আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোন পিচ্চিকে প্রথম প্রাইভেট পড়ানো ও আমার সামান্য লুল ট্যাগ খাওয়া

ব্লগার না পাঠক হওয়ার চেষ্টায় আছি এক সকালে বারান্দায় দাঁড়াইয়া চা খাওনের পাশাপাশি পত্রিকা পড়িতেছিলাম। পরথম আলু আবার আমার বিশেষ পছন্দের পত্রিকা। ইহার খেলার সংবাদ বিশেষ ভালু পাই। তাছাড়া নকশা আর আনন্দ পাতাও আমার কিঞ্চিত বেশি ফেবারিট। কি জন্য ফেবারিট তাহা নিশ্চয়ই বুঝাইয়া কহিতে হইব না।

লুল ভাই-ব্রাদারগন বুঝিয়া লন। যাহা হোক, পেপারে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অবস্থা মনযোগ সহকারে পড়িতেছিলাম আর ভাবিতেছিলাম এই মনযোগ সহকারে পড়ালেখা করিলে আমি বঙ্গদেশে পরথম কেলাসে পরথম হইতাম। এমুন সময় আমার পেয়ারটেল মুবাইলে আসিল কল। কল ধরিতে কষ্ট লাগিতেছিল। তাও ধরিলাম।

এক বড় ভাই ফুল দিয়াছেন। _ ওই মিয়া, তুমি কই?? -ভাইয়া, বাসায়ই আছি। -বিকালে ফ্রি আছ? -আছি ভাইয়া। -তাইলে, এইদিকে চইলা আস। চা- পান খাওয়ামু।

চায়ের কথা শুনিয়া মনটা আনন্দে উতলা হইয়া উঠিল। কহিলাম -এখনি আসি। -না, এখন একটু বিজি। মন খারাপ হইয়া গেল। ফ্রিতে খানা-পিনা করতে কার না ভাল লাগে!! বৈকালে গেলাম।

চা-পানও খাইলাম। ভাইয়ের লগে মেলা দিন পর দেখা। বিস্তর আড্ডা দিলাম। তারপর উনি আসল কথা খানা কহিলেন। উনার একখান উফকার করন লাগব! উনার ঘনিষ্ঠা বান্ধবীর ভাইগিনারে পড়ানো লাগব।

কথাক্রমে জানিলাম ভাগিনা কেলাস টুতে পড়ে! শুনিয়া আমি আসমান হইতে ভূতলে পতিত হইলাম। শেষকালে এই পিচ্চিকেও পড়ানো লাগব। তবে একটাই সান্তনা, পিচ্চি ইংলিশ ভার্সনে পড়ে। সেই রাতেই ফুন আসিল। আমি আর্টসেলের “তোমরা কেউ কি দিতে পার প্রেমিকার ভালোবাসা” গানখানা শুনিতেছিলাম।

মন খানা এমনিতেই উদাস হইয়া ছিল। তাও ফুন ধরিলাম। ফুনে এক রমনীর কন্ঠে কিঞ্চিত তব্দা খাইয়া গেলাম। মাইয়াগো সাথে আমার বিশেষ খাতির নাই। তাই উহাগো সাথে কথা কইবার গেলে গলা কাঁপে।

যা হোক, কথা কওনের পরে বুঝিলাম উহা আমার হবু স্টুডেন্টের খালা। কথা- টথা কইয়া ঠিক হইল পরের দিন উনি আমাকে কল দিবেন এবং বাসার লুকেশন দিবেন। পরের দিন সকালে যথারীতি আমি ক্লাসে গেলাম। আমি এক লুল স্যারের ক্লাস করিতেছিলাম। স্যার ভাল, তয় মেয়েদের প্রতি উহার কিঞ্চিত বেশি দরদ।

হঠাত মোর মুবাইল বাজন আরম্ভ করিল। ভাগ্য ভাল মুবাইল সাইলেন্ট মুডে ছিল। যেহেতু মিঃ লুল ক্লাসে ছিলেন সেহেতু ফুন আর ধরনের সাহস পাই নাই। তয় নাম্বার দেইখা বুঝছি এইডা ওই বড় আফা মণির। ক্লাস শেষে উহাকে কল দিলাম।

উহা ফুন ধরিতেই আমার দেরি হওনের কারন জানিতে চাইলেন। কহিলাম- আমি কেলাসে। উহা বোধ হয় আমার কথা শুনিয়া শান্তি পাহিলেন। যাহা হোক, ঠিক হইল বৈকালে আমি উহাদের বাসায় যাব। ক্লাসে শেষে দুপুর বেলায় বাসায় আসিয়া টায়ার্ড হইয়া খাওয়া-দাওয়া সারিয়াই কঠিন এক ঘুম দিলাম।

ঘুম ভাঙ্গিল উহার ফুন কলে। উনি আমাকে উনার বাসার সামনের শপিং সেন্টারে আসিতে বলিলেন। যথারীতি যথাস্থলে আসিয়া উপস্থিত হইয়া উনাকে খুজিয়া পাইলাম। ভাবিলাম, তাড়াতাড়ি পড়াইয়া বাসায় গিয়া রেস্ট নিমু। কিন্তু কিসের কি! উনি আমাকে কহিলেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু (মনে হয় বয়ফ্রেণ্ড) কিঞ্চিত ব্যস্ত।

তাই উনি একা একা শপিং এ আসছেন এবং কিছু কেনা-কাটা করিয়া তারপর আমাকে লইয়া বাসায় যাইবেন। মনে মনে অতিশয় বিরক্ত হইলেও উহার প্রস্তাবে রাজী হইলাম। তারপর ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আমাকে এক ঘন্টা কাল উহার লগে এক দুকান হইতে আরেক দুকানে চরকির লাহান ঘুরিতে হইল। উনি একটা শাড়ি কিনিবেন। কিন্তু কোন শাড়িই উনার পছন্দ হয় না!! আর দুকানদার গুলাও না কি!! একটার পর একটা বাইর কইরা কইরা দেখাইতাছে!! এমনিতেই আমি টায়ার্ড, তারওপ্রে এই লাটিমের মত ঘুড়তে ঘুড়তে আমার অবস্থা অক্টেন হইয়া গেল।

অতীব ঘুড়াঘুড়ির মাঝে মাঝে সল্প-বসনা তরুনীকুলকে দেখিয়া মাথা এক্কেবারে চক্কর দিয়া উঠিতেছিল!! মাঝে আফামণি একবার প্রশ্ন করিলেনঃ তুমার কি খারাপ লাগতাছে? আমি না বোধক উত্তর দিলাম। যাহা হোক, শেষ পর্যন্ত ঈশ্বর আমার প্রতি সদয় হইলেন কারণ সৃষ্টি-কর্তার অপার মহিমায় উনার একখানা শাড়ি পছন্দ হইল। অতঃপর দুকানদারের লগে কিছুকাল দামাদামি লইয়া ঝগড়া করিয়া শাড়ি লইয়া উনি বাহির হইয়া আসিলেন। ঘটনা এইখানেই সমাপ্তি হইত যদি আমি উনার লগে লগে বাহির না হইতাম!! মার্কেটের পাদদেশে আমার কিছু বন্ধুকুল বসিয়া আড্ডা দিতেছিল। এমন সময় আমি আর আফামনি মার্কেট হইতে বাহির হইলাম।

আমার বন্ধুকুল মনে লইল ইহা আমার গেরালফ্রেন্ড। অতঃপর ওইখানেই বন্ধুমহলের কাছে আমি সামান্য লুল ট্যাগ খাইলাম লুকাইয়া লুকাইয়া পিরীতি করার জন্য!! ভাগ্য ভাল তখন উহারা আমার কাছে ডাইরেক্ট আইসা কিছু কয় নাই! তাহা হইলে স্টুডেন্টরে পড়ানোর পরিবর্তে উনার সুন্দরী আফা-মণিই আমারে পড়াইতেন। অতঃপর আফামণির সাথে উহার বাসায় উহার ভাগিনাকে পড়াইতে গেলাম। এরপর আমার বন্ধুকুলকে বুঝাইতে কয়েকদিন সময় লাগিল যে উনি আমার ফ্রিয় আফা-মণি এবং আমি লুল নহি। উল্লেখ্য, আফা-মণির লগে এর পর আর কোথাও যাওয়া হয় নাই।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।