আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাল্টি নিকের অশুভ ম্যাতকারে কণ্ঠরোধ “ফ্রেশ ব্লগিং” এর

© এই ব্লগের সকল পোষ্ট,ছবি,থিম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কোথাও বিনা অনুমতিতে প্রকাশ করা নিষেধ । ঠিক ২ বছর ৬ মাস আগে, একটি ছেলের কাছে ব্লগটা তখন বিস্ময় !ভাবনার জগতে যোগ হওয়া নতুন এক ভুবন। চ্যাটিং,ফেসবুকিং,এমআইআরসি,মিগ৩৩ কে পেছনে ফেলে দিয়ে বহুদিন ধরে সাদা কাগজে লিখতে থাকা এই হাত পেয়ে যায় কি-বোর্ড । সেই জগতে ঢুকে সে পড়তে শুরু করে। যতই পড়ে সে অবাক হয়,বিস্ময় জন্মায় সেই ব্লগটার প্রতি,ভালোবাসা জন্মায়,লেখার আগ্রহ জন্মায়।

বাংলায় টাইপ জানতো না বিধায়,ভার্চুয়াল কি-বোর্ড এ মাউস চেপে লিখতে শুরু করে। শুরু হয় সেই ছেলেটার স্যামহোয়্যারইন এ যাত্রা। এই ২ বছর ৬ মাসের অর্ধেক সময়টায় সেই ছেলেটা লিখে কখনো কবিতা,কখনো গল্প,যখন যা ইচ্ছা তা। তার তখন থাকে না মাথা ব্যথা কে পড়লো লিখা,থাকেনা চিন্তা কার ভালো লাগলো না লাগলো সেই লেখা। সে লিখতও আপন মনে।

ঠিক তার ছোট্ট বেলায় বাবার কিনে দেওয়া ড্র-ইং বুকের মত, সে যা ইচ্ছা তা লিখতও কোন হিট না পাওয়ারই স্বার্থে। পুরো ঢাকা শহরটায় তখন তার সব কিছু বলার,সব কিছু শোনার একটাই মাধ্যম “ব্লগ”। এর পরের সময়টায় শিক্ষা জীবনের সমাপ্তির পর জীবন জীবিকার নির্মম তাগিদ,রঙিন স্বপ্নগুলোর সাদা-কালোয় রূপান্তর,একাকীত্ব-নিজের সাথে…এত কিছুর পরও সেই ছেলেটা আঁকরে থেকেছে সেই ব্লগটাকে তার কঠিন সময় গুলোতে বন্ধু ভেবে। সমসাময়িক এই সময়টায় (২ বছর ৬ মাস পর ) লিখতে লিখতে সেই ছেলেটা দেখে তার লেখা কেউ না কেউ পরে। কারো ভালো লাগে কিংবা কারো প্রিয় পোষ্ট এর সোকেসে্ যায়।

তার ভাবনার জগতের পরিবর্তন আসে,চিন্তায় পরিবর্তন আসে,লেখায় পরিবর্তন আসে। সে ভাবতে শুরু করে এ ব্লগের প্রতি তার দায়িত্বের কথা,তার এ বন্ধুর কথা। ভাবনা থেকে ব্লগ খুলে লেখা পড়তো,ব্লগের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল পোষ্ট দেখতও,কমেন্টস গুলো দেখতও,দেখতও লেখাপড়া জানা ভদ্রবেশী অনেকেই একে অন্যকে গালি দিচ্ছে। কখনো তাঁরা বকছে একে অন্যের বাবা-মা নিয়ে,কখনো তাঁদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে। দেখে মনে হত ঠিক যেন গ্রাম্য কিংবা পাড়ার গণ্ডগোল।

বুঝতে পারলো তখন সেই ছেলেটি এটাই কমিউনিটি ব্লগ। এই গল্পটা হয়ত কম বেশী অনেকের সাথেই মিলে যায়। কিন্তু এর পরই যে কথা গুলো চলে আসে তাই বলছি এখন, এখন কথা হচ্ছে,কমিউনিটি ব্লগ বলেই কি আমরা লেখা পড়া জানা সবাই “ক্যাচাল” লাগলে নেমে আসবো ঐ গালিগালাজ এর কাতারে?তাহলে কি বলবো আমাদের পারিবারিক শিক্ষা-প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোনটাই আমাদের অন্তরে স্থান নেয় নি? নাকি আমরা এতটাই আধুনিক যে ভুলে গেছি শ্রদ্ধা করতে একে অন্যকে,একে অন্যের মতামত,ভাবনা কে। হয়তো মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। মতের অমিলের প্রেক্ষিতে ভুল করে কেউ উত্তেজনায় বশবর্তী হয়ে কিছু বলতে পারে।

কিন্তু প্রো-ক্ষণই বিবেকের তাড়নায় ভুল শুধরে নিতেও পারে। কিন্তু দেখা যায় সেটা সংশোধনের পথে না গিয়ে সেই জিনিসটাকে টেনে রাবারের মত লম্বা করে বেদ ব্যাস হয়ে রচিত করার চেষ্টা মহাভারতের। পঞ্চ পাণ্ডব আর কৌরবদের সিন্ডিকেট এর গালিগালাজ আর অপ্রয়োজনীয় তর্ক জড়িয়ে ছুঁড়ে মারা হয় ফেসবুকীয় স্ক্রিনশট এর ব্রহ্মাস্ত্র। সেই সিন্ডিকেটের কারবার পান্ডব কে রুখতে তৈরি হয় কৌরব/কৌরব কে শেষ করতে তৈরি হয় পাণ্ডব। এই পাণ্ডব-কৌরবের মতামত/আস্ফালন প্রতিষ্ঠা/তৈরি করতে আসে তাঁদের ই হাত ধরে “জারজ নিক” গুলো।

জারজ(এই শব্দটা ব্যবহার না করে পারলাম না) এই কারণে অধিকাংশ মাল্টি নিক এর পাসওয়ার্ড জানা থাকে সিন্ডিকেটের হেভিয়েটদের যারা যে যখন পারে ঐ মাল্টি দিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি করে তুলে অস্থিতিশীল। জারজ নিকের হোতারা এর পেছনের উৎস খুঁজলে দেখা যাবে একই আইপি থেকে নিদিষ্ট কিছু ব্যক্তিই মাল্টি গুলো খুলেছে কিংবা তাঁদের সঙ্গী সাথীরা। কখনো তাঁদের নিজেদের উপর আক্রমণ হলে কিংবা মতের অমিল হলেই শুরু হয় ম্যাতকার। কখনো নবীন বা ফ্রেশ ব্লগারা এই বিষয় গুলোর উপর ধারনা তুলনামূলক কমই রাখেন। শুধুই কি “ক্যাচাল” এর স্বার্থে মাল্টি নিক না, শুধু মাত্র ক্যাচাল এর স্বার্থে মাল্টি ব্যবহৃত হয় না।

নিজের পোষ্টে এ হিট বাড়াতে,লুলামি করতে কিংবা ছাইয়্যা’ গিরি করতে,গালিগালাজে এই মাল্টির জুড়ি মেলা ভার । কিভাবে কটা সুষ্হ প্লাটফর্ম কে অসুস্হ করতে হয় তার প্রমাণ আমরা সাম্প্রতিক সময়ে পাই আরজু পনির পোষ্টে/দুর্যধনের পোষ্টে। ব্রহ্মা জানেন সব ,হয়না বিচার শিবের ! এই সব অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বা গালিগালাজ পূর্ণ নিক গুলোর আইপি/হোতা সবই জানেন এডমিনরা। কিন্তু সেই সব মাল্টির বিরুদ্ধে নেওয়া হয় না তেমন কোন কঠিন ব্যবস্থা (সম্প্রতি একটারে সুলেমানি ব্যান করা হয়)। এই মাল্টি গুলোর অশুভ তৎপরতার ফলেই আজ বাধা গ্রস্ত হচ্ছে ফ্রেশ ব্লগিং।

ব্লগের ট্রাফিক বাড়াতে কি মাল্টি প্রয়োজন? আমার মনে হয় না ট্রাফিক বাড়ানো বা হিট বাড়াতে মাল্টির প্রয়োজনীয়তা আছে। ব্লগ এমনি তেই দিন কে দিন নতুন প্লাটফর্মে উপনীত হচ্ছে,যার ফলে ভালো কন্টেনস থাকলে এমনিতেই ট্রাফিক বারবে। সে খানে এই সব আবর্জনাকে লালন অযৌক্তিক। অনেক জায়গায় বলেতে শুনি ক্যাচাল ছাড়া/গালিগালাজ ছাড়া ব্লগে মজা লাগে না। তাহলে কি বলব,সুস্থ চিন্তার বাতায়ন কে বন্ধ করে শুধু মাত্র মজা লাগার তাগিদে নিষিদ্ধ পল্লীর মত গালিগালাজ শ্রবণ করবো? ফ্রেশ ব্লগিং কনসেপ্ট বর্তমান সময়ে অশুভ সিন্ডিকেট আর অশালীন গালিগালাজ,লেডী ব্লগারদের হেয় করা ইত্যাদি নানা সমসাময়িক বিষয় উঠে এসেছে।

এইসব কিছুই বাধা গ্রস্ত করে ফ্রেশ ব্লগিংকে। সেই সাথে বাধা গ্রস্ত করে শুরুর গল্পের ছেলেটার মত হাজারো নবীন ব্লগারদের,যারা হয়তো স্বপ্ন দেখে নতুন দিনের আলোর মিছিলের। আর তাই,ফ্রেশ ব্লগিং বলতে আমি সুস্থ ও শুভ চিন্তাধারার ব্লগিং কে বুঝি। যেখানে অশুভ সিন্ডিকেট,গালিগালাজ পূর্ণ জারজ মাল্টি নিপাকযাত,ফ্রেশ ব্লগিং জিন্দাবাদ। জয় হোক ফ্রেশ ব্লগিং এর ।

। ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.