আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেপটাউন, ভুভুজেলা, প্রফেসর ইউনুস

ইতিহাস, নেই অমরত্বের লোভ/ আজ রেখে যাই আজকের বিক্ষোভ... সদ্যকেনা ভুভুজেলাটি কাঁধে ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম গ্রিন স্ট্রীটের কোণায় যে চার্চটি রয়েছে তার সামনে। কেপটাউনের গ্রীন স্ট্রীটে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে একটি অস্থায়ী মার্কেট বসে, অনেকটা আমাদের শিল্পকলা একাডেমিতে বসা মেলাগুলোর মতো, হালকা স্ট্রাকচারের দোকান। দক্ষিণ আফ্রিকার যাবতীয় ঐতিহ্যবাহী পোষাক, শোপিস, আর টুকিটাকি মনোহারী সামগ্রি পাওয়া যায়। ওখান থেকে পশুর লোম দিয়ে সুণিপুণ হাতে তৈরি জুলু হেড ব্যান্ড, আর বিশ্বকাপ ফুটবলের অন্যতম সেলিব্রেটি ক্যারেক্টার 'ভুভুজেলা' কিনে স্থানীয় বাঙ্গালি সুহৃদ বাবু ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। [আমার ভুভুজেলা] সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল এক কৃষ্ণাঙ্গ বালক, ৬/৭ বছর বয়স হবে।

কালো রং, টানা চোখ, কোঁকড়া চুল, বড় ভাইয়ের হাত ধরে শিশুসুলভ চপলতায় লম্বা লম্বা পা ফেলে লং স্ট্রীটের দিকে যাচ্ছে। আমার সামনে হঠাৎ হার্ডব্রেক কষার মতো করে থমকে দাঁড়িয়ে কৌতূহলী দৃষ্টি মেলে জিজ্ঞেস করল, 'স্যার, আর ইউ ফ্রম ইন্ডিয়া?' আমি ইষৎ হেসে জবাব দিলাম, 'নো, আই এ্যাম ফ্রম বাংলাদেশ'। বালকটির মুখে মনে হল একটু বিভ্রান্তির অপ্রতিভতা ছড়িয়ে পড়ল। [জুলু হেড ব্যান্ড] বহু বর্ণ গোত্রের সমসত্ব সমাহার ঘটেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। জুলু, চ্খ্যোসা, বাসোথো, বাপেডি, ভেন্ডা ইত্যাদি সংখ্যাগুরু কৃষ্ণাঙ্গ জাতিগোষ্ঠি ছাড়াও রয়েছে বিপুল সংখ্যক ওলন্দাজ, ফরাসি, ইংরেজ, জার্মান শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠি।

তার ওপর রয়েছে ৯% কালারড (স্থানীয় বাঙ্গালিরা যাদেরকে মজা করে রঙ্গিলা নাম দিয়েছে), ৩% ভারতিয় ও অন্যান্য এশিয় বংশোদ্ভূত। [টেবল মাউন্টেনের পাদদেশে চমৎকার শহর কেপটাউন] এত বর্ণের ভিড়ে সাধারণিকরণের প্রাথমিক দীক্ষা ভুল প্রতীয়মান হতে চলেছে দেখেই বুঝতে পারি কৃষ্ণাঙ্গ বালকটি অপ্রতিভ হয়ে গিয়েছে। তাই আশ্বস্ত করে বলি, তুমি খুব একটা বড় ভুল করোনি। বাংলাদেশ ভারতীয় উপমহাদেশেই অবস্থিত, এর তিন দিকেই ভারত। তাই আমাদের চেহারায় একই রকম ছাপ তো থাকবেই।

ছেলেটিকে যখন বাংলাদেশের অবস্থান বোঝাচ্ছি, পাশ থেকে তার কিশোর বয়সী বড়ভাইটি তখন আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে সপ্রতিভ ভঙ্গিতে জবাব দিল- 'আই নো বাংলাদেশ, ইউ আর ফ্রম প্রফেসর ইউনুস'স কান্ট্রি'। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।