আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেসবুক ও উহার পেইজ গোষ্টী

জীবনকে এমন ভাবে সাজান যেন আপনার ব্যক্তিগত ডায়েরীটা কখনো লুকাতে না হয়। ফেসবুক !! বর্তমান সময়ে খুবই কম মানুষ আছে যারা এই নামে শুনে নাই। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে ফেসবুক ব্যবহার অনেকটা নেশায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে ফেসবুকের অগ্রগতি আসলে চোখে পরার মত। গত কয়েকবছর আগেও ফেসবুকার খুঁজে বের করা কষ্টের ব্যাপার ছিল সেই ফেসবুকার এখন শহর বন্দর ছাড়িয়ে গ্রামে গঞ্জে পর্যন্ত বিস্তার করেছে।

ফেসবুকারদের মাঝে যে শুধুমাত্র ছাত্র,চাকুরীজীবি বা শিক্ষিত মানুষ আছে সেই ধারণার কবর দিয়ে ফেসবুক এখন অর্ধ-শিক্ষিত বা অল্প শিক্ষিতদের মাঝে অন্য প্রকার এক বিনোদনের জায়গা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। কোন অল্প শিক্ষিত মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে কিছু জ্ঞান অর্জন করতে পারলে সেটার মাঝে কুফল খোঁজার মত অ্যালার্জি আমার নেই। তাই ব্যাপারটা মোটেও খারাপ না। এবার আসি ফেসবুক পেইজ ব্যাপারে। আমার ধারণা ৭০% ফেসবুকার একেকটা পেইজ অ্যাডমিন।

ব্যাঙ্গের ছাতার মত সামনে-পেছনে,আশে-পাশে যেদিকে তাকাবেন শুধু পেইজ আর পেইজ। এইটাতেও আমার সমস্যা নাই কারণ পেইজের মাধ্যমে এমন কিছু জানা যাবে যা আমার অজানা ছিল। সমস্যা তখনই যখন ছোট পেইজ মানে কম লাইকের পেইজ গুলো জনপ্রিয়তার জন্য আজে-বাজে স্ট্যাটাস বা ছবি সরবরাহ করে। যেটি বেশী হয় ১৮+ নামের পেইজ গুলোতে। ১৮+ লাগিয়ে অনেকটা বিশ্বজয় করে ফেলার মত কান্ড পেইজ গুলোর স্ট্যাটাস ও ছবিতে।

একটা মেয়ের ছবি দিয়ে ডিটেলস এ প্রশ্ন করল "সাইজ কত হতে পারে??"সহ নানা রকম অশ্লীল মন্তব্য। (মন্তব্যটি করলাম আপনাদের বুঝানোর জন্য) ১৮+ সহ আরো কিছু পেইজ এইসব অশ্লীলতার আশ্রয় নিয়ে লাইক বাড়িয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এতে সমস্যা আমার তেমন হচ্ছে না,কিন্তু আমার ছোট ভাই যে ক্লাস টেন-এ পড়ে বা আমার ছোট বোন যে ক্লাস নাইন-এ পড়ে ওদের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ সেটা বুঝার মত ক্ষমতা কি ঐসব পেইজ অ্যাডমিনদের নেই?? অনেকে বলতে পারেন ক্লাস নাইন বা টেন ফেসবুক ব্যবহার করার দরকার কি?? কারণ ওদের বিনোদন দরকার। সারাদিন স্কুল,ক্লাস,প্রাইভেট,কোচিং,কোরআন শিখার পর ওদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা বা সময় তেমন থাকে না বললেই চলে(আর যা সময় পাই তাতে হিন্দি চ্যানেল না দেখে ফেসবুক ব্যবহার উত্তম বলে আমি মনে করি) আর ওদের সবসময় নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষন বেশী থাকে। তাছাড়া যুগের হাওয়া তো আছেই।

ভালো পেইজ নাই সেটা বললে ভুল হবে অবশ্যই ভালো পেইজ আছে। তবে সংখ্যায় খুব কম। কিছু পেইজ আছে খারাপ কিছু না করলেও যে ভাল কিছু তা নয়। সব মিলিয়ে আমি মনে করি পেইজ অ্যাডমিনদের মনে খোরাক মিটানোই পেইজ গুলো মূল উদ্দেশ্য। পেইজের মানুষ গুলো কিছু পেলো কিনা তা মূল বিষয় নয়।

ভাল পেইজ গুলো আবার নিজেদের প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে ঐসব ১৮+ সহ বাজে পেইজ গুলোর বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের কাঁধের উপর নিয়ে আসে বাকি থাকে শুধু মুখ খুলে খাওয়াটা মানে লাইক দেওয়া টা। আমরা বা আমাদের যুবক গোষ্টী যৌবনের তাড়নায় ঐসব পেইজে হুমড়ি খেয়ে লাইক মারে সাথে নিজেদের মানসিক ভাবে বিকৃত করে তোলে। "পৃথিবীর বিস্ময়কর সব তথ্য ও ঘটনা" "মারাত্মক সব ছবি ও ঘটনা" "জানেন কি" "ডিকশনারী" "৩২টা থাপ্পড়ে ১টা দাঁত ফেলে দিব" সহ বেশ কিছু ভালো পেইজ আছে। পৃথিবীর বিস্ময়কর সব তথ্য ও ঘটনা পেইজের অ্যাডমিনকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আমি অনেক অনেক কিছু জেনেছি,শিখেছি এই পেইজের মাধ্যমে।

আমি ফেসবুকে বসলে পেইজটা না গেলে শান্তি পাই না। আরেকটা বিষয় না বললেই নয় সেটা রাজনৈতিক পোষ্ট গুলো। হাসিনা-খালেদা যেমন হিংসাত্বক মন্তব্য করে পেইজ গুলোও একি। আমি ওনাদের প্রতি অনুরোধ করব আপনারা রাজনৈতিক পোষ্ট দিবেন কিন্তু সেটা যাতে হিংসাত্বক না হয়ে গঠনমূলক হয়,কারণ আপনারাও হিংসা প্রকাশ করলে নতুন প্রজন্ম এই হিংসাত্বক মনোভাবে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। ভালো পেইজ গুলোকে অনুরোধ করব আপনারা শিক্ষনীয় জিনিস পেইজে পোষ্ট করুন।

স্কুল-কলেজের ছাত্ররা যাতে পাঠ্য বইয়ের বাইরে কিছু শিখতে পারে। নিজেদের স্বশিক্ষিত করে গড়ে তোলতে পারে। যেটার অভাব আমাদের দেশে লক্ষ্যনীয়। ওদের সাথে সাথে আমরাও কিছু পেলাম। বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানের বর্ণণা,ঐতিহাসিক ঘটনা,মনীষিদের জীবনী সব মিলিয়ে শিখার মত কিছু পোষ্ট করলে আমরা লাস্ট বেঞ্চার ছাত্ররা উপকৃত হব।

সব অ্যাডমিনদের অনুরোধ করব পেইজের ৪০,০০০/৫০,০০০ লাইক মানেই আপনার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল। পেইজটি আপনার পরিবার হয়ে গেল। আপনার পরিবারের সদস্যরা আপনার কাছে অনেক ভাল কিছু প্রত্যাশা করে। তাদের নিরাশ করবেন না। আপনারা পোষ্টের প্রতি দায়িত্ববান হবেন আশা করি।

আমি নিজে যতক্ষণ নেটে থাকি ততক্ষণ একটা উইন্ডো ফেসবুকের জন্য বরাদ্দ থাকে। তাই পেইজ গুলো সম্পর্কে আমার একটা আইডিয়া হয়ে গেছে। কিছু অশ্লীল পোষ্টের স্ন্যাপ আমার কাছে আছে,এইবার স্ন্যাপ গুলো দিলাম না। কিন্তু পরের পোষ্টে ইনশাল্লাহ পেইজ গুলো গায়ে লাল কালি মাখাবো। এইটা অনেকটা ক্ষোভ থেকে লিখলাম।

আমার লেখার হাত ভাল না তাই ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.