আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফ্রিম্যাসনারি: বিশ্বের প্রাচীনতম এক গুপ্ত গোষ্ঠী (দ্বিতীয় পর্ব)

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ ফ্রিম্যাসনারি গোষ্ঠী সর্ম্পকে ধারাবাহিকভাবে লিখছি। প্রথম পর্বের শেষে লিখেছিলাম ... ‘ফ্রিম্যাসোনারি দের সঙ্গে নাইট টেম্পলার দের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। ’ ...এবং এই বিষয়টিই আমাদের এই পর্বের আলোচনার বিষয় ... ৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমানরা জেরুজালেমের প্রধান উপাসনালয়টি (হেরোদ টেম্পল) ধ্বংস করেছিল।

তার আগেই আদি খ্রিস্টানরা ওই টেম্পলের নীচে মূল্যবান পান্ডুলিপি, পবিত্র পাত্র বা হলি গ্রেইলসহ (যে পাত্রে যিশুর পবিত্র রক্ত ছিল) প্রভূত ধনসম্পদ লুকিয়ে রেখেছিল ... এর হাজার বছর পর ‘নাইট টেম্পলার’ নামে আরেকটি গুপ্ত গোষ্ঠী ক্রসেডের সময় জেরুজালেমে থাকাকালীন সময়ে সে সব আবিস্কার করে, এবং পরবর্তীকালে তারা আদিখ্রিষ্টীয় কৃত্য দ্বারা প্রভাবিত হয় ... টেম্পল অভ সলোমন এর প্রধান স্থপতি হাইরাম আবিফ-এর যে ঐতিহ্য কালক্রমে বিলীন হয়ে গিয়েছিল সে সংক্রান্ত তথ্যাদি জেরুজালেমে থাকাকালীন সময়ে ওই নাইট টেম্পলারা আবিস্কার করেছিল ...এর ফলে ফ্রিম্যাসনারি গোষ্ঠীর সঙ্গে খ্রিস্টপূর্ব দশম শতাব্দীর প্রধান স্থপতি বা Master Mason হাইরাম আবিফ- এর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়নি বলে অনেকেই মনে করেন ... ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ক্রসেডের পর খ্রিস্টানরা জেরুজালেম নগর জয় করে নেয় এবং ফিলিস্তিনে ‘লাতিন কিংডম অভ জেরুজালেম’ প্রতিষ্ঠা করে। এর পর অনেক খ্রিস্টান তীর্থযাত্রী ইউরোপ থেকে জেরুজালেম আসতে থাকে। এই ঘটনাটি নাইট টেম্পলার সংঘের উদ্ভবের অন্যতম কারণ ... এক কথায় নাইট টেম্পলাররা ছিল ক্রসেড চলাকালীন সময়ের যোদ্ধা-সাধুদের একটি গুপ্ত সংঘ; যে সংঘটি প্রায় ২০০ বছর ধরে ইউরোপে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি অব্যাহত রেখেছিল। নাইট টেম্পলাররা The Poor Fellow-Soldiers of Christ and of the Temple of Solomon নামেও পরিচিত। প্রথম ক্রসেডের পর ১১১৯ খ্রিস্টাব্দে এদের উদ্ভব হয়েছিল ।

জেরুজালেম নগরটি নিরাপদ হলেও এর বাইরে ইউরোপীয় খ্রিস্টান তীর্থযাত্রীদের জন্য বিপদসঙ্কুল ছিল। ‘লাতিন কিংডম অভ জেরুজালেম’ -এর রাজা তখন দ্বিতীয় বল্ডউইন (শাসনকাল ১১১৮ থেকে ১১৩১ খ্রিস্টাব্দ)। তাঁর কাছে ফরাসি নাইট হুগুয়েস দ্য পেয়েস তীর্থযাত্রীদের রক্ষা করার জন্য একটি সংঘ গঠনের প্রস্তাব করেন । রাজা দ্বিতীয় বল্ডউইন এতে সম্মত হন এবং এ এই সংঘের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে জেরুজালেম নগরের ‘টেম্পল মাউন্ট’ বরাদ্দ করেন । এ প্রসঙ্গে একজন ঐতিহাসিক লিখেছেন: The Temple Mount had a mystique because it was above what was believed to be the ruins of the Temple of Solomon. জেরুজালেম নগরের মানচিত্রে ‘টেম্পল মাউন্ট’-এর অবস্থান।

এখানেই যিশু খ্রিস্টের জন্মের ১০০০ বছর পূর্বে রাজা সলোমন 'টেম্পল অভ সলোমন' নির্মাণ করেন। যে টেম্পলে রক্ষিত ছিল পাথরে (Tablets of Stone) খোদিত ‘দশম আজ্ঞা’ বা টেন কমান্ডমেন্টস। ওই উপাসনালয়ের প্রধান স্থপতি বা Master Mason ছিলেন হাইরাম আবিফ; যিনি ফ্রিম্যাসনারি গোষ্ঠী প্রাণ পুরুষ ... (প্রথম পর্ব দেখুন) নাইট টেম্পলাররা ছিল সংখ্যায় মাত্র নয় জন। এদের মধ্যে হুগুয়েস দ্য পেয়েস বাদে উল্লেখযোগ্য ছিল গডফ্রে দ্য সেন্ট ওমের এবং আন্দ্রে দ্য মঁবা । তারা খ্রিষ্টের প্রতি আনুগত্য, দারিদ্র ও কৌমার্যব্রতের শপথ করে ।

তারা দানের ওপর নির্ভর করত। সলোমনের টেম্পল থেকেই "টেম্পলার" শব্দটির উদ্ভব। Knights of the Temple অথবা Knights Templar অর্থাৎ পবিত্র ও রহস্যময় টেম্পল অভ সলোমন-এর নাইট । নাইট টেম্পলার। এদের ক্রশ এর রং ছিল লাল।

তারা Poor Knights of Christ নামেও পরিচিত ছিল। পরবর্তীকালে এইসব নিঃস্ব সাধুগণ যেভাবে বদলে যায় তা বিস্ময়কর অধ্যায় বৈ কী! একটি ঘোড়ার পিঠে দুজন নাইট টেম্পলার । কিন্তু দুজন কেন? তারা যে দরিদ্র এটি তারই প্রতীক। নাইট টেম্পলারা কাঁধে কাঠের ক্রশ নিয়ে যুদ্ধ করত। মুসলিমঅধু্যষিত ফিলিস্তিনে নাইট টেম্পলার দের বীরত্বে সমগ্র ইউরোপ রোমাঞ্চিত হয়ে উঠেছিল।

অনেক ইউরোপীয় অভিজাত তাদের সংঘে যোগ দিয়েছিল। ফলে প্রচুর অর্থ ও ভূমি লাভ করে সংঘটি অতি অল্প সময়েই সম্পদশালী হয়ে ওঠে। তার ওপর ক্রসেড চলাকালীন সময়ে ফিলিস্তিনের নানা স্থান লুন্ঠন করেও তারা প্রচুর ধনসম্পদ হস্তগত করেছিল । নাইট টেম্পলাররা ফিলিস্তিনের নানা স্থানে দূর্গ নির্মান করে ‘লাতিন কিংডম অভ জেরুজালেম’ এর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছিল। সিরিয়ার টরটসায় (তৎকালীন সময়ে ‘লাতিন কিংডম অভ জেরুজালেম’ -এর অর্ন্তগত) নাইট টেম্পলারদের নির্মিত একটি দূর্গ।

দূর্গটি অবস্থিত ছিল ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীর ঘেঁষে, ফলে এটি বন্দর হিসেবেও ব্যবহৃত হত । ফিলিস্তিনে আরও কয়েকটি দূর্গ গড়ে তুলেছিল তারা । ইউরোপীয় খ্রিস্টান তীর্থযাত্রীরা প্রথমে নৌপথে টরটসা দূর্গে আসত। সেখান থেকে নাইট টেম্পলাররা তাদের নিরাপদে জেরুজালেম পৌঁছে দিত। ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দের দিকে মিশর ও সিরিয়ার সুলতান গাজী সালাহ্ উদ্দীন দিকে নাইট টেম্পলারদের দূর্গগুলি একে একে অধিকার করে নেন।

নাইট টেম্পলাররা জেরুজালেম নগরে প্রায় ৭৫ বছর ধরে অবস্থান করেছিল। জেরুজালেমে নাইট টেম্পলারদের কার্যক্রম ইউরোপের ধর্মীয় ইতিহাসের এক বিস্ময়কর, বির্তকিত এবং অমীমাংশিত অধ্যায়। জেরুজালেম নগরে নাইট টেম্পলারদের ভূমিকা অনেকেই "রহস্যময়" বলে মনে করেন। অনেকে মনে করেন ‘টেম্পল মাউন্ট’ থাকার সময় তারা ‘টেম্পল মাউন্টের’ ধ্বংসস্তূপের ভিতর প্রাচীন মূল্যবান পান্ডুলিপি (ডেড সি স্ক্রলের মতো), পবিত্র পাত্র বা হলি গ্রেইল (যে পাত্রে যিশুর পবিত্র রক্ত ছিল) এবং প্রচুর ধনসম্পদ আবিস্কার করেছিল। যদিও এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য আজও জানা যায়নি।

এ প্রসঙ্গে মূলধারার একজন ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছেন: Pseudo-historical books such as The Holy Blood and the Holy Grail theorise that the Templars could have discovered documents hidden in the ruins of the Temple, possibly "proving" that Jesus survived the Crucifixion or possibly "proving" Jesus was married to Mary Magdalene and had children by her. Indeed, the supposition that the Templars must have found something under the Temple Mount lies at the heart of most Templar legends and pseudo-historical theories, also popularised by French author Louis Charpentier. There is no physical or documentary evidence, however, to support such a supposition. মাইকেল বাইজেন্ট, রিচার্ড লেই এবং হেনরি লিঙ্কন লিখিত The Holy Blood and the Holy Grail বইটির প্রচ্ছদ। বইটির পিডিএফ ভার্সানের ডাউনলোড লিঙ্ক এ পোস্টের শেষে সংযোজিত করা হল। Click This Link The Holy Blood and the Holy Grail বইটির একজন লেখক হেনরি লিঙ্কন পরিচালিত এই ভিডিওটি ছদ্ম-ইতিহাস বোঝার জন্য সাহায্য করবে। সে যাই হোক। ইউরোপে দ্বাদশ শতকে নাইট টেম্পলাররা একটি অত্যন্ত সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছিল।

নাইট টেম্পলারদের প্রধান কে বলা হত গ্র্যান্ড মাষ্টার। (ইউরোপে তারাই দাবা খেলার প্রচলন করে বলে মনে করা হয়) ...যাই হোক। গ্র্যান্ড মাষ্টার-এর অধীনে ছিল তিনটি র‌্যাঙ্ক। ১) নাইট; ২) চ্যাপলাইন এবং ৩) সার্জেন্ট। তবে সংঘে নাইটদের ভূমিকাই ছিল প্রধান।

সাদা জোব্বার ওপর লাল লাতিন ক্রশ ছিল তাদের প্রতীক। নাইট টেম্পলার শব্দটির আকর্ষন গভীর ও রহস্যময় ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম সৈন্যদের কাছে পরাজয়ে আগ পর্যন্ত নাইট টেম্পলারদের কেন্দ্র ছিল জেরুজালেম । এর পর মুসলিম আক্রমনের প্রাবল্যে তারা তাদের কেন্দ্র এন্টিওর্ক, আক্রা, কাসেরা এবং সাইপ্রাস সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় । তবে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। এ প্রসঙ্গে একজন লিখেছেন: ... Because the Templars regularly transmitted money and supplies from Europe to Palestine, they developed an efficient banking system, on which the rulers and nobility of Europe came to rely. The knights gradually became bankers for a large part of Europe and amassed great wealth. এবং সে অর্থে তারা ইউরোপজুড়ে তারা বিশাল বিশাল সব দূর্গ এবং ক্যাথিড্রাল নির্মান করে এবং এর ফলে Stonemason দের সংস্পর্শে আসে।

ম্যাসনদের বিশেষ কারিগরি জ্ঞান (যে জ্ঞানকে আধ্যাত্মিক ভাবা হয়, হয়তো আজও ...জ্যামিতি তো কেবল গণিতের শাখা নয় সে তো শাশ্বত পরমের পথের সন্ধান দেয় ... ) এবং নাইট টেম্পলারদের নিজস্ব নিগূঢ় জ্ঞানের সংযোগ ঘটে। যে জ্ঞানের সমন্বয়ের ফলে পরবর্তী কালে ফ্রিম্যাসনারি গোষ্ঠী উদ্ভব বলে অনেকে মনে করেন। জেরুজালেমের ‘টেম্পল মাউন্ট’-এ নাইট টেম্পলারদের ‘গুপ্তজ্ঞান’ আবিস্কারের ফলেই ফ্রিম্যাসনারি গোষ্ঠীর সঙ্গে খ্রিস্টপূর্ব দশম শতাব্দীর প্রধান স্থপতি বা Master Mason হাইরাম আবিফ এর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়নি ... মধ্যযুগের একটি ক্যাথিড্রাল। এইরকম স্থাপনা নির্মাণ কেবল বিশেষ এক শ্রেণির মানুষের পক্ষেই সম্ভবপর ... ক্রসেডে পরাজিত হওয়ার পর নাইট টেম্পলারদের আর ফিলিস্তিনে ‘লাতিন কিংডম অভ জেরুজালেম’ -এ নিরাপত্তা দেওয়ার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। অবশ্য তাদের সংঘের অর্থনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।

তাদের ধর্মীয় কৃত্য (রিচুয়াল। ) বদলে গিয়েছিল, যা আদি খ্রিস্টানদের মতো, রোমান ক্যাথলিক চার্চের অনুরূপ নয়। তারা "বাফোমেত" উপাসনা করত বলে ধারণা করা হয় । একজন আধুনিক ‘কোডব্রেকার’ অবশ্য মনে করেন ‘বাফোমেত’ অর্থ ‘সোফিয়া’ ... যিনি ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের জ্ঞানে দেবী; যাকে আবার যিশু খ্রিস্টের সময়কার মেরি ম্যাগডালেন মনে করা হয়। সুতরাং অনেকের মতে নাইট টেম্পলাররা মেরি ম্যাগডালেন- এর উপাসনা করত।

বাফোমেট। এ ছাড়া সংঘটি সম্পদশালী হওয়ায় তাদের বিলাসবহুল জীবন ইউরোপের শাসকশ্রেণির ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নাইট টেম্পলারদের বিরুদ্ধে অনৈতিক অভিযোগ উঠছিল, বিশেষ করে যৌন বিকৃতির অভিযোগ। ফ্রান্সের রাজা তখন পঞ্চম ফিলিপ দ্য ফেয়ার (শাসনকাল ১২৮৫ থেকে ১৩১৪ খ্রিস্টাব্দ )। তিনি দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন এবং নাইট টেম্পলারদের কাছ থেকে ঋন করেছিলেন।

এ বিষয়ে একজন ঐতিহাসিক লিখেছেন: Philip was hugely in debt to the Knights Templar, a monastic military order that had been acting as bankers for some two hundred years. As the popularity of the Crusades had decreased, support for the Order had waned, and Philip used a disgruntled complaint against the Order as an excuse to disband the entire organization, so as to free himself from his debts. নাইট টেম্পলারদের গ্র্যান্ড মাষ্টার জ্যাক দ্য মোলেই এর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সাত বছর অমানুষিক নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়। তার আগে সে স্বীকার করে যে সে বাফোমেত নামে শয়তানের উপাসনা করত। রোমান ক্যাথলিক পোপ সে সময় পঞ্চম ক্লিমেন্ট। ফ্রান্সের রাজা পঞ্চম ফিলিপ দ্য ফেয়ার পোপ পঞ্চম ক্লিমেন্ট কে নাইট টেম্পলারদের বিরুদ্ধে খ্রিস্টবিরোধী কার্যক্রম বিশেষ করে শয়তান ‘ বাফোমেত’ উপাসনার অভিযোগ আনতে বলেন।

১৩০৭ খ্রিস্টাব্দের ১৩ অক্টোবর। ভোরবেলা গ্র্যান্ড মাষ্টার জ্যাক দ্য মোলেইসহ ইউরোপজুড়ে শতাধিক গ্রেপ্তার করা হয়। এতে সমগ্র ইউরোপে তোলপাড় পড়ে যায়। দিনটি ১৩০৭ খ্রিস্টাব্দের ১৩ অক্টোবর ছিল বলে ‘ফ্রাইডে দ্য থার্টিন্থ’ কে আনলাকি বলা হয়। সে যাই হোক।

গ্র্যান্ড মাষ্টার জ্যাক দ্য মোলেই এবং অন্যান্য শতাধিক নাইট টেম্পলার কে জিজ্ঞাসাবাদের পর আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। ১৩১২ খ্রিস্টাব্দে নাইট টেম্পলার দের সংঘটি নিষিদ্ধ ঘোষনা করে চার্চ। ফ্রান্সের রাজা পঞ্চম ফিলিপ দ্য ফেয়ার এবং ক্যাথলিক চার্চ তাদের সম্পদ কুক্ষিগত করে। John J. Robinson এর Born in Blood, The lost secrets of Freemasonry বইটির প্রচ্ছদ। কয়েকজন নাইট টেম্পলার রাষ্ট্রীয় নির্যাতন থেকে বেঁচে যায়।

এ প্রসঙ্গে Born in Blood, The lost secrets of Freemasonry বইতে জন জে. রবিনসন লিখেছেন .... some French Templars fled to Scotland after the suppression of the Order, fearing persecution from both Church and state. তারা স্কটিশ stonemason দের লজে অর্থাৎ কুটিরে আশ্রয় নেয়। এবং তারা ম্যাসনদের আনুগত্য এবং virtues of chivalry শেখায়। কীভাবে? ম্যাসনদের হাতিয়ারগুলি প্রতীক হিসেবে ধরে নিয়ে। এভাবে নাইট টেম্পলার সংঘটি এক নতুর রূপ নেয়। স্কটল্যান্ডের রোজলিন নামে একটি গ্রামে পঞ্চদশ শতকের মধ্যভাগে নির্মিত একটি গির্জায় সেই রূপান্তরের ছাপ স্পষ্ট।

১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে ম্যাসনদের United Grand Lodge of England প্রতিষ্ঠিত হয়। রবিনসন মনে করেন, তার আগ পর্যন্ত নাইট টেম্পলারদের সংঘটি স্কটিশ stonemason দের মধ্যে টিকে ছিল। এরপর ইউরোপে সামাজিক পরিবর্তন আসে, ফলে নাইট টেম্পলারদের সংঘেও আমূল পরিবর্তন আসে । (তৃতীয় পর্বে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ) রোজলিন চ্যাপেল।

পঞ্চদশ শতকের মধ্যভাগে অর্থাৎ ওপর নির্যাতনের একশ বছর পর রোজলিন এর প্রথম আর্ল নির্মান করেন । এদের সঙ্গে স্কটিশ ফ্রিম্যাসনারিদের সর্ম্পক ছিল বলে মনে করা হয়। এই চ্যাপেলে একটি ভাস্কর্যে দেখা যায় একটি ঘোড়ার পিঠে দুজন আরোহী। এটি নাইট টেম্পলার প্রতীক। জেরুজালেমে তারা যে দরিদ্র ছিল ... এটি তারই প্রতীক।

রোজলিন চ্যাপেল ঘিরে নানা রহস্য ছড়িয়েছে। বলা হয় হলি গ্রেইলটি এবং নাইট টেম্পলার দের সম্পদ এই গির্জের নিচে রয়েছে। (পুরনো গির্জাটি ভেঙে যেতে পারে বলে খনন কার্যের অনুমোদন মিলছে না ...) রোজলিন চ্যাপেল সর্ম্পকে আরও বলা হয় যে গির্জাটির নির্মাণশৈলির সঙ্গে নাকি জেরুজালেমের প্রাচীন টেম্পল অভ সলোমন-এর নকশা সাদৃশ্য রয়েছে ... যে উপাসনালয়ের Master Mason ছিলেন হাইরাম আবিফ! এসব কি সত্য? Mark Oxbrow এবং Ian Robertson তাঁদের Rosslyn and the Grail বইতে লিখেছেন: Rosslyn Chapel bears no more resemblance to Solomon's or Herod's Temple than a house brick does to a paperback book. আর ফ্রিম্যাসনারি এবং নাইট টেম্পলারদের মধ্যে সর্ম্পকের বিষয়ে মূলধারার ঐতিহাসিকদের কি বক্তব্য? তারা বলেন, Some historians and authors have tried to draw a link from Freemasonry and its many branches to the Templars. This alleged link remains a point of debate! আসলে ইউরোপ আমেরিকায় ইতিহাসের চেয়ে ছদ্ম-ইতিহাসের (Pseudo-history) আকর্ষণ বেশি। সেরকম ছদ্ম-ইতিহাসের অনন্য নজীর John J. Robinson এর Born in Blood, The lost secrets of Freemasonry এবং মাইকেল বাইজেন্ট, রিচার্ড লেই এবং হেনরি লিঙ্কন লিখিত The Holy Blood and the Holy Grail বই দুটি। বই দুটির পিডিএফ ডাউনলোড লিঙ্ক ... http://www.mediafire.com/?obn2uly7q0sgojj http://www.mediafire.com/?8550w8y69j3dljz এই প্রামান্যচিত্রটিতে ফিলিস্তিনে নাইট টেম্পলারদের কার্যক্রম ... বিশেষ করে দূর্গ নির্মাণ বিষয়ে চমৎকার বর্ণনা রয়েছে; মূল পোস্টের সঙ্গে এই বিষয়টি সর্ম্পকিত না হলেও ক্রসেডের এক চমকপ্রদ অধ্যায় বলেই এখানে সংযোজিত করা হল ... প্রথম পর্বের লিঙ্ক Click This Link ছবি।

ইন্টারনেট । তথ্যসূত্র: শেষ পর্বে সংযুক্ত হবে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।