আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের রাজনীতিকদের শিশুসুলভ আচরন আর বিশ্বমন্দার কালো মেঘ

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি আজ দুপুরে বসে বসে একটা ডকুমেন্টারী দেখছিলাম বিশ্বমন্দা নিয়ে। ২০০৬ থেকে শুরু করে ২০১০ পর্যণ্ত বিভিন্ন উন্নত দেশের অর্থমন্ত্রী আর ইকোমিস্টদের কথা আর বাজারের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিলো মোটামুটি সবাই জানতো বিশ্ব অর্থনীতি একটা মন্দা আসছে। নানান ভাবে তাকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলো। কেউ কেউ সামাল দিলো আবার কেউ কেউ যেমন আয়ারল্যান্ড গ্রীস ব্যর্থ হলো। এখন সবাই মিলে আয়ারল্যান্ড, ইটালী আর গ্রীসকে বাঁচাতে চেষ্টা করছে।

সব কিছু দেখেশুনে একটা বিষয় পরিষ্কার যে - যে দেশগুলো মন্দা ঠেকাতে পেড়েছে - আসলে তারা পরবর্তী ৩ প্রজন্মের আয় থেকে সব কিছু ধার করেছে - অর্থাৎ আজকের আমাদের খরচ মেটাতে আমরা যে ঋন করছি তা শোধ করবে আমার সন্তান, তার সন্তান এবং তার সন্তান। কিন্তু এই ব্যবস্থা খুবই সাময়িক। এদিকে কর্পোরেট গ্রুপ রাজনীতিকে এমনভাবে অক্টোপাশের মতো বেঁধে ফেলেছে যে উন্নতদেশের কোন সরকারই আসলে জনগনের কল্যানে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। শুধু মাত্র আমেরিকায় একজন নির্বাচিত রাজনীতিকের বিপরীতে ৫ জন লবিষ্ট আছে যারা কর্পোরেটের পক্ষে রাজনীতিকদের প্রভাবিত করে। তাই অকিপাই ওয়াল স্ট্রীট বা আমার ৯৯ ইত্যাদি আন্দোলনের ঢেউ সরকারগুলোর কাছ পৌছে না।

কর্পোরেট গ্রুপের ক্ষমতা এতোই গভঅরে যে - ওয়াল্ড ইকোনমী রিফর্মের পক্ষে কথা বলার কারনে আই এম এফ এর প্রধান ট্রাস কান ( ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে যাকে দেখা হতো) তার সব কিছু হারিয়েছেন এক কেলেংকারীর সাজানো ঘটনায়। এই ডকুমেন্টারীর মুর বক্তব্য ছিলো - যদি চায়না আর ভারত তাদের গ্রোথ রেইট আর অর্থনৈতিক নীতিমালা স্বচ্ছ না করে - তাহলে অচিরেই বিশ্ব আরেকটা মন্দার মধ্যে চলে যাবে। (২) লক্ষ্যনীয় যে গত মন্দায় বাংলাদেশে আর ব্রাজিল নিজেদেরকে বাঁচাতে পেরেছিলো। ব্রাজিলের বিষয় ঠিক জানি না - তবে বাংলাদেশে মুলত রেমিটেন্সের কারনেই মন্দার প্রভাব থেকে রক্ষা পেয়েছে। তা ছাড়া সস্তা শ্রমিক দিয়ে কাপড় সেলাই শিল্পও এই ক্ষেত্রে অনেকটুকু অবদান রেখেছিলো।

কিন্তু ভবিষ্যতে কি হবে? বাংলাদেশের প্রধান দুইটি রাজনৈতিক শিবির - হাতের কাছে যাকে পাচ্ছে তাকে নিয়েই জোট করে ভোটের সংখ্যা বাড়াচ্ছে আর বলছে অপরের দূর্নীতি কথা। ১৭ কোটি মানুষের জন্যে একটা আধুনিক দেশ তৈরীর জন্যে যে প্রস্তুতি দরকার, প্রযুক্তিগত আর নীতিগত তার কোনটাই কি দেখছি। দুই প্রধান নেত্রীরা রাজনীতিকের চেয়ে জৌতিষ হিসাবে ভাল ভুমিকা রাখছেন। একজন এক সেকেন্ড চিন্তা না করেই বলে দিলেন - এইটা রেবের কাজ। অন্যজন আজ বলে দিলেন - এইটা একটা নাটক।

বাহ! আর চিন্তা নাই। হয় রেব ফেরত দেবে - না হয় সরকার পতন। মানে রাস্তায় গাড়ী ভাংচুর, সন্ত্রাস আর অনেকগুলো কর্মহীন দিবস। পৃথিবীর আর কোন দেশে মনে হয় না এতটা কাউন্টার প্রডাক্টিভ কাজকাম হয়। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ - কে তাকে খুঁজবে? পুলিশ আর আইন শৃংখলা রক্ষার বাহিনী।

ইলিয়াসকে খোঁজার চেয়ে অনেক বেশী ব্যস্ত হয়ে আছে পুলিশ রাস্তায় গাড়ী ভাংচুর ঠেকাতে। এইটা এপ্রিল - মে তারপরই বাজেট আসবে। এখন দেশের রাজনীতিতে মূখ্য বিষয় হওয়া উচিত বাজেট আলোচনা। এই বাজেটের দর্শন কি হবে - আগামী দশকের জন্যে কি কি প্রস্তুতি থাকবে - বৈষিক উষ্ঞতাকে কিভাবে মোকাবেলা করবে বাংলাদশে - আরকেটা মন্দা থেকে কিভাবে রক্ষা পাবে দেশ - দেশের অগ্রগতি আর মানুষের জীবনযাত্রার মান কিভাবে বাড়বে - সেই আলোচনায় মুখর হয়ে থাকবে মিডিয়া। পত্রিকাগুলো বাজেট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা সুযোগ দেবে বিশেষজ্ঞ আর সাধারন মানুষকে।

তা না হয়ে টিভির খবরের প্রথম পাঁচটা হেডলাইনই হলো কাউন্টার প্রডাক্টিভ কাজ। ভাংচুর আর রাজনৈতিক হুমকী ধামকি। অবশেষ ৬ নাম্বারে শুনলাম ইলিয়াসকে পাওয়া যায়নি। ইলিয়ার এখন একটা উপলক্ষের নাম - সেই উপলক্ষকে ঘিরে দুই দল যেভাবে নিজেদের কর্মকান্ড গুলো প্রদর্শন করছে - তা শুধুমাত্র শিশুদেরই মানায়। একটা জনসংখ্যার ভারেনূহ্যমান দেশের কিছু সুবিধাভোগী শ্রেনী দুই ভাগে ভাগ হয়ে দেশে একটা কৃত্রিম সংকট তৈরী করছে - যাতে এরা নিজেদের অপকর্মগুলো থেকে সাধারনের দৃষ্টি সরিয়ে বোকা বানিয়ে রাখতে পারবে।

যে সম্প্রদায় (জাতি) নিজেদের ভাল বুঝে না - তাকে কে সাহায্য করবে। সব কিছু দেখি আর ভাবি - পাগলেও নিজের ভাল বুঝে - শুধুমাত্র বাংলাদেশের সুবিধাভোগী আর অসাধারন মানুষগুলো ছাড়া। এরা ভাবেনা আজকে যা রোপিত হবে -তা ফসল কাল তাকেই ভোগ করতে হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.