আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তখন গভীর রাত

হিমি ভূত বিশ্বাস করে না । ভূতের কথা কেউ বললে হে-হে করে হেসে ওঠে । হিমি মনে করে ভূত মানেই ইলিউশন- চোখের ভুল । গভীর রাতে খুট খুট করে শব্দ হয়, চাঁদের আলোয় কারো ছায়া দেখা যায়, অস্পষ্ট ভাবে কাকে যেন দেখা যায়-এইসব ব্যাপার গুলো নাকি মানূষের চোখে এক ধরনের বিভ্রম সৃষ্টি করে । তখন মানুষ ভূত দেখে ।

কিন্তু গত বছর নাইক্ষংছড়িতে যে ব্যাপারটা ঘটেছিল, তারপর থেকে হিমির ভূতকে অবিশ্বাস করার আগে একটু ভাবতে হয় । নাইক্ষংছড়িতে একটা ছোট পাহাড়ের পেছনে ভাঙ্গা মন্দির আছে । মন্দিরের পেছনে ঘন জঙ্গল । এই মন্দিরের আশে পাশে কেউ কখন যায় না । কেন যায় না, তাও কেউ সঠিক করে জানে না ।

গত বছর আমরা সবাই নাইক্ষংছড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম । হিমি ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে । কিন্তু যার তার সাথে না, শুধু আমার সাথে । আমি পাশে থাকলে নাকি হিমি এক আকাশ ভরসা পায়-সাহস পায় । সারাদিন আমরা নানান জায়াগায় ঘুরে বেড়ালাম ।

দুপুরে এক উপজাতি পরিবারের সাথে খেলাম । ( এতটুকু লেখার পর কেন জানি এই গল্পটা আর লিখতে ইচ্ছা করছে না । আমি খুব দুঃখিত । লেখার মাঝখানে মা ডাক দিলো, ফিরে এসে দেখি লেখার সুর কেটে গেছে । অন্য একটা গল্প বলি ।

) গুল্লুকে নিয়ে আর পারা গেল না । এমন সব অদ্ভুত কথা বলে ! এইসব অদ্ভুর কথার উত্তর ও দেওয়া যায় না । চিন্তা-ভাবনা-বুদ্ধি, সব ব্যাপারেই গুল্লু আমাদের থেকে বড্ড আলাদা । চায়ের আড্ডায় সে হঠাৎ প্রশ্ন করলো- তোমরা কি জানো, চাঁদের বুকে মাঝে মাঝে কিসের কালো দাগ ? আমরা জানি এটাই ওর মুল প্রশ্ন না, আসল প্রশ্নটা ঠিক এর পরেই আসবে । গুল্লু বলল- ক্রিকেটের বল আর ভূ-পৃষ্ঠ, কোনটা বেশী মসৃণ ? এটা আবার কোনো প্রশ্ন নাকি ? চকচকে ক্রিকেট বলটাই ভূ-পৃষ্ঠের চেয়ে বেশি মসৃণ ।

গুল্লু বলল- তোমরা যা ভাবছো তা নয় । গুল্লু এমন জোর গলায় কথা বলে যে, বিশ্বাস না করে আর উপায় থাকে না । বললাম না, গুল্লুর চিন্তা ভাবনাই একেবারেই আলাদা । শুধুমাত্র গুল্লুর পক্ষেই ক্রিকেট বলের মধ্যে পৃথিবীর মতো বিশাল আকার চিন্তা করা সম্ভব । আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোয়া ছাড়তেই গুল্লু অব্যর্থ একটা প্রশ্ন করল- এই যে ধোয়া ছাড়লে, এর ওজন কত জানো ? দাড়িপাল্লা দিয়ে মাপলে তোমার সিগারেটের ধোয়ার ওজন কত হতো ? উত্তর তো দূরের কথা, এ রকম প্রশ্ন যে হতে পারে, তা আমার মাথায় আসেনি ।

গুল্লু বলল- একটা সিগারেটের ধোয়ার ওজন এক আউন্সের .০০১২৭ ভাগ । অবাক না হয়ে উপায় আছে ! গুল্লু হাসতে হাসতে বলল- ভাবো, আলাদা ভাবে নতুন করে ভাবতে শিখো । ওর বুদ্ধির তারিফ করে বললাম- তুমি কত অদ্ভুত কথা বলো, অদ্ভুত উত্তর দাও, সেগুলো খাতায় লিখে রাখো না কেন ? এই লেখাগুলো জমতে জমতে নতুন ধরনের একটা বই বের হতো ! গুল্লু আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল- এ পৃথিবীর সর্বকালের দু'জন সেরা লেখক কিন্তু জীবনে একটা লাইনও লেখেননি । অবাক হয়ে বললাম কারা তারা ? গুল্লু বলল- হোমার ও সক্রেটিস । সত্য-মিথ্যা কিছুই বুঝতে পারি না ।

গুল্লু এমনভাবে কথা বলে ওর কথা বিশ্বাস না করে পারা যায় না । আসলে ওর প্রতিটা কথার মধ্যেই একটা বিশ্বাসযোগ্যতা ছাড়া, ওর আচার-আচরণ এমনি যে, এক মুহূর্তের জন্যও অবিশ্বাস করা যায় না । গুল্লু একবার প্রশ্ন করেছিল- এক মুহূর্ত মানে ঠিক করটা সময় জানো ? না, আমরা কেউই বলতে পারিনি । গুল্লু বলল- এক মুহূর্ত মানে দেড় মিনিট । ইংল্যান্ডে পুরনো আমলে মোমেন্ট বলতে দেড় মিনিট সময় বোঝাত ।

আমরা আড়ালে বলাবলি করি, গুল্লু যদি একটু চেষ্টা করত- তাহলে জীবনে অনেক কিছু করতে পারত । গুল্লুর কানেও কথাটা কয়েকবার পৌছেছে । কিন্তু সে গুরুত্ব দেয়নি । আমি একদিন খুব বক বক করছিলাম- তখন গুল্লু আমার দিকে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলো- বলো, কোন দুধের রঙ গোলাপী ? আমি উত্তর টা দিতে পারিনি । গুল্লুকে আমি প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম- আচ্ছা, সাগর-রুমিকে কারা হত্যা করেছে ।

সাহস হয়নি । তবে এই গুল্লু মাঝে মাঝে তার একান্ত মনের কথা গুলো আমাকেই বলে । ( লেখাটা আর টেনেটুনে বড় করতে ইচ্ছা করছে না । মন ভালো নেই আবার শরীরটাও ভালো নেই । জ্বর জ্বর ভাব কিন্তু শরীর একেবারে ঠান্ডা ।

যাই গোছল করি । গতকাল গোসল করতে ভুলে গিয়েছিলাম । বিকেলে বাইরে যাবো, কাজ আছে । এখন হেলাল হাফিজের কবিতা পড়ুন, এলোমেলো করে নিজের মনের মতন সাজালাম । ) "আমি কোনো পোষা পাখি নাকি ? যেমন শেখাবে বুলি- সেভাবেই ঠোঁট নেড়ে যাবো ! দারুন আলাদা একা অভিমানী এই ক্যাকটাস, যেন বোবা রমণীর সখী ছিলো দীর্ঘকাল ।

তবু বেঁচে আছি একা নিদারুন সুখে- অনাবিস্কৃত আকাঙ্কা নিয়ে বুকে । আহ ! আয়া না পাষাণী একবার পথ ভুলে- পরীক্ষা হোক কার কতো অনুরাগ । আর কে দেবে আমি ছাড়া আসল শোভন কষ্ট- আমার মত ক'জনের আর সব হয়েছে নষ্ট। কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি-লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম । " ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।