আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বেচ্ছাচেবক দলের নেতা সরাফত আলী সপু কোথায় ? ইলিয়াসকে বিএনপি লুকিয়ে রেখেছে, এটা ক্রমশঃ পরিষ্কার হচ্ছে .।

স্বেচ্ছাচেবক দলের নেতা সরাফত আলী সপু কোথায় ? ইলিয়াসকে বিএনপি লুকিয়ে রেখেছে, এটা ক্রমশঃ পরিষ্কার হচ্ছে .। এই রিপোর্ট টি পড়ুন গায়েন্দারা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সরাফত আলী সপুকে খুঁজছেন ভোরের কাগজ / প্রথম পাতা : ২৪/০৪/২০১২ নেসারুল হক খোকন : বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সরাফত আলী সপুকে খুঁজছে গোয়েন্দারা। গত শনিবার রাতে ‘ইলিয়াস ভাই ভালো আছেন’ জানিয়ে তাহসিনা রুশদীর লুনার মোবাইলে সপু ফোন করেছিলেন বলে গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছেন। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গত শনিবার রাত থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন এককালে ঢাকা কলেজ কাঁপানো এই ছাত্রনেতা। একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২১ এপ্রিল (শনিবার) রাতে সরাফত আলী সপু ইলিয়াসপতœী তাহসিনা রুশদীর লুনার সঙ্গে কথা বলেন।

সপুর কথায় ‘ইলিয়াস ভাই ভালো আছেন’ এমন একটি উক্তিও ছিল। হাবিব নামে আরেকজন তাকে এই তথ্য নিশ্চিত করে ভাবীকে (লুনা) সংবাদটা জানাতে বলেছিলেন। এরপরই সপু লুনাকে শনিবার রাতে ফোন করে ইলিয়াস আলী সম্পর্কে অবগত করেন। ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ তাদের এই কথোপকথন বিষয়ে জেনে গোয়েন্দারা সপুকে খুঁজতে শুরু করেন। তবে ব্যাপার টের পেয়ে তিনি গা ঢাকা দিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন।

গোয়েন্দারা এর সঙ্গে হাবিব নামে আরো একজনকে খুঁজছে। তবে এই হাবিব বিএনপি বা তার সহযোগী সংগঠনে কোনো পদে আছেন কিনা সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। শনিবার রাতের কথোপকথনের পর সবকটি গোয়েন্দা সংস্থা তার অবস্থান নিশ্চিত করতে অভিযান চালায়। বর্তমানে তার টেলিফোন নম্বরটি বন্ধ। লুনার সঙ্গে ওই কথোপকথনের পর গোয়েন্দারা সক্রিয় হন।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, অপহরণের আগের দিন বিকেলে ইলিয়াস বিমানে সিলেট থেকে ঢাকায় আসেন। ওই দিন রাত ৯টা ৫ মিনিটে তিনি যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ আলী, মোনায়েম মুন্না ও আমজাদ হোসেনকে নিয়ে নিজ বাসা থেকে রূপসী বাংলা হোটেলের উদ্দেশে রওনা হন। সূত্র জানায়, ওই দিন যুবদলের ৪ ও ছাত্রদলের এক নেতাসহ মোট ৫ জন ২টি মোটরসাইকেলে ইলিয়াসের বাসায় গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ৩ জন তার সঙ্গে গাড়িতে বের হন। আর জাহাঙ্গীর আলম ও শরীফ হোসেন নিজ নিজ মোটরসাইকেলে বের হয়ে যান।

তারা রূপসী বাংলায় যাননি। সূত্র মতে, ওইদিন আগে থেকে রূপসী বাংলা হোটেলে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মীর সরাফত আলী সপু, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুন নবী সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী বাবু, কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম নীরবসহ মহানগর উত্তর দক্ষিণ কমিটির ৮-১০ জন নেতা এক গোপন বৈঠক করেন। বৈঠকে সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং ইতোপূর্বে যুবদলের কয়েকজন নেতা সিঙ্গাপুর গিয়ে তারেক রহমানের যেসব নির্দেশনা নিয়ে এসেছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া এবং যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন কমিটিতে রদবদলের বিষয় নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে তারা বিয়ার এবং মদ পান করেন বলে গোয়েন্দা সূত্র জানায়।

সূত্র আরো জানায়, ইলিয়াস নিখোঁজ হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিনজন সদস্য গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সরকারবিরোধী আন্দোলনের খবর বিদেশে কিভাবে জানানো যায় এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে সরকারবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে ইলিয়াস আলী অপহৃত হতে পারেন বলেও সূত্র জানায়। এছাড়া কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী তাকে অপহরণ করতে পারে বলেও গোয়েন্দারা সরকারকে গোপন প্রতিবেদনে জানিয়েছেন। তাহসিনা রুশদীর লুনা গতকাল সোমবার শয্যাশায়ী অবস্থায় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

তবে গত শনিবার পুবাইলে র‌্যাব ও পুলিশের অভিযানের সময় তিনি তাদের সঙ্গে ছিলেন কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান। তিনি শুধু বলেন, যেকোনো মূল্যে, যেকোনো শর্তে তিনি স্বামীকে ফেরত চান। এখন পর্যন্ত তার কাছে ইলিয়াসের বিষয়ে কোনো খবর নেই। কারো কাছ থেকে কোনো আশার বাণীও শোনা যায়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। সরকার বা দলের কোনো চাপ আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তাহসিনা রুশদীর বলেন, কোনো চাপ আমি ভয় করি না।

কে চাপ দেবে, কেন দেবে। আমার একটাই কথা, আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই। অনেক জায়গায় শোনা যাচ্ছে, ইলিয়াস আলী আপনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তাহসিনা রুশদীর বলেন, যোগাযোগ করলে তো বুঝতাম, তিনি আছেন। রুশদীর এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদের পাল্টা প্রশ্ন করেন, আপনারা তো অনেক কিছুই লিখছেন, আপনাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে আমাকে বলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

বিভিন্ন তথ্য চাচ্ছে। ইলিয়াস আলীর পারিবারিক চিকিৎসক ডা. আ ন ম মনোয়ারুল কাদির গতকাল বলেন, মিসেস ইলিয়াস স্বামীর চিন্তায় দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তিনি হাইপারটেনশনের রোগী। আজ (গতকাল) দেখলাম তিনি খুবই অসুস্থ। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে যে ধরনের লক্ষণ দেখা যায় তার মধ্যে সবই বিদ্যমান।

দুটি করে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছে না। উচ্চ রক্তচাপ না কমলে ব্রেনসহ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।