আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সমাজে ও রাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া নিত্যদিনের অপরাধের জন্য ১০০% ভাগ দায়ী পুলিশ। কেননা এদেরই ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা নির্বিবাদে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে অন্যদিকে সাধারণ লোক হয় পুলিশী হয়রানির শিকার।

Prothom Alo ঢাকা, বৃহস্পতিবার,২৪ মে ২০১২, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯, ২ রজব ১৪৩৩ হোম বিশাল বাংলা ‘মা-বাবা, বোন কারোরই লাশ শনাক্ত করা যায়নি’ বাঁশখালীতে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা ‘মা-বাবা, বোন কারোরই লাশ শনাক্ত করা যায়নি’ নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম | তারিখ: ২৪-০৫-২০১২ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ওই পরিবারের সদস্য বিমল শীল। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা বেগমের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। গতকাল আদালতে দেওয়া প্রায় এক ঘণ্টার সাক্ষ্যে বিমল শীল ঘটনার বিবরণ ও মামলা তদন্তে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে বর্ণনা দেন। তাঁর অসমাপ্ত সাক্ষ্য আগামী ৩ জুন নেবেন আদালত। এর আগে ১৫ মে তাঁর সাক্ষ্য দেওয়া শুরু হয়।

গতকালের সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাদের ঘরে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র ও স্বর্ণালংকার লুট না করে আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারা বাইরে ৪০-৫০ মিনিট সশস্ত্র পাহারা বসায়। ঘরের মানুষগুলো পুড়ে কঙ্কাল হওয়ার পর সন্ত্রাসীরা পশ্চিম দিকে চলে যায়। ’ প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের শীলপাড়ায় তেজেন্দ্র লাল শীলের বাড়িতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত তেজেন্দ্র শীলের ছেলে বিমল শীল সাক্ষ্যে বলেন, ‘সকালে লাশগুলো একের পর এক বের করে ঘরের উঠানে রাখা হয়েছিল।

ওইগুলো শনাক্ত করার মতো কোনো অবস্থা ছিল না। ঘরের ভেতর থাকা চার দিন বয়সের শিশু কার্তিক শীলের লাশের কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার লাশ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আপন ঘরেই হলো কার্তিক শীলের শ্মশান। ’ উল্লেখ্য, ওই ঘটনায় বিমল শীলের মা বকুল বালা শীল (৬০), বাবা তেজেন্দ্র লাল শীল (৬৫), বউদি স্মৃতি শীল (৩০), ভ্রাতুষ্পুত্র চার দিন বয়সী কার্তিক শীল, মেসো দেবেন্দ্র শীল (৭০), মেজ ভাই অনিল শীল (৪২), অনিল শীলের দুই মেয়ে রুমি শীল (১১) ও সোনিয়া শীল (৭), অনিল শীলের তিন চাচাতো বোন বাবুটি শীল (২৫), প্রসাদী শীল (১৭) ও এনি শীল (১৫) মারা যায়।

সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘আমার মা-বাবা, বোন কারও লাশ শনাক্ত করা যায়নি। হাজার হাজার মানুষ দেখতে এসেছিল। ’ সাক্ষ্যে বিমল শীল আরও বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমাদের বাড়িতে আসেন। ওসিকে ঘটনার কথা বলার পর তিনি প্রাথমিক একটি এজাহার লেখেন। এজাহারের বক্তব্যগুলো আমি পড়ি নাই।

আমি শোকে কাতর ছিলাম। আমার চোখে অঝোরধারায় পানি পড়ছিল। তাঁরা আমাকে এজাহার পড়েও শোনাননি। ওসি আমাকে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি স্বাক্ষর দিয়েছি।

’ সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর এই মামলার তদন্তভার পড়ে সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি ক্লারেন্স গোমেজের ওপর। দুই বছর তদন্ত চলার পরও আমি এবং আমার পরিবারের কারও বক্তব্য তিনি নেননি। আমি পরে তাঁকে টেলিফোনে জিজ্ঞেস করি, আমাকে দরকার আছে কি না। তিনি বলেন, “আপনাকে দরকার নেই। আপনি কাউকে দেখেননি এবং এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করেন নি”।

’ ২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই মামলায় ৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয় উল্লেখ করে সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘কিন্তু আমিনুর রহমান চৌধুরী, চেয়ারম্যান আবদুস সবুর, মো. ইউনুস, আবুল কালাম, নুরুন্নবী, আব্দুন নবী, নুরুল ইসলাম ও মেম্বার আব্দুর রশিদ আহাম্মদসহ আটজনের নাম যুক্ত না করায় আমি নারাজি দিয়েছিলাম। ’ প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল ৩৭ জন আসামির বিরুদ্ধে এই মামলায় নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হয়। এতে ‘ডাকাতির উদ্দেশ্যে খুন’-এর পরিবর্তে ‘সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে খুন’-এর অভিযোগ আনা হয়। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঘটনার অন্যতম আসামি বিএনপির নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত হয়নি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.