আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ড্রোন বিমান-আধুনিক সমরপ্রযুক্তির এক বিস্ময়কর আবিষ্কার!!

I wanna love someone who is not popular but unsafe! পাইলটবিহীন বিমান (UAV) বা ড্রোন বিমান আধুনিক সমরপ্রযুক্তির এক অনন্য সংযোজন। দিবা-রাত্রি শত্রু দেশের আকাশসীমায় গুপ্তচরবৃত্তি চালানো, নিজ দেশের আকাশসীমা পাহারা দেয়া, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, শত্রুদের বেতার ও রাডার সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটানো, আড়ি পেতে তথ্য যোগার করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনে ছোটখাটো একটি যুদ্ধবিমানের ভুমিকাও পালন করতে পারে এই বিমান। এসব বিমান পাইলট বিহীন হওয়ায় যুদ্ধে পাইলটের মৃত্যুঝুকি থাকেনা তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে এই ধরনের বিমান ব্যবহার করা যায়। বর্তমানকালের অনেক ড্রোন বিমান স্টিলথ প্রযুক্তির হওয়ায় খুব সহজেই এটি শত্রু দেশের রাডার সিস্টেম ফাঁকি দিয়ে তৎপরতা চালাতে পারে। তাই বর্তমান যুগে কার্যকর ও শক্তশালি বিমানবাহিনী এবং আকাশপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ড্রোন বিমানের কোনও বিকল্প নেই।

আসুন এবার জেনে নেয়া যাক বিশ্বের আলোচিত কয়েকটি ড্রোন বিমান সম্পর্কে। RQ-170 Sentinel-------আরকিউ-১৭০ সেন্সিয়াল মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মারটিন নির্মিত বর্তমান বিশ্বের সেরা ড্রোন বিমানগুলোর একটি। অত্যাধুনিক স্টিলথ ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিমানটি মূলত রিকন অর্থাৎ শত্রু দেশের আকাশসীমায় নজরদারি করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এই বিমানটির আকৃতি অনেকটা মার্কিন স্টিলথ বোম্বার বি-২ এর মত। এটি প্রায় ৫০,০০০ ফুট উপর দিয়ে উড়ে জেতে পারে।

মার্কিন বিমানবাহিনীর সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এই বিমানটি অপারেট করে থাকে। এটি ২০০৭ সালে মার্কিন বিমান বাহিনীতে নিয়োজিত হয়। একটি Garrett TFE731 অথবা General Electric TF34 টার্বোফ্যান ইঞ্জিনে পরিচালিত এই বিমানটি আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ইরানে পর্যবেক্ষণ ড্রোন হিসেবে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। পাকিস্তানে ওসামা বিন লাদেন হত্যা মিশনেও এই বিমানটি অত্যন্ত সফলতার পরিচয় দিয়েছে। তবে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ইরান আর্মির ইনটেলিজেন্ট ইউনিট একটি আরকিউ-১৭০ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করে এবং তাদের ধৃত বিমানটির ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে।

মার্কিন পক্ষ থেকে পরে তাদের এই ধরনের একটি বিমান হারানোর কথা স্বীকার করেছে। MQ-1 Predator---- এমকিউ-১ প্রিডেটর মার্কিন প্রতিষ্ঠানজেনারেল এটোমিক্স এরোনটিক্যালস নির্মিত একটি কমব্যাট ড্রোন। মার্কিন বিমানবাহিনী এবং সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এই ড্রোনটি ব্যবহার করে। এটি একি সাথে আকাশে গোয়েন্দাগিরি এবং কমব্যাট মিশনে সমান পারদর্শী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা ও সেন্সর সংবলিত এই ড্রোনটি ১০০০০ ফুট দূর থেকেই মানবদেহের হিট সিগনেচার শনাক্ত করতে পারে।

এটি কন্ট্রোল ইউনিটের নির্দেশনা ও স্যাটেলাইটের সাহায্যে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যস্থির করে মিসাইল হামলা চালায়। আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ইরাক, ইরান, লিবিয়া ও সোমালিয়াসহ বিশ্বের অনেক স্থানে মার্কিন বাহিনী এটি ব্যবহার করে আশাতীত ফল লাভ করে। একটি Rotax 914F প্রপেলার ইঞ্জিনে চালিত এই ড্রোনটি ২৫০০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে এবং এর সর্বোচ্চ ঘণ্টায় গতি ২১৭ কিঃ মিঃ। দীর্ঘক্ষণ আকাশে ভেসে থাকার ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিমানটি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে। সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে এই ধরনের ড্রোন ব্যবহার করে বেসামরিক মানুষ হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

২০১২ সালের নভেম্বর মাসে ইরানি বিমানবাহিনী তাদের আকাশসীমা থেকে একটি প্রিডেটর ড্রোনকে গোলাবর্ষণ করে তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে ইউএস বিমানবাহিনীসহ ইতালি, মরক্কো, তুরস্ক ও আরব আমিরাত এই ড্রোনটি ব্যবহার করছে। ScanEagle------ স্ক্যানঈগল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ইনশিটু ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির তৈরি একটি গোয়েন্দা ড্রোন। এর পরিচালন খরচ অনেক কম এবং দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার উপযোগী। মূলত মৎস্য শিকারিদের কাজে সাহায্য করার জন্য এটি তৈরি করা হলেও বর্তমানে মার্কিন আর্মি, নেভি ও বিমানবাহিনী বিভিন্ন গোয়েন্দা অভিযানে এটি ব্যবহার করে আসছে।

নিয়মিতভাবে আপগ্রেড করে এটিকে বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। এটি ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম ইউএস নেভিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। শক্তিশালী ইনফ্রারেড ক্যামেরা এবং NanoSAR Aরাডার সংবলিত এই ড্রোনটি আকাশে গোয়েন্দা অভিযানে এর কার্যকারিতা প্রমান করেছে। একটি ২ স্ট্রোক পিস্টন ইঞ্জিন সংবলিত এই ড্রোনটি ১৬০০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে এবং গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৮ কিঃমিঃ । মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ও ইরাক অভিযানে এই ড্রোন ব্যবহার করে।

২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর ইরান তাদের আকাশসীমা থেকে এই ধরনের একটি ড্রোন আটক করার দাবি করেছে। যদিও মার্কিন বাহিনী তাদের এরকম কোন ড্রোন হারানোর কথা স্বীকার করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কানাডা, কলাম্বিয়া ইত্যাদি দেশ এই ড্রোনটি ব্যবহার করছে। ইরান সম্প্রতি স্ক্যানঈগল ড্রোনের অনুকরণে তাদের নিজস্ব ড্রোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। Click This Link  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।