আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমেরিকা---আমেরিকা---সুদুরের কুহেলিকা

আমেরিকা হ'ল পৃথিবীর 'পুলিশ' জানিনা এই বিনামূল্যের চাকরিটা কে তাকে দিয়েছে। ইচ্ছে হলেই যেখানে সেখানে হাত লাগায়, নাক ঘষে। যুদ্ধ লাগিয়ে মানুষ পর্যন্ত 'Shock and Awe' কারো বাপের বুকের পাটা নেই এদের পা'টা না চাটে---দেখলাম তো কতোই এখন কথা উঠছে বিরোধী দলীয় নেত্রী কি এতোই প্রভাবশালী যে তাঁর বচন শুনবেন পৃথিবীর সবচে ক্ষমতাধর ব্যাক্তিটি? হুম! আমেরিকা সবসময়ই চায় তাকে যারা পদলেহন করে তারাই সেই সব গরীব দেশগুলোর ক্ষমতায় থাকুক। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সরাসরি বিরোধীতাই শুধু নয়--আমাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানিদের শক্তি বাড়াতে সপ্তম নৌবহর পর্যন্ত পাঠিয়ে দিয়েছিল তারা ----বিরোধী জোটতো সেই স্বাধীনতা বিরোধীদেরই জোট। আশ্চর্য হবার কি আছে? প্রায় প্রতিষ্ঠিত সত্য যে বঙ্গবন্ধু হত্যা স্বড়যন্ত্রের সব কথাই আমেরিকা জানত।

সেই সময়ের গোপন নথি পত্রও অনেক বেরিয়েছে। যাহোক! প্রশ্ন তো আরো আছে--- এতো বছর ঝুলে থাকার পর এই জিএসপি সুবিধা স্থগিত করতে দেশের জাতীয় জাতীয় নির্বাচনের সময়টাই বা বেছে নেয়া হল কেন? উদ্দেশ্য না বুঝলে কাউকে বোঝানো যাবে না--- তাছাড়া আমাদের পোশাকশিল্প খাতে যতগুলো দূর্ঘটনা লাগাতার ঘটেছে, শ্রমিক বিদ্রোহ ঘটেছে--সেই সব শ্রমিকদের আন্দোলনের মেজাজটা দেখলেই বোঝা যেতো কত হিংসাত্মক ছিল---আগুন, জ্বালাও পোড়াও---যেনো দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাক। এই সব আন্দোলনের পিছনে এই শিল্পখাত ধ্বংসের ষড়যন্ত্র ছিলনা এমন ভাবারও কোন কারন নেই। অনেক দূর্ঘটনারই কারণ অনাবিষ্কৃত--কিছুতো দূর্ঘটনাই--কিছু আছে রহস্যাবৃত। এইসব রহস্যের কিনার হবে না কখনই হয়তো।

একজন শ্রমিক নেতা হত্যার কথা নিয়ে সিএনএন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে ধরেছিল তাঁর সাক্ষাৎকারে--যিনি আসলে পরিচিত কোন শ্রমিক নেতাই ছিলেন না বলে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করায় আমানপুরা সংবাদ প্রকাশের নিয়ম নীতির বাইরে গিয়ে, কোন সম্পূরক তথ্য বা সূত্র দিতে ব্যার্থ হয়ে প্রসঙ্গ পাল্টেছিলেন এই বলে---'আমাকে এই ভাবে বলা হয়েছে' সে যাই হোক! আমাদের শিল্প কারখানাগুলো তে শ্রমিকের নিরাপত্তা যে আরো বাড়াতে হবে এতে দ্বিমত করার কারণ নেই, শ্রমকের মজুরী আরো মানবিক পর্যায়ে উন্নিত করতে হবে দ্রব্যমূল্যের এই অগ্নি বাজারে তাতেও দ্বিমত নেই কিন্তু এই সমস্যা তো দীর্ঘদিনের---সব দেশেই এরকম ধীরে ধীরে সব কিছু উন্নত হয়েছে--আমাদেরও হচ্ছে, সরকারেরও টনক নড়ছে। এই পর্যায়ে আমেরিকা যা করতে পারত তা হল একটি গরীব দেশের অর্থনীতিকে এভাবে একটা ধাক্কা না দিয়ে সময় বেঁধে দিয়ে কারখানার পরিবেশ উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখতে পারত---যা তারা করবে বলে এখন বলছে। এই ঘোষনাটা দিতে হল কেন তবে? না কি 'ইউনুস' সাহেবের জন্য সরকারের অর্থমন্ত্রী যা করছেন সেখানে আমেরিকার কথা না শোনার জন্য এক ধরণের সাময়িক হুমকী/নিয়ন্ত্রণ আরোপ? বিশ্বাস করি ইউনুস সাহেব আমাদের জন্য সম্মানের এক মহান পুরষ্কার এনে জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছেন কিন্তু তাই বলে একটি দেশে ওনার রাজনোইতিক ভূমিকা নিয়ে কি আমরা তাঁকে মূল্যায়ন করতে পারব না? ইনিই বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারারের পাতানো নির্বাচনে সবাইকে অংশ গ্রহন করাতে মাঠ সরব করেছিলেন আমরা ভুলে যাই নি---ভুলে যাইনি সেই সামরিক তত্ত্বাবধায়কের রাজনীতি নিষিদ্ধ সময়ে কিভাবে একলা রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করেছিলেন----যা গণতান্ত্রীক রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানোর সামিল ছিল। তাছাড়া নোবেল শান্তি পুরষ্কার তো ইসরাইলের সবচে নিষ্ঠুর প্রেডেন্টও পান যিনি শান্তির সকল প্রশান্তি ট্যাঙ্কের গোলায় গুঁড়িয়ে দেন, শিশু হত্যা করেন, প্রসুতি নারী হত্যা করেন------তাই এই পুরষ্কার সম্পর্কে আমার ধারণা হাস্যকর। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হবার প্রায় সাথে সাথেই এই শান্তিবেল পেলেন --পৃথিবী যখন তাঁর কোন ভূমিকাই প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পায় নি, লজ্জায় ওবামা নিজেই বলেছিলেন--আমি এই পুরষ্কারের মোটেই যোগ্য নই।

তারপর? হুম! অর্থনৈতিক কর্মান্ডের জন্য যখন শান্তিতে নোবেল দেয়া হল তখনই মনে হয়েছিল এটা কেন হল? সে যাই হোক! নিঃসন্দেহে আমি গর্বিত বাঙ্গালী ইউনুস সাহেবের অর্থ কর্মে শান্তি তে পুরষ্কার অর্জনে। প্রথম আলো শুনেছি ইদানিং এই প্রসঙ্গটি এলে ব্রাকেটে লিখে দেয় ( অর্থনোইতিক কর্মকান্ডে জগতে শান্তি আনয়নের জন্য এই পুরষ্কার) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট খুব ব্যাস্ত মানুষ। বিষয়টা আমেরিকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছিল। স্টেট ডিপার্টমেন্টের বানিজ্যিক উইং এই কাজটি করতে পারত কিন্তু এই বিষয়টা যেভাবে খোদ ব্যাস্ততম প্রেসিডেন্ট রীতিমত সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন তাতে বোঝাই যাচ্ছে এটির পিছনে আমেরিকার রাজনীতি আছে। এতোই কি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই বিষয়টা আমেরিকার জন্য যেখানে স্বল্প মেয়াদে এই ঘোষনাটি আমাদের রপ্তানী বাণিজ্যে অতোটা প্রভাব ফেলার মতোও নয়----তাছাড়া এটা বন্ধও তো করা হয় নি--কেবল কিছু শর্ত দিয়ে স্থগিত করা হয়েছে মাত্র।

ঘোষণাটি তাদের বাণিজ্য মন্ত্রনালয় থেকে এলে এই প্রশ্নগুলো উঠত না। জানিনা----বুঝিও না----তবে আমেরিকার পুলিশী নিয়ন্ত্রণমূলক মনোভাবের সাথে পরিচয় আছে বলেই ভীত হই। তারা কাদের আবার ক্ষমতায় দেখতে চায়--সেই ভাবনাটা জেগে ওঠে। কবি Hassanal Abdullah এর শকুন কবিতাটি মনে পড়তে থাকে শুধু---শকুনেরাই ভাল থাকে----- ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।