আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘বেডরুম পাহারা দেয়া সম্ভব নয়’ নাহয় মানলাম, কিন্তু খুনিকে শাস্তি দেয়াও কি সম্ভব নয়......??

পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে.. বেডরুম পাহারা দেয়া সম্ভব নয়, রাস্তাও পাহারা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা, সীমান্তে নাগরিকের নিরাপত্তা পাহারা দেয়া নিয়ে রাষ্ট্র চিন্তিত নয়, অকাতরে ক্ষমা পেয়ে যাচ্ছে খুনীরা, অধিকাংশ তো ক্ষমতার জোরে গ্রেপ্তারই হচ্ছেনা অর্থাৎ, খুনী তথা অপরাধীদের শাস্তিবিধান করাও সম্ভব হচ্ছেনা.......তাহলে সরকারের আর প্রয়োজন কী ......? তাদের নিরাপত্তা যদি নিশ্তিত করা না যায় তবে নাগরিকেরা কেন কোটি কোটি টাকা ট্যাক্স দেবে সরকার কে ? এমন সহজ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার কেউ কি আছেন সরকারে...??? সাগর-রুনির হত্যাকান্ড নিয়ে চারদিকে ব্যাপক হইচই হচ্ছে । নিজে একজন সংবাদকর্মী এবং গণমাধ্যম শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও বলছি, মাত্র দুজন ব্যক্তির হত্যাকান্ড নিয়ে এত মাতামাতির কিছু আছে বলে আমার মনে হয়না। কারণ, প্রতিদিনই বাংলাদেশে কমপক্ষে ১০/১২ খুন হচ্ছেন, যার ৮০ শতাংশেরই বিচার হচ্ছেনা, রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে বা আইনের দৃষ্টিতে তারাও সাগর রুনির মতই মানুষ। তবে সাংবাদিকদের আন্দোলনের সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না, শুধু বলতে চাচ্ছি প্রতিটি নাগরিকের হত্যার পর এমন আন্দোলন হওয়া উচিত। টনক নড়া উচিৎ সরকারের হাই কমান্ডের।

তাহলেই হয়তো অপরাধ হ্রাস করা সম্ভব। কিছুদিন আগে প্রথম আলো পত্রিকায় দেখলাম, যশোরে ১৩ মাসে খুন হয়েছেন ১১০ জন !!! যাদের অধিকাংশেরই বিচার হয়নি। আমার নিজ এলাকার একটি উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে দেশে আইনের শাসনের কী অবস্থা!!!..... আমি তখন খুব ছোট। সম্ভবত, ক্লাস ফোরে পড়ি। আমাদের বাড়ির পাশেই ছিল সরকারি কলেজ।

সেখানে সরকারী দলের মাস্তানরা প্রতিনিয়ত আবির্ভূত হচ্ছিল তখন। একদিন কলেজে প্রকাশ্যদিবালোকে নারীঘটিত কারণে হত্যা করা হয় কলেজের সাধারণ ছাত্র নয়নকে। হত্যাকারী তৎকালীন সরকারী দলের সদ্য আবির্ভূত মাস্তানদের একজন। দু;খজনক হলেও সত্য, প্রকাশ্যদিবালোকে ছাত্র-শিক্ষকের সামনে হত্যা করা হলেও গ্রেফতার হতে হয়নি খুনিকে। বরং আগের মতই দাপটে সরকারের বাকী সময়টা কেটে যায় তার।

মাঝে ৭ বছরের প্রবাস জীবন আবার এলাকায় ফিরেছে সে। এখন চলছে তার রাজত্ব। চাদাবাজি, একই দলের প্রতিপক্ষের সাথে মারামারি ইত্যাদি ইত্যাদি। সাগর-রুনি, সৌদি কূটনৈতিক খালাপ এবং প্রতিদিন দেশে যে সকল হত্যাকান্ড ঘটছে তা বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, সাধারণ মানুষ কিংবা অপরাধীদের কাছে খুন করলে সবসময় বিচারের কাঠ গড়ায় দাড়াতে হয়না, এ বার্তা পৌছে গেছে। এর জন্য বর্তমান এবং অতীতের সরকারগুলো দায়ী।

আমাদের জাতির পিতা হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে ৪০ বছর পর, খুনী বিপ্লব রাষ্ট্রপতি মহোদেয়ের কৃপা ধন্য হয়েছেন হত্যা করার ১০ বছর পর। খুনিকে রক্ষা করতে সাবেক এক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রি বিশ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। এ ঘটনা গুলিই কি অপরাধীদের বার্তা দেয়নি যে, খুন করলে বিচারের মুখোমুখে হতে হয় না সব সময়...??? এর জন্য কারা দায়ী...??? আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার পেছনে আমাদের বিচারিক পদ্ধতি অনেকাংশে দায়ী। স্বাধীনতা লাভের ৪০ বছর পরও আমরা এমন একটি পদ্ধতি তৈরী করতে পারিনি যাতে অপরাধীর বিচার নিশ্তিত করা যায়। পদ্ধতিটি সংস্কার না করে বিগত জোট সরকার প্রবর্তন করেছিল ঘৃণ্য ক্রসফায়ার।

যা রাষ্ট্রকে হত্যার স্বীকৃতি প্রদান করেছে। যার ফল এখন গুপ্তহত্যার মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.