কয়েক বছর আগে সম্ভবত গ্রামীন ফোন কোম্পানী একটি টিভি বিজ্ঞাপন করেছিল। বিজ্ঞাপনটি ছিল এরকম-“মোবাইলের নেটওয়ার্ক খুজতে খুজতে একসময় বটগাছে উঠে নেটওয়ার্ক খোজাঁ”। এই বিজ্ঞাপনটি এখন আমার খুব মনে পড়ছে। কারণ নীচে আলোচনা করলামঃ
উত্তরায় ১১নং সেক্টর এ এসেছি প্রায় ৯মাস হতে চলল। নীচ তলাতে থাকি।
প্রথম দিন উঠেই মাথায় হাত, এ কোথায় এলাম। কোন মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। কথা বলতে হলে বাড়ীর বাহিরে যেতে হয়। আমি গ্রামীন এবং এয়ারটেল ব্যাবহার করি, আমার স্ত্রী করে গ্রামীন ফোন। শুধু গ্রামীন ফোন এ অল্প নেটওয়ার্ক ছিলো কিন্তু কথা বলা যেত না, কেটে যেত।
অভিযোগ জানালাম দুটো কর্তপক্ষকে। ঠিক হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করলো। এদিকে ইন্টারনেট লাইন ব্যাবহার করি কিউবি, সেটির অবস্থাতো আরো খারাপ, কোন সিগন্যাল পাচ্ছে না। আমরা চিন্তা করছি এটা কোন গ্রামে আসলাম। উত্তরার মতো আধুনিক এলাকাতে এসে অজপাড়া গাঁয়ের স্বাদ পাচ্ছি।
বড় অসহায় লাগছিল, কেউ ফোন করে পাচ্ছে না, ইন্টারনেটও ব্যাবহার করতে পারছি না। ৭দিন পর কিউবির টেকনিক্যাল লোক এসে বহু কষ্টে নেটওয়ার্ক আবিস্কার করলো জানালার পাশে। অনেক কিছু করে জানালায় সেট করা হলো মডেমটি। ব্যাবহার করতে লাগলাম, ফোন লাইনের কোন উন্নতি নেই। আবার অভিযোগ জানালাম, আবারো দেখছেন তারা।
প্রায় ৩মাস পর গ্রামীনফোন এর নেটওয়ার্ক পুরোপুরি আসলো। এখন পর্যন্ত শুধু গ্রামীনফোন ছাড়া আর কোন লাইন এখানে ব্যাবহার করা যায় না। কিউবিও অনেক ঝামেলা করে, এখন জানালায় নয় লাঠি দিয়ে জানালার বাহিরে দিয়ে ফ্রিকোয়েন্সি আনতে হয়। আমার বাড়ীতে অতিথিরা আসতে চান না, কারণ তাদের মধ্যে গ্রামীন ছাড়া যারা অন্য কোন লাইন ব্যাবহার করেন তারা সবাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। নেটওয়ার্ক এর জন্য তো আর হুট করে বাড়ী ছাড়া যায় না।
এটি কিন্তু শুধু আমার বাড়ীতে নয়,উত্তরার অনেক বাড়ীর নীচতলাতে এই একই সমস্যা। আমি নিজে গিয়ে দেখেছি। আমাদের দেশে বিভিন্ন ফোন কোম্পানি কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে অথচ উত্তরার মতো এলাকাতে এরকম অনেক উদাহরন দেখেও দেখেন না। অভিযোগ দিলে বলেন- “স্যার,অনেক বিল্ডিং একসাথে তো তাই, আমি তখন হেসে বলতাম ঢাকা শহরে ফাঁকা ফাঁকা বিল্ডিং খুজবো কোথায়। ”
উত্তরাকে মডেল টাউন হিসেবে কিভাবে উপাধি দেয়া হলো।
আর বড় বড় মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট কোম্পানি গুলো এখনো কেন তাদের নেটওয়ার্ক আরো উন্নত করছে না? আমার বাড়ীটি যদি অনেক ভেতরে হতো তাহলেও বুঝতাম। ১১নং সেক্টর এর মেইন রাস্তার পাশে অবস্থিত। তারপরও এই অবস্থা।
ডিজিটাল যুগে থেকেও এনালগ হয়ে আছি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।