হারতে শিখিনি কোনদিন । হারবও না । জগতে না কত অদ্ভূত ঘটনাই না ঘটে !
এর কোনটার ব্যাখা খুজে পাওয়া যায় আবার কোনটার ব্যাখা খুজে পওয়ার ধারে কাছেও যাওয়া যায় না । তেমনি একটা ঘটনা আমাদের কাপাসিয়ায় ঘটেছিল । জায়গাটি কাপাসিয়া পাইলট হাইস্কুলের পাশের নদীর ঘাট এর একটু খোলা জংগলময় স্থান ।
উত্তাল ৭১ এ পাকবাহিনী এখানে ক্যাম্প করেছিল । ছিল এখানে টর্চারসেল । মানুষকে এখানে দাড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে লাশ নদীতে ফেলত পাকবাহিনীরা । কালের বিবর্তনে অনেক সময় পেরিয়েছে । স্বাধীনতার পর সেখানে হিন্দুরা চিতা দাহ করত ।
এর পর পেরিয়েছে ৪০ বছর । এই জায়গাটা পড়েছে প্রাণবন্ত কাপাসিয়ায় । নগরায়নের প্রভাবে এই জায়গাটা অন্য রকম লোকে লোকারন্য হয়েছে । কিন্ত স্কুলের জায়গা বলে সেখানে কিছুই নেই । জংগলময় রয়ে গেছে ।
যাহোক আমাদের পাড়ার এক ছেলে নাম ইমন । বয়স ৮ । সে একদিন দুপুরে গিয়েছিল সেখানে । স্কুলের পেছনের এই জায়গায় । তখন কোন মানুষ ছিল না ।
জায়গাটা সবাই হন্টেট বলেই জানে । স্কুল কর্তৃপক্ষ এই জায়গায় আগে একবার ছাত্রদের জন্য বর্ডিং করেছিল । দুরের ছাত্ররা এখানে থেকে লেখা-পড়া করত । কিন্ত কোন কারনে তারা এখানে থাকতে পারেনি । যা কাউকে জানায়নি তারা ।
ছাত্র না থাকায় বোডিং বন্ধ করে দেয় স্কুল । আবার সেটি গাছ-গাছালিময় খোলা-মেলা নদীর ঘাট হয় । স্কুল কয়েক বছর আগে বাউন্ডারী করেছে । সেই জাযগা বাউন্ডারীর পেছনে ।
ইমন দুপরবেলা যে কারনে সেখানে গিয়েছিল কারন সেখানে তার অন্য বন্ধুরা পাখির ছানা আনবে বলে তাকে আসতে বলেছিল ।
কিন্ত তারা সেদিন সেখানে যায়নি । ফলে সে সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে এল।
আর তখনই সবার অবাক হবার পালা ! ইমন কথা বলতে পারছে না । তার ঘাড় বেকে আছে । চোখে মুখে ভয়ংকর ভয়ের ছাপ ।
শরীরে আঘাতের চিহ্ন ।
১বছর তাকে বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করা হল । কিন্ত ডাক্তাররা তার রোগ ধরতে পারেনি কোন । সে সারাক্ষন ঘাড় বাকা করে রাখত । আর একটা শব্দও মুখ থেকে বের করতে পারত না ।
অতঃপর হঠাৎই সে স্বাভাবিক হয়ে গেল । আর তখন সে এভাবে ঘটনাটা সবার সাথে শেয়ার করল -আমি ওইখানে যখন দুপুর বেলা যাই তখন আমার কেমন যেন লাগছিল । সেখানে যেয়ে আমার কলিজা শুকিয়ে যায় । অসংখ্য মৃত মানুষ লাইন ধরে শুয়েছিল । আর আমার নাম ধরে বলছিল ইমন ,ইমন তুইও আমাদের দলে আয় !!
হঠাৎ তারা আকাশে ভাসতে শুরু করে ।
আমার ঘাড়ে কে যেন চেপে ধরে । কাটা মাথা হি হি করে হাসতে থাকে । আমি জোরে চিৎকার করতে চাইছিলাম । কিন্ত পারছিলাম না । অতঃপর কি হয়েছে জানি না ।
সে এক বছর ধরে কি করেছে কোথায় ছিল ইত্যাদি কিছুই মনে করতে পারে না । তার কাছে এই দিনগুলি স্মৃতি থেকে মুছে গেছে ।
এর পর থেকে আর কেউ এই এলাকার লোক ওই খানে দুপুর এবং সন্ধা- এই টাইমে যেতে চায় না ।
ইমনকে নিয়ে সেই স্থানে গিয়েছিলাম । আমি আমার ভাই আশরাফ আর সে ।
কিন্ত কিছু দেখিনি । আসার সময়ে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটল । আমি আর আশরাফ দুজনেই কিছু অতিপ্রাকৃত শব্দ শুনতে পেলাম । গলার চাপা আওয়াজ । আর্তনাদের মত ।
আর থাকতে সাহস করলাম না । ইমন ভয়ে আগেই সেখান থেকে পালিয়েছে । বেচারা আবার কোন বিপদে পড়তে চায় না । আমরাও না । তাই আমরা ও তাড়া-তাড়ি স্থান ত্যাগ করলাম ।
এ ছাড়া আমাদের আর করার কিছু ছিল না ! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।