আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুমায়ুন আহমেদের উপর পুনরায় সংঘবদ্ধ আক্রমন এবং ব্লগে জাতীয় ইতিহাস নিয়ন্ত্রনের প্রচেষ্টা !!!

অভিলাসী মন চন্দ্রে না পাক, জোছনায় পাক সামান্য ঠাই ৭৫'র হত্যাকান্ড বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ট্র‌্যাজেডি। সেইটা নিয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় একজন সাহিত্যিক ও ব্যাক্তিত্ব যিনি সেই সময়টি প্রত্যক্ষ করেছেন তিনিই লিখবে, এইটাই স্বাভাবিক। এবং লেখক যখন লিখবে তখন সেটা প্রাপ্য মর্যাদায় গ্রহন করাই প্রয়োজন, সেটা রীতিও। কিন্তু, যতক্ষন এটা বাংলা ব্লগ, এখানে কিন্তু থেকেই যায়........... হুমায়ুন আহমেদে'র "দেয়াল" বইটির প্রকাশের আগেই ব্লগে এ নিয়ে মাতামাতি এবং হুমায়ুন আহমেদকে করা গালাগালি শুরু হইছে, যা মূলত বিরক্তিকর এবং বিব্রতকর! অনর্থক গালগালি যারে বলে! কারন, এই বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা'র মাধ্যমে ফারুক-ডালিমদের পরিচয় এবং বিভিন্ন বক্তব্য মানুষকে ৭৫'র আসল প্রেক্ষাপট সম্পর্কেই সচেতন করবে এবং এটা মোটেও বঙ্গবন্ধু'র লিগ্যাসি বা আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনীতি'র জন্য সুখকর হবার না! কেন হবে না সেইটা কম-বেশি সকলেই জানে, বিশেষ কারনে তা নিয়ে বেশি কিছু বলবো না। তবে, "দেয়াল" সম্পর্কে মতামত প্রকাশের জন্য আগে বইটা'র প্রকাশ এবং স্পর্ষকাতর বিষয়গুলা সম্পর্কে আগে সাহিত্য ও সমাজের বোদ্ধা ব্যাক্তিত্বদের প্রতিক্রিয়া দেইখা নেয়া উচিত।

বইটার দুইটা অধ্যায় এবং একটা রিভিয়্যু প্রকাশ হইতে না হতেই, সচলায়তন নামক সাহিত্য কেন্দ্রিক এলিট ব্লগটিতে হুমায়ুন আক্রমন শুরু হয়ে গেছে। ফেসবুকে হুমায়ুন আহমেদের বই লেখার সাথে টাকা লেনদেনের কাল্পনিক গল্প প্রচার হচ্ছে। এবং ফ্যানাটিক সাহিত্যিক ডঃ হুমায়ুন আযাদ ফ্যানস & ফ্যামিলি ক্লাব মন্তব্যের মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের গালাগালি থেকে শুরু করে "ছাগু" ট্যাগিং পর্যন্ত করে ফেলতেছে!!! আজব ব্যাপার হইলো, ব্লগারদের অধিকাংশের সে সময় জন্মই হয় নাই অথবা বড়জোর শৈশবে ছিল। সুতরাং, ৭৫'র ইতিহাস নিয়ে (এ্যাভারেজ) অনুর্ধ্ব ৪০ ব্লগারদের হৈ-চৈ দেখে বুঝা যায়, পিতার আগেই কেশ বিসর্জনের প্রয়াস তাদের! কিন্তু ভোতা ক্ষুর দিয়া কেশ বিসর্জন দিতে গিয়া একেবারে রক্তারক্তি কান্ড ঘটিয়ে বসে আছে! প্রথম আলো'তে প্রকাশিত ২ অধ্যায় পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে একটি মানবিক লেখা, যা ইতিহাস নয় বরং ইতিহাসে ভর করা একটি গল্প! সেইটারেই তারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের গ্লোরিফাই করার চেষ্টা এবং বঙ্গবন্ধু'র সরকার পরিচালনার অদক্ষতার কথা বইলা হুমায়ুন আহমেদ পাঠকদের বঙ্গবন্ধু বিরোধীতায় উস্কানী দেয়ার চেষ্টা করছেন বইলা কাউকাউ করতেছে!!! ঠাকুর - ঘর- কলা, এমন শব্দগুলো মনে পড়ে!!! আপনারাও পড়েন, নিজে বিবেচনা করেন, Click This Link রিভিয়্যুটাও পড়েন, Click This Link মূলত এই বইটা'র ঐতিহাসিক সততা নিয়ে আমাদের চিন্তিত হবার কোন কারনই নেই। কারন, বঙ্গবন্ধু'র কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং সম্প্রতিই তিনি হুমায়ুন আহমেদের ভয়াবহ ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা'র সময় লেখকের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।

তাকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে উপদেষ্টা পদে নিয়োগও দিয়েছেন। বাংলাদেশে সুদীর্ঘকাল ধরে জনপ্রিয় এই ব্যাক্তিত্বের ছোটভাই ডঃ জাফর ইকবাল। যার মানে, বইটিতে কোন রকমের বিকৃতি থাকলে সেটা যথাযত উপায়েই প্রশ্নের মিমাংসিত হবে! হুমায়ুন আহমেদের উপর আক্রমন মোটেই সাধারন পাঠক প্রতিক্রিয়া নয়, বরং এর সাথে যুক্ত আরো কিছু বিশেষ স্পর্ষকাতর ব্যাপার, প্রথমত একদল মানুষ আছে যারা সমালোচনা করেই বাঁচে, আবার, হুমায়ুন আহমেদ রাসুলের জীবন নিয়ে লেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সমাজে রাজাকার শব্দটারে একটা গালি'তে প্রতিষ্ঠা করছেন যেই হুমায়ুন আহমেদ, সে রাজাকার মানেই দাড়ি-টুপি কনসেপ্টের সমর্থন করেনাই কখনো। পশ্চিমাদের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধকে তিনি বাংলা শিল্প - সাহিত্যের জগতে অংশ বানাইতে সমর্থন দেয় নাই, কলকাতা'র লেখকদের দাদাগিরি সহ্য করেন নাই, ভারতের প্রতিও কোন বিশেষ মোহাচ্ছন্নতার প্রকাশ তার লেখায় নাই দেইখা, একটা গ্রুপ ওনাকে সরাসরি "ছাগু" মানে রাজাকার মানসিকতা বহনকারী একজন বইলা চুড়ান্ত অপমান করতেও ছাড়ে নাই!!! অনেকে আবার তাকে ইসলামিস্ট বলেও আখ্যায়িত করতো! এটা ভদ্রলোকের উপর ভার্চুয়াল টেরোরিস্টদের স্রেফ প্রতিহিংসামূলক আক্রমন! কিছু বিশেষ সিন্ডিকেট অথবা বলা ভাল "কাল্ট" হুমায়ুন আহমেদের প্রতি ব্যাক্তিগত ক্ষোভ থেকেও আক্রমন চালাইছে/ চালাইতেছে / আগামী'তেও চালাবে এটা পরিষ্কার।

এই পরিস্থিতিতে সাধারন নিরপেক্ষ মানুষদের সচেতন থাকা দরকার। কিছু অর্বাচীনের দ্বারা একজন সন্মানিত ব্যাক্তিত্বের অপমান সহ্য করাটাও তো অন্যায়!!! প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক, আহমেদ ছফাদের স্নেহধন্য, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সফল ও জনপ্রিয় সাহিত্যিক, টিভি-সিনেমা- সোশ্যাল ক্যাম্পেইন সহ নানা রকমের সেক্টরসহ নানান ভাবে আমাদের জীবনের দীর্ঘ সময় জুড়ে পাশে থাকা লোকটির প্রতি কতিপয় অর্বাচীনের এমন আচরন সত্যিই খুব দুঃখজনক!!! তাই এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়ানো প্রয়োজন। নিরপেক্ষ সাধারন বাংলাদেশী পাঠকদের উচিত, সিজন্যাল খিচুনিতে আক্রান্ত অশালীন ব্লগারদের বক্তব্যের দিকে নজর না দিয়া, যারা ৭৫ এ সাবালক ছিল এবং এখনো সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে, বইটি সম্পর্কে তাদের মূল্যায়ন ও প্রতিক্রিয়া দেখা পর্যন্ত অপেক্ষা করাই উত্তম। বইটা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু হবার সম্ভাবনা আছে তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হন, নইলে নিজের, দেশের ও জাতির ক্ষতি'র জন্য আপনারও দায় থাকবে!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।