আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নর্ত্তকী রম্ভার নৃত্যে মোহিত যখন দেবতাগণ, নারদ মুনি করিলেন ভুল থাকিতে অর্ধশত স্ত্রীগণ!

পথ্য তো রোগীরও লাগে না ভালো! যদিও এটা তার রোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে,তথাপিও! মানুষ সৃষ্টির সূচনাতে ব্রহ্মা তার প্রিয় পুত্রগণদের সৃষ্টি করেন (প্রধান প্রধান দেবতাগণকে)। পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ভগবান ব্রহ্মা তার পুত্রদেরকে ডাকলেন। সর্ব প্রথম নারদমুনিকে সংসারধর্ম করতে বললেন। কিন্তু ভগবানপুত্র নারদ ব্রহ্মার কথা অস্বীকার করলেন। তিনি স্ত্রীগ্রহণ করতে এই মর্মে অস্বীকৃত জানালেন যে, স্ত্রী গ্রহণ করলে (সংসারী হলে) তিনি ঠিকমত শ্রীহরির আরাধনা করতে পারবেন না।

তাই তিনি সদাপিতা ব্রহ্মার নিকট কারণদর্শালেন এভাবে- "রমণী ভুজঙ্গী-সম এ বিশ্ব-সংসারে। ভজিলে রহিতে হবে ভব-কারাগারে \\" অর্থাৎ নারী হল সর্পের মত, নারীকে গ্রহণ করলে (নারীতে ভজনা করলে) তার দংশনে বা সেই পাপে পুরুষকে এই বিশ্বচরাচরে হীন হয়ে থাকতে হবে। নারী ভজনায় মত্ত থাকলে নারদের ধর্মকার্য্যে কমতি হবে এই ভেবে নারদ স্ত্রী গ্রহণ করলেন না। কিন্তু ভগবান ব্রহ্মা নারদের শ্রীহরি ভক্তির মর্যাদা না দিয়ে পিতৃ আদেশের অবাধ্যতার জন্য নারদকে অভিশাপ দিলেন- ব্রহ্মা কহে, হে নারদ! শাপের প্রভাবে। তব তত্ত্বজ্ঞান সব লুপ্ত হ'য়ে যাবে \\ মৃগ সম নারী-লুব্ধ লম্পটের মত।

শৃঙ্গারের অভিলাষী থাকিবে সবব \\ শৃঙ্গার-শাস্ত্রেতে তুমি পারদর্শী হবে। কামুক জনের তুমি গুরুরুপে রবে \\ ------------------------------- ------------------------------- শ্রীউপবর্হণ নাম হইবে তোমার। পঞ্চাশ রমণী লয়ে করিবে বিহার \\ বিলাসিনী সহ করি নির্জ্জনে বিহার। লক্ষযুগ পরে পুনঃ শাপেতে আমার \\ [/sb (ব্রহ্ম বৈবর্ত্ত পুরাণ, ব্রহ্মখন্ড,অষ্টম অধ্যায়, পৃষ্ঠা-৫৩, লেখক-ব্যাসদেব, সুবোধচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক সম্পাদিত এবং শ্রীঅরুণচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক দেব সাহিত্য কুটীর প্রাইভেট লিমিটেড, ২১ ঝামাপুকুর লেন, কলিকাতা-৯ থেকে প্রকাশিত) ব্রহ্মার শাপে নারদ পৃথিবীতে জন্ম গ্রহল করে পঞ্চাশ জন স্ত্রী গ্রহণ করলেন। ব্রহ্মশাপেতে মহাদেব শিবের বরে পুত্রহীন গন্ধর্ব্বরাজের ঘরে ব্রহ্মাপুত্র নারদমুনি জন্ম গ্রহণ করে তিনি গন্ধবর্বনন্দন নামে পরিচিত হন।

পিতৃশাপে নারদের হইল পতন। গন্ধর্ব্বযোনিতে তিনি করেন ভ্রমণ \\ জর্ন্মের পর গন্ধর্ব্বনন্দন গন্ডকীতীরে বশিষ্ট মুনির কাছে হরিমন্ত্র শিক্ষা করতে যান। একদিন গন্ধর্ব্বনন্দন ভক্তিযুক্ত হয়ে পবিত্রমনে গন্ডকীতীরে তপস্যায় বসলেন। সে সময় নদীতীরে গন্ধর্ব্বরমনীগণ স্নান করতে এসে যুবক নারদের সৌন্দর্য্যে মোহিত হল। সকলেই নারদকে পতি হিসাবে পাবার আকুতি জানাল।

নারদকে পতিরুপে না পেয়ে গন্ধর্ব্বনারীগণ যোগবলে দেহত্যাগ (আত্মহত্যা) করল। গন্ধবর্বনারীগণ পুনঃ চিত্ররথ গন্ধবের্বর ঘরে জন্ম নিয়ে গন্ধবর্বনন্দন নারদকে পতিরুপে পায়। গন্ধবর্বনন্দন নারদ শ্রীহরির জপতপ সাঙ্গ করে চিত্ররথের (কন্যা) গান্ধবর্বনারীদের সঙ্গে রতিটীড়ায় মগ্ন হন। একাধারে নারদমুনি তিনলক্ষ বছর (পৃথিবীর হিসাবে ১২ মাস= ১ বছর, আর দেবতাদের হিসাবে তা ১ দিবারাত্রি, তাহলে দেবতার তিনলক্ষ বছর= পৃথিবীর হিসাবে ১০,৮০,০০,০০০ বছর) গান্ধবর্বরমনীদের সাথে রতিক্রীড়া করেন। পৃথিবীর সময়ে হিসেব করলাম এইজন্যে যে, তিনি উক্ত লীলা পৃথিবীতেই করেছিলেন।

গন্ধবর্ব লভিল পুত্র অতি মনোহর \\ পুত্র-মুখ দেখি মহা আনন্দিতমন। জনে জনে দান করে বহুরত্ন ধন \\ কিছুকাল গত হ'লে গন্ধবর্বতনয়। বশিষ্ঠ দেবের কাছে হরিমন্ত্র লয় \\ একদা গন্ডকীতীরে উপবরহণ। দুষ্কর তপস্যা করে ভক্তিযুক্তমন \\ গন্ধবর্বরমণীগণ স্নান করিবারে। আসিলেন সে সময় গন্ডকীর ধারে \\ যুবকের অপরুপ লাবণ্য নেহারি।

মূচ্ছিতা হইয়া পড়ে গন্ধবের্বর নারী \\ যুবকেরে পতিরুপে লভিবার তরে। যোগবলে রমণীরা দেহত্যাগ করে \\ অনন্তর নারীগণ, শুন মহাশয়। চিত্ররথ গন্ধবের্বর ঘরে জন্ম লয় \\ লভিয়া যৌবন ক্রমে পিতার আজ্ঞায়। উপবর্হণেরে তারা পতিরুপে পায় \\ জপ-তপ বিসর্জ্জিয়া গন্ধবর্বনন্দন। রমণী সহিত হৈল আনন্দে মগন \\ তিনলক্ষ বর্ষ রহিহ নির্জ্জন-প্রদেশে।

রতিরঙ্গ করে সুখে মদন-আবেশে \\ এরপর নারদমুনি সিংহাসনে বসলেন। রাজ্য আর প্রজা প্রতিপালনে ব্যস্ত নারদ অনন্তর একদিন হরিগুণ গানে পুকুরের ধারে যান। যেখানে দেবগণ সমবেত হয়ে রম্ভার নৃত্য উপভোগ করছিলেন। এমন সময় গন্ধবর্বকুমার নারদ নৃত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে একাগ্রচিত্তে রম্ভার নৃত্য দেখছিলেন, রম্ভার সুন্দর উরু, সুগঠিত স্তন দেখে গন্ধবর্বনন্দন নারদ কামভাবে মোহিত হয়ে পড়লেন। অনুষ্ঠানেই নারদের রেতঃপাত (বীর্যপাত) হল।

সিংহাসনে তারপর করি আরোহণ। রাজ্য আর প্রজা সব করেন পালন \\ অনন্তর একদিন হরিগুণ গানে। গন্ধবর্বনন্দন যায় পুষ্করের পানে \\ তথা দেবগণ সহ মিলি পদ্মাসন। মনসুখে দেখিছেন রম্ভার নর্ত্তন \\ মনের আনন্দে তথা গন্ধবর্বকুমার। একমনে নৃত্য দেখে অপ্সরী রম্ভার \\ রম্ভার সুন্দর উরু করি দরশন।

সুবআত্তুল স্তন তার করি নিরীক্ষণ \\ মদনে মোহিত হৈল গন্ধবর্বকুমার। রেতঃপাত হৈল তাঁর সভার মাঝার \\ হরিগুণ নাহি গায় গন্ধবর্বনন্দন। কামাবেশে হত-জ্ঞান হউল তখন \\ এই জন্য উপস্থিত দেবতাগণ এবং দেবতাদের দেবতা ভগবান ব্রহ্মা স্বীয়পুত্র নারদমুনিকে পুনরায় অভিশাপ দিলেন এভাবে- হাস্য করে দেবগণ দেখিয়া কুমারে। মহা ক্রোধে পিতামহ শাপ দিলা তারে \\ হরিগুণ গান করি, তুই দুরাচার। কাম শরে বিস্মরিলে আচার-বিচার \\ ----------------------------- ----------------------------- ব্রহ্মা কহে নীচাশয় পাপিষ্ঠ পামর।

শূদ্রের যোনিতে তুই জন্মলাভ কর \\ (ব্রহ্ম বৈবর্ত্ত পুরাণ, ব্রহ্মখন্ড,দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ অধ্যায়, পৃষ্ঠা-৬৭-৭০, লেখক-ব্যাসদেব, সুবোধচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক সম্পাদিত এবং শ্রীঅরুণচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক দেব সাহিত্য কুটীর প্রাইভেট লিমিটেড, ২১ ঝামাপুকুর লেন, কলিকাতা-৯ থেকে প্রকাশিত) পঞ্চাশ জন স্ত্রী ঘরে থাকা স্বত্ত্বেও ভগবানপুত্র নারদমুনি (গন্ধবর্বনন্দন) নর্ত্তকী রম্ভার রুপে মোহিত হয়ে কি করে রেতঃপাত (বীর্যপাত) ঘটালেন? সূত্রঃ "ভ-তে ভগবান ল-তে লীলা" মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান http://www.oneallah.org/ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।