আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"আমি তেলাপোকার কাছ থেকে গনতন্ত্র শিখেছি, আমায় আর হরতালের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই"-গনতন্ত্রপ্রেমী ম্যাঙ্গো পিপল

কামনায় পৃথিবীর সকল সুন্দর দুচোখ মেলে দেখতে চাই সকলের অন্তর। মজার একটা সংবাদ পড়ে শেয়ার না করে পারলাম না। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতাকে .... দেখাতেই এই লেখাটা কপি পেস্ট করে শেয়ার দিলাম। [অতিকায় ডাইনোসর বিলুপ্ত হলেও তেলাপোকা এখনো টিকে আছে। সম্প্রতি ফ্রান্সের গবেষকেরা জানিয়েছেন, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল, সামাজিক বলেই প্রতিকূল পরিবেশেও তেলাপোকা টিকে আছে।

তেলাপোকার সামাজিক আচরণ গবেষণা করে সম্প্রতি ফ্রান্সের গবেষক ম্যাথিউ লেহোরেল বলেছেন, ‘আমরা তেলাপোকাকে যতটা সামাজিক প্রাণী হিসেবে জানি, ওরা তার চেয়েও বেশি সামাজিক। ’ গবেষক লেহোরেলের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, তেলাপোকাদের জীবনযাপনের গোপন রহস্য তাদের গণতান্ত্রিক মানসিকতা। জীবনযাপনের পদ্ধতিতে সামাজিকতার সব ধরনের রীতি মেনে চলে তারা। তেলাপোকারা নিজের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন প্রজন্মকে চিনতে পারে। কেউ অসুস্থ হলে বা আঘাত পেলে কখনো তাকে ছেড়ে প্রাণভয়ে পালায় না।

তেলাপোকাদের সামাজিক বন্ধন এতটাই দৃঢ় যে তারা কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সবার মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং সর্বসম্মত হলে তবেই কেবল কোনো কাজের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। গবেষক লেহোরেল তেলাপোকার কয়েকটি প্রজাতি নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন, তেলাপোকার উন্নত সমাজব্যবস্থা থেকে মানুষের শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই আছে। মানুষের চেয়েও তেলাপোকা বেশি সামাজিক বলেই মনে করেন তিনি। লেহোরেলের মতে, প্রাণীজগতের মধ্যে কিছু প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে সামাজিকতার রীতি লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে পিঁপড়া, উই, মৌমাছি ও বোলতা উল্লেখযোগ্য।

আমাদের পরিবেশের মধ্যে সামাজিক কাঠামো পুরোপুরি মেনে চলা ও সে অনুসারে আচরণ করার জন্য এই প্রাণীগুলো বিখ্যাত। এদিক থেকে তেলাপোকাকে দলপ্রিয় প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, কারণ এরা দলবদ্ধভাবে তাদের জীবনের বিভিন্ন স্তর পার করে। তবে তেলাপোকা পরস্পরের সঙ্গে কেমন আচরণ করে, সে সম্পর্কে মানুষের ধারণা কম। গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘ইনসেক্টস সোসিয়াক্স’ সাময়িকীতে। গবেষকেরা এখন পর্যন্ত চার হাজার প্রজাতির তেলাপোকার সন্ধান পেয়েছেন।

এর মধ্যে ২৫ প্রজাতির তেলাপোকা মানুষের মধ্যে বসবাস করার জন্য নিজেদের মানিয়ে নিতে পেরেছে। গবেষক লেহোরেল জার্মান তেলাপোকা Blattella germanica ও যুক্তরাষ্ট্রের তেলাপোকা Periplaneta americana নিয়ে গবেষণা করেছেন। লেহোরেল জানিয়েছেন, দিনের বেলা জোটবদ্ধ হয়ে এরা অন্ধকার পরিবেশে একসঙ্গে লুকিয়ে থাকে আর রাত নামলেই খাবার ও পানির জন্য এরা ছড়িয়ে পড়ে। লেহোরেল ও তাঁর সহকর্মী গবেষকেরা জানিয়েছেন, যে তেলাপোকা সমাজচ্যুত হয়, তারা একাকিত্বে ভোগে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ও জার্মানির তেলাপোকারা তাদের দল থেকে দূরে থাকলে পরে তাদের আচরণে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে যায়।

তারা পরে আর কোনো সমাজে মিশতে পারে না। শিশু তেলাপোকার বেড়ে ওঠার জন্য পরিবারের অন্য তেলাপোকারা প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে। ২০১০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, তেলাপোকা খাদ্যরসিক ও গণতন্ত্রীও বটে। ভালো খাদ্য উেসর সন্ধান পেলে তেলাপোকারা নাকি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারে। তারপর সব তেলাপোকা একজোট হয়ে খাদ্যবিষয়ক সিদ্ধান্ত নেয়।

গবেষক লেহোরেল জানিয়েছেন, প্রায়ই দেখা যায়, রাতের বেলা অন্ধকারে রান্নাঘরে তেলাপোকা একজোট হয়ে খাবার খাচ্ছে। ভালো খাবারের সন্ধান পেলে তেলাপোকারা অন্য তেলাপোকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কারণেই এমনটি ঘটে। তিনি বলেন, তেলাপোকার খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে আগে ধারণা ছিল, এ প্রাণীটি একা একা খেতেই পছন্দ করে। কিন্তু এটি ঠিক নয়, এরা বরং দল বেঁধে খেতেই বেশি পছন্দ করে। আবার এমনও দেখা যায়, সবচেয়ে ক্ষুধার্ত তেলাপোকাটি সবার খাওয়া হয়ে গেলেও একা একা খেয়েই যাচ্ছে।

কী খেতে হবে, সে বিষয়ে তেলাপোকার দল একসঙ্গেই সিদ্ধান্ত নেয়। পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তারা কিউটিকুলার হাইড্রোকার্বন নামে একধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করে। এ রাসায়নিক ব্যবহার করেই তারা পরস্পরকে চিনতে পারে। দেখা গেছে, তেলাপোকারা পরিবার গঠনের সময় নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে না। তেলাপোকার এ ধরনের আচরণ পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করে কোনো বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার শিক্ষা দেয়।

এদের একসঙ্গে সহযোগী শক্তি হিসেবে দেখা যেতে পারে। তেলাপোকার সামাজিক জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষের কাজে লাগানোর পরামর্শও দিয়েছেন গবেষক লেহোরেল। লেহোরেল জানিয়েছেন, ‘তেলাপোকা দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সামাজিক আচরণ সম্পর্কে জানতে আরও গবেষণা করা উচিত। কারণ অতিকায় ডাইনোসরদের যুগ থেকে টিকে থাকা এই প্রাণীটি টিকে থাকার রহস্য বিষয়ে অনেককিছুই আমরা জানি না।

’] সূত্র: প্রথম আলো অনলাইন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।