আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

syed ashraful islam is syed ashraul islam ...whether u admit or not, it makes nothing but syed ashraf is syed ashraf

ফিরে দেখা : রাজনীতির যোগ্য উত্তরসূরি নুরুল আলম পাঠান মিলন সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত সমস্যা ও সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কিত মিডিয়া ও সংসদে দেয়া সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দুটি বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সমালোচনা হবে এবং হওয়া উচিত। নিজ সংগঠন ও শুভাকাক্সক্ষীরা যেমন সমালোচনা করবে, আবার বিরোধী দল অথবা শত্রুপক্ষও সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জাতীয় নেতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে, এ পরিচয়ের বাইরেও অনেক পরিচয় বহন করেন তিনি।

ষাটের দশকে ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে পড়াকালীন সময়েই ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। আওয়ামী লীগের মধ্যে বাস করা মুসলিম লীগের প্রেতাত্মারা যখন বাঙালির মুক্তির সনদ ছয়-দফা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। এমন পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের সেই সময়ের সভাপতি সৈয়দ মাজহারুল হক বাকী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাককে (উভয়েই সদ্যপ্রয়াত) ডেকে ছয়-দফাকে জনগণের সামনে মেলে ধরার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ছাত্রলীগ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা নিয়ে মাঠে নেমে জনগণের আস্থা অর্জন করেছিল। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তখন একজন ভালো ক্রিকেটার ছিলেন।

সেই প্রিয় খেলার নেশা ত্যাগ করে তিনি মময়নসিংহ জেলা (বর্তমানে বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয়টি জেলা) ছাত্রলীগের একজন সদস্য ও উদ্যমী কর্মী হিসেবে ছয়-দফা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। স্কুলের গ-ি পেরুনোর আগেই ডা. হাফিজ খান (বর্তমানে রাজশাহীতে বসবাসকারী) ও খালেদ খুররম খানের (সদ্যপ্রয়াত) নেতৃত্বাধীন জেলা কমিটির দফতর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসএসসি পাস করার পরে আনন্দমোহন কলেজে এইচএসসি পড়াকালীন সময়ে জেলা ছাত্রলীগের মাসুদ পারভেজ (চিত্রনায়ক সোহেল রানা) ও শাখাওয়াত হোসেন (মরহুম) নেতৃত্বাধীন কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়েই ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের একজন অকুতোভয় সৈনিক হিসেবে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আলপথ, রাজপথ পেরিয়ে দক্ষ সংগঠকে পরিণত হন। ১৯৭০ সালের শেষ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত অবিভক্ত জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

ওই কমিটির সভাপতি এডভোকেট নাজিমউদ্দিন আহম্মেদ পরবর্তী সময় বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন এবং বর্তমানে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কমান্ডার ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পরবর্তী সময় তোফায়েল-রব কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহগ্রন্থনা প্র্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০-এর নির্বাচনের প্রাক্কালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের গ্রামগঞ্জে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট প্রদানের জন্য জনগণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করেন। এমনি সমস্যাসঙ্কুল, রাজনীতির অমসৃণ পথ পেরিয়ে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ভারতের মেঘালয়-ত্রিপুরা অঞ্চলে জননেতা আব্দুর রাজ্জাকের (মুজিব বাহিনীর চার অধিনায়কের একজন) নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (বিএলএফ বা মুজিব বাহিনী) মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

প্রশিক্ষণ শেষে অনেক সফল যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে বিএলএফের একজন সহঅধিনায়কে উন্নীত হন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে আবার যোগ দেন সংগঠনের কাজে ও পড়ালেখায়। ১৯৭২ সালে এইচএসসি পাস করার প্রাক্কালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন করে দিয়ে ময়মনসিংহ ত্যাগ করে ঢাকা কলেজে বিএ ভর্তি হয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কর্মকা-ে সম্পৃক্ত হতে থাকেন। শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছেলে ও মায়ের শত আবদার উপেক্ষা করে বড় ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে ১৯৭৩ সালে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য লন্ডনে পাঠিয়ে দেন। বাংলাদেশের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীপুত্র হয়েও সৈয়দ আশরাফ লন্ডনে নিজে হোটেলে কাজ করে নিজের খরচ চালিয়েছেন।

১৯৭৫ সালে সৈয়দ আশরাফ লন্ডনে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ জাতির পিতা এবং তার জন্মদাতা পিতাসহ জাতীয় চার নেতার রক্তে রঞ্জিত। ওই প্রতিকূল অবস্থায় বিদেশে সৈয়দ আশরাফ পূর্ণ জীবনযুদ্ধে নামেন, লন্ডনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শকের চাকরি নেন। সৈয়দ আশরাফ লন্ডনে থাকালীন সময়ে সেখানে গঠিত আওয়ামীর লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা আওয়ামীর লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করে দেশে ফেরার পর সৈয়দ আশরাফেরও দেশে ফেরার একটা অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের চরিত্রহননের উদ্দেশ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ ছাপানো হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তার পরিবার তা থেকে বাদ পড়েননি। ময়মনসিংহের কলেজ রোডের সেই বাসাটি এখনো আগের মতোই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ও শহরের বয়স্কদের আড্ডাস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে আনন্দমোহন কলেজ ছাত্র-সংসদ (আমোকসু) নির্বাচনের সময়ে আমরা বেশ কয়েকজন কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে গিয়েছিলাম। তখন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার ছিলেন বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা কুহিনুর মিয়া। আমরা যাতে নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ করতে না পারি সেজন্য হেন কোনো ব্যবস্থা নেই যা তিনি গ্রহণ করেননি।

নির্বাচনী ক্যাম্প ছিল সৈয়দ নজরুল ইসলামের ঐতিহাসিক বাড়িটি। তখন আমারও সৈয়দ নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল। ভোটগ্রহণের পরে সন্ধ্যারাত্রিতে নির্বাচনী ফল ছাত্রলীগের পক্ষে আঁচ করতে পেরে ফল ঘোষণার পূর্বমুহূর্তে পুলিশ, ছাত্রদল ও যুবদলের চতুর্মুখী হামলায় আমরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি, বাড়িটিতে চালানো হয়েছিল নির্বিচারে ভাঙচুর। ঐতিহাসিক ও বহু ঘটনার সাক্ষী বাড়িটিতে হামলার পরে শহরের সব মহলে ছি-ছি পড়েছিল। ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মীরাও আবেগাপ্লুত হয়ে পাল্টা আক্রমণ করতে প্রস্তুতি নেয়।

কিন্তু ঢাকা থেকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বার্তা পাঠিয়েছিলেন, আগামীকাল আমি আসছি, আমার না আসা পর্যন্ত কেউ যেন একটি শব্দও না করে। এতে নেতাকর্মীরা মনোক্ষুব্ধ হলেও অশান্ত হয়নি। পরেরদিন সৈয়দ আশরাফ ময়মনসিংহ গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে জাতিকে জানিয়েছিলেন হামলা ও বাড়ি ভাংচুরের বৃত্তান্ত। তিনি বলেছিলেন, কোনো অন্যায়ের জবাব পাল্টা অন্যায়ের মাধ্যমে দেয়া যাবে না। বেআইনি কাজের জন্য প্রচলিত আইনের পথেই এগুতে হবে।

খুব সম্ভবত কোর্টে একটি মামলাও করা হয়েছিল। পরবর্তী সময় সেই মামলার কোনো অগ্রগতির কথা শুনিনি। শুনেছি সেই বাড়িটির অদ্যাবধি কোন পরিবর্তনও করা হয়নি। শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর আসনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অংশগ্রহণ করে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন। তার পিতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১৯৭৩ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে এই আসনে জয়লাভ করেছিলেন।

দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর পরে এই আসনটি আওয়ামী লীগের পক্ষে পুনরুদ্ধার হয় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে। ১৯৯৬-২০০১ সরকারের শেষদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার বিপক্ষে কেউ দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেননি। তিনি প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও তার চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু কোনো ঘটনাচক্রে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু সৈয়দ আশরাফ একবারের জন্য থানা বা অন্য কোথাও একটি কথা বলেননি।

২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনের আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংগঠনের কোনো পদে ছিলেন না। সে কারণে ক্ষমতায় থাকার সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি নিজেও নির্বাচন করতে চায়নি। আবারও নেত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন। বিরোধী দলে আসার পরে সারাদেশে যখন আওয়ামীলীগ ও সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং প্রশাসনযন্ত্রের সর্বত্র দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছে সৈয়দ আশরাফ তখনও সোচ্চার ছিলেন। সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আবুল আহসান চৌধুরী কায়সারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কচ্ছেদ ঘটলে সৈয়দ আশরাফই আওয়ামীল লীগের অলিখিত আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

দেশের নাগরিক সমাজের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ কনভেনশনে পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ২০০২ সালের আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়ে সংগঠনের কাজে সার্বক্ষণিক জড়িত হন সৈয়দ আশরাফ। উচ্চশিক্ষিত এ মানুষটি বিশ্বাস করেন, ভিন্নমতাবলম্বীদের লেখা গ্রন্থ বেশি করে পাঠ করা উচিত। তার কার্যকরণে কখনোই পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ উঠেনি। ঘনিষ্ঠজনদের অনেকেই খুব বিরক্ত কারো জন্য কিছু করেন না, সেজন্য।

তার স্পষ্ট উত্তর, আমার দ্বারা অন্যায়ভাবে কারো জন্য কিছু করা সম্ভব নয়। বিগত সংসদ নির্বাচনের সময়ে দলের উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকের ভূমিকায় থেকেও তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে ভালো সম্পর্কের কারণে কারো পক্ষাবলম্বন অথবা তাকে অপছন্দ করে এমন কারো বিরোধিতার কথাও কেউ বলতে পারেনি। সদাসহনশীল এ মানুষটি সমালোচনাকে আশীর্বাদ হিসেবেই গ্রহণ করেন। এ দিকে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ-সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরদিন ভোরে পূর্বসূরি জননেতা আবদুল জলিলের বাসায় গিয়ে ছালাম করে দোয়া চেয়ে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সৈয়দ আশরাফ দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র থাকাকালীন সময় থেকেই দলের ভেতরে ও বাইরে অনেকেই তীব্র সমালোচনা করলেও, কোনোদিন নিজে কারো সম্পর্কে একটি কটূক্তি করেননি।

মিডিয়ায় সমালোচনার কথা মনে করিয়ে উত্তর আদায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সদা হাস্যোজ্জল মুখে মিষ্টি হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন। দুর্দিনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এ দেশ ও দলের জন্য নিরাপদ মানুষটি বিশ্বাস করেন বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে দেশপ্রেমের অপরাধে। তাদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি রক্তের ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকারদের সততা ও গভীর দেশপ্রেম এবং কাজের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতার জীবন ও কর্ম প্রকাশ পাবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠনের পরে তাকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হলে আজো পর্যন্ত কখনো শোনা যায়নি, তার গাফিলতির কারণে কোনো ফাইল আটকে আছে বা তার নির্দেশে কাউকে ঠিকাদারি কাজ দেয়া হয়েছে। কারো জন্য কোথাও চাকরির সুপারিশ করেছেন, এমন কোনো অভিযোগ নেই। এদেশে আগে যেভাবে রাজনীতি চলেছে এখনো সেভাবেই চলতে হবে এমনটি তিনি বিশ্বাস করে না।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হয়ে সারাদেশ ঘুরতে হবে, এক্ষেত্রে তিনি মনে করেন সাধারণ সম্পাদক সমন্বয়ক মাত্র। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদকগণ মাঠপর্যায়ের রিপোর্ট নিয়ে আসবেন সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটিতে সেগুলো উপস্থাপন করবেন। আইনের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাশীল এ নেতা, দেশে আইনের শাসন ও দলের ভেতরে চেইন অব কমান্ড স্থাপনে বদ্ধপরিকর। প্রচারবিমুখ এ মানুষটি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে একথা সর্বজনবিদিত। তিনি পারেন না মিডিয়া হাউসে বা কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আড্ডা দিতে, তিনি পারেন না প্রতিক্রীয়াশীলদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে।

তিনি পারেন না বাস্তবতাকে এড়িয়ে যেতে। বাস্তবতা মেনেই তথ্যউপাত্ত সহযোগে, যা করা সম্ভব শুধু সেটুকুই বলেন। যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রশ্নে আপসহীন এ বীর মুক্তিযোদ্ধা মনে করেন, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী পৃথিবীর কোনো দেশেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও বিপক্ষে জনগণ ও রাজনৈতিক নেতা বা দল বাংলাদেশের মতো বিভক্ত হয়নি। কিন্তু আমাদের দেশে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভক্ত করা হয়েছে। তাই যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করেই ষড়যন্ত্রকারীদের জবাব দিতে হবে।

একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর শারীরিক অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে প্রবাসী সরকার গঠন করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল। ১/১১-এর পরেও শেখ হাসিনার শারীরিক অনুপস্থিতিতেও জিল্লুর রহমান ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের পক্ষে জনগণের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সফল হয়েছেন। কাজেই কেউ চাইলেই বা দুকথা সমালোচনা করলেই ইতিহাস বদলে যাবে না। জননেতা জনগণই নির্মাণ করেন। তাই তাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ফারাকে একটু গালাগাল-সমালোচনা করবেই।

ওটাই স্বাভাবিক। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সৈয়দ আশরাফ এসেছেন, একটা পরিবর্তনের অঙ্গীকারে আমরাও বদ্ধপরিকর। আর সেই পরিবর্তনটা হলো, অতীতে মানুষ তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সরকার পরিবর্তন করেছে, ভবিষ্যতে মানুষ তাদের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তন রেখে শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফের নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেই পরিবর্তনের লক্ষ্যে কথা ও কাজ করাই হবে আমাদের বড় প্রতিবাদ। লেখক: কলামিস্ট ও সাবেক ছাত্রনেতhttp: //www.ajkalerkhabarbd.com/pages/details/2012/03/05/38092 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।