আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিপিএলের সাতকাহন (প্রথম খণ্ড)

হয়তো আমি একাই... একুশ দিনের ক্রিকেট মহোৎসব শেষ হল; শেষ হল আমাদের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। সবই ছিল এর মাঝে; ছিল চার-ছয়ের আলোক ঝলকানি; ছিল চিয়ারলিডারদের উদ্দাম নৃত্য; ছিল মুহূর্তে মুহূর্তে খেলার গতিধারা পরিবর্তন হওয়ার উত্তেজনা, ছিল দর্শক-আগ্রহ। তবে সব কিছু ছাপিয়ে কয়েকটি ব্যাপার উঠে এসেছে যেগুলোকে অগ্রাহ্য করা যায় না। বাংলাদেশ প্রথমত একটি বাংলাদেশি টুর্নামেন্ট, এখানে দেশের ক্রিকেটাররা নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পাবেন সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু আদতে তা কতোটুকু হয়েছে? দেশের খেলায় ছিলেন না মোহাম্মদ শরীফ, তাপশ বৈশ্য, রকিবুল হাসান, রবিউল ইসলাম মতো দেশি খেলোয়াড়। তামীম ইকবাল, শাহরিয়ার নাফিস, আফতাব আহমেদ, শাহাদাত হোসেন, তালহা জুবায়ের, সৈয়দ রাসেল, ডলার মাহমুদের মতো খেলোয়াড়রা যথাযথ সুযোগই পাননি।

টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দল ৫ জন করে বিদেশি খেলোয়াড় খেলাতে পারবেন; এই নিয়মের অধীনে বলি হয়েছেন আফতাব কিংবা শাহাদাতরা। বিপিএলের সবকিছুতেই ছিল একধরনের ভারতীয় আমেজ। আন্তর্জাতিক একটি টুর্নামেন্টে আন্তর্জাতিক ধারাভাষ্যকার থাকবেন এটাই স্বাভাবিক; এটা নিয়ে তাই কিছু বলার কোনো অবকাশ নেই। তবে ভারতীয় উপস্থাপিকা ব্যাপারটি দৃষ্টিকটুই বটে। নাম তার শীনা চৌহান, উদ্ভট পোশাক এর জন্য এরই মধ্যে সবার সুনজরে (?!) এসে পরেছেন তিনি।

খেলোয়াড় না দিলেও ধারাভাষ্যকারদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এই বানিজ্যিক রমনীকে দিতে ভুল করেনি ভারত। অব্যবস্থাপনা ছিল পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে বোঝার উপায় ছিল না টুর্নামেন্টটি কাদের? আমাদের না ভারতের! সমাপনী অনুষ্ঠানে এসে ভারতীয় ধারাভাষ্যকার অরুন লাল তো দু-দুবার একে আইপিএল বলেও সম্বোধন করলেন। এক ম্যাচের সর্বোচ্চ ছক্কার জন্য পুরস্কার থাকলেও টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ছয়ের জন্য কোনো পুরস্কারই নেই। হাস্যকর! আমাদের ব্যর্থতা, আমরা বিপিএলকেও রাজনীতি মুক্ত রাখতে পারিনি।

সেমিফাইনাল নিয়ে যা হল তা আমাদের জন্য কলংকের। সব শেষে যোগ্য দল হিসেবে বরিশাল বার্নারস সেমিফাইনাল খেললেও এই ঘটনা আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসে কতোটা অসম্মানের সৃষ্টি করলো তা হয়তো না বললেও চলবে। তবে সবটাই নেতিবাচক ছিল না; আশরাফুল-মাশরাফির পুনরুজ্জীবন, আনামুল-মমিনুল-জিয়াউর-আরাফাতদের উঠে আসা, সাকিব-ইলিয়াস-রিয়াদ-জহুরুলদের নিজেদের প্রমান করা এটুকু দেশের ক্রীড়ামোদীরা কখনোই ভুলবেন না। আজকের মতো শেষ করবো পুরনো একটা বুলি ঝেড়ে। এক যুগের টেস্ট ইতিহাসে আমাদের বলার মতো কোন সাফল্য আছে কি? না নেই! সেখানে আমরা মেতে আছি টি-টুয়েন্টি নিয়ে।

তাও ভাল একদিক থেকে তো নিজেদের প্রমান করা যাবে। তবে বিদেশিদের ( আসলে মূলত পাকিস্তানি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ভীড়ে আমাদের খেলোয়াড়রা নিজেদেরকে কতোটা মেলে ধরতে পারবেন সে ব্যাপারটা ভেবে দেখা দরকার। (চলবে...) এ,কে,এম, মুজিব সাংবাদিক, http://www.move4world.com ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.