৎ অপরাধ থাক বা না থাক, শাস্তি দিতেই হবে! না দিলে বিচার ঠিকঠাক হয়নি! হায়রে বুদ্ধিপরজীবি! বিচার মানি তালগাছটি কিন্তু জাফর ইকবালের! এরপর বিচারকাজে অবহেলা! জাফর ইকবালকে সাক্ষ্য দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি যান নি। এর মাধ্যম তো জাফর ইকবাল নিজেই চুড়ান্ত অবহেলা করেছে। এরপর বাকী কারো অবহেলা নিয়ে কথা বলার অধিকার কি তিনি রাখেন? কেন তিনি সাক্ষী দিতে যান নি, সে বিষয়টিও জাতিকে এ পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

এতই যদি যুদ্ধাপরাধের বিচার চান, দেখি সাহস থাকলে ট্রাইবুনালে গিয়ে বলুন আপনার পিতার হত্যাকারী কে? সাঈদী না আপনার নিজের রাজাকার নানা? নৈতিক শক্তি থাকলে ট্রাইবুনালে গিয়ে কিছু বলুন। এত কষ্ট করে পত্রিকায় কলাম লিখতে পারেন আর ট্রাইবুনালে গিয়ে ৩০মিনিট কথা বলতে পারেন না? তখন দেখা যাবে রাজাকারের নাতি জাফর ইকবালের ঝুলিতে আসলে কি আছে...! নাকি ৪০বছর ধরে যে মিথ্যাগুলো শুনিয়ে যাচ্ছেন তার মূখোশ খুলে যাবে বলেই যাচ্ছেন না?” মূল লেখার লিঙ্কঃ Click This Link আগেই কইয়া দিলাম এই লেখকের সব কথারে আমি সাপোর্ট করি না। কিন্তু এই লেখা থেইকা আপনার নামে যেই অভিযোগ গুলা আসছে তা আমি পুরাপুরি বিশ্বাস করি। একটা জিনিশ আমার মাথায় কম খেলে, হেইডা হইল এই হরতালে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেতাদের নামে অভিযোগপত্র মাত্র ১১ দিনে দেওয়া হইল। কিন্তু আজকে পর্যন্ত এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কয় বছর হইতে চলল তার কোন হিসাব আছে স্যার আপনার কাছে? আপনার কি মনে হয় না যে সাহারা খাতুনের সরকার “৪৮ ঘণ্টার” মধ্যে বাংলাদেশের যে কোন সমস্যার সমাধান করতে পারে তাদের জন্য যুদ্ধাপরাধের এই সামান্য বিচার করতে এতদিন লাগার কথা না? স্যার, একটা কথা আপনার সত্য।

আজকাল রাজনীতির উদ্দেশ্য আর মানুষের ভালর জন্য না, এখন উদ্দেশ্য একটাই সেটা হইল ভোট। যুদ্ধাপরাধের বিচার করাটা আছিল আম্লিগের ক্ষমতায় আসার একটা ইস্যু। এই ইস্যু দিয়া তারা এইবার ক্ষমতায় আইসে। আইয়া লোক দেখানর লাইগা কয়েকটারে ধইরা প্রহসনও শুরু করসে। এই মেয়াদে তাদের এর বেশি কিছু করার ইচ্ছা আছে বইলা কোন নিশানা দেখা যায়না।

এখন যদি আপনার আম্লিগ এই বিচার করে ফেলে, পরবর্তীতে নির্বাচনে আসার জন্য তাদের ইস্যুটা হবে কি? অন্য সকল ইস্যুতেই তারা সাফল্যের সহিত ফেইল মারসে। তারা নিজেরাও জানে দেশের মানুষ তাদের এখন আর “বিশেষ বিবেচনা” তেও “ডি” দিতে রাজি না। আর আপনে সেই সব কিছু উপেক্ষা কইরা খালি এই সেক্টরে তারা কিছু একটা করলেই তাগ মাথায় তুইল্লা নাচার প্রতিশ্রুতি দিয়া দিসেন। আহা কি আনন্দ! আপ্নের দুইটা পলামাইয়া বিদেশে পড়ে, আপনি গাড়িতে কইরা কামে যান, আপনে আমাগ বাপের মত না বাজার থেইকা দুই টেকা বেশি দিয়া চাইল কিনতে হইলে মন খারাপ কইরা বাসায় আসন লাগে। আপনার কাছে হয়ত ইস্যু এই একটাই হইতে পারে।

আমরাও চাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হউক, আমরা চাই এই দায় শেষ করতে। কিন্ত আমাগ মত নরমাল পাব্লিক ভাল মত খাইতেও চায়, ভালমত পড়তেও চায়। আমরা একটু পানি চাই, একটু বিদ্যুৎ চাই, এত কম এবং বেসিক চাওয়াটা চাইয়াও আমরা কিছুই পাই না। আমগো এত চাহিদা, আমগো এত দুঃখ না দেইখা আপনে কেমনে কি অধিকারে এই সরকারকে গোল্ডেন এ+ দেওয়ার কথা বলেন আমার মাথায় ঢুকে না স্যার। যেই কাজ করার কোন সদিচ্ছা তাগো আছে বইলা মনে হয় না।

যাই হোক স্যার, এত চিন্তা কইরেন না। আম্লিগ এখনও আছে স্যার দুই বছর। হেরা যাওনের পরে আবার হয়ত আরেক বাটপার আইব, আমগো ভাগ্যের কক্ষনো কোন চেঞ্জ হইব না। কিন্তু তাই বইলা ভাইবেন না স্যার আমগো মুখ বন্ধ হইয়া গেছে, মাথা আর কাম করতাছে না। কে কোন স্বার্থে কার পক্ষে কথা বলে সেইটা এই দেশের মানুষের কাছে দিবালোকের মতই ক্লিয়ার, স্যার।

দেশের মানুশরে আপনারা আর কতদিন ছাগল ভাববেন, কন তো? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।