আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিচ্ছুরিত বিষাদ কণা

শরীরে আচড়ের দাগ, নষ্ট হল বুঝি আবার মানবতা! নিতান্তই অলীক তোমার সত্তা, ধুম কুয়াশায় হেটে বেড়ানো প্রেত শরীরের মত, কল্পনার অনিবার্য জাল পেঁচিয়ে ধরেছে সর্পিল সারপেন্টের মতন। স্মৃতি, বাস্তবতা আর আমার স্বল্পদৈর্ঘ্য স্বপ্নের বেড়াজালের মধ্যে তোমার বাস; দ্বন্দ্ব উসকে দেয়া তোমার মাংসাশী আনন্দ, আমি নির্বিবাদে মেনে নেই। কষ্ট পাব মেনে নিয়েই ভালবেসেছিলাম তোমাকে, উজাড় করে দিয়েছিলাম কর্মহীনতার ফুটফুটে সাতটি সকাল, ঘুমহীনতার তিন তিনটি অন্ধ প্রহর, এমনকি আমার তথাকথিত সৃজনশীলতার অর্নিবচনীয় প্রহরগুলো। আধার তরঙ্গ বিলাসিনী, বুক ভরে তুমি চাষ করো প্রতারণার কালো আফিম! আমাকে নিয়ে খেলেছ মারণিক পাশা খেলা। আমার নিউরণে যখন অনুরণন চলছিল ঘুনপোকাদের জাবর কাটার অর্থহীন পূনরাবৃত্তিময় শব্দের মতন, যখন তোমায় আরো একটু বেশি সময় নিজের কানাগলিতে একাকী করে পাবার জন্যে, ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করেছি আলোকবর্তিকা জ্বেলে, তখন তুমি এইখানের নিমগ্ন নির্জনতাকে অশ্লীল অভিনয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেছ মউমথ দর্শনে দৃষ্টিসুখ নিতে, ব্যাভিচারের রাতজীবনের কালো আকর্ষণ, ওই পাবক্লাবের মাঝে ।

নির্দয়া, আমায় তুমি বিষাদ চাষী করেছ, কি নিষ্ঠুরতায় । আমার লাঙল ফলা বেঁকে গেছে উষর মৃত্তিকার বুক জুড়ে অবিরাম কর্ষণে, যার পরতে পরতে ছিল দুখপতঙ্গের কিউপ্রিক নীল রক্ত মাখা ! হতাশার বাতাবরণে পচে যাওয়া মস্তিষ্কে, আমার রক্তকাগজের ছেড়া খেরোখাতায় না পাওয়ার মহাকাব্যিক আল্পনা। অথচ তুমি, এই তুমি অদ্ভুত এক মদিরা সুবাসে নিজেকে মুড়িয়ে, নিতে গেছ উষ্ণতার লালায়িত সঙ্গম। অসভ্য সুখের দেশে হিম জড়ানো মৌনতার কোন আবেদন থাকে না, তাকে জড়াতে হয় কোলাহলের উদ্ভট গাউন । আমার রক্তের প্রতিটি শ্বেত কণা, অণুচক্রিকার প্রাত্যহিক প্রার্থনা বেদনার মঞ্চে।

ভ্রান্তিবিলাসী হয়ে ছটফট করি প্রতিফলিত সূর্যালোকের রাতে, হেমন্তের উর্বর গর্ভবতী বিকেলে! আমি কাঁদতে থাকি ঝুমবরষারয়, মৌনতার অদ্ভুত মুখরতায়। স্মৃতির পাতারা, তোমরা আমাকে পূর্ণ করেছ জমাট কষ্টের সিম্ফনী দিয়ে। কোন সুখ, কোন আনন্দ এমনকী জনাপাচেক লোকের কোলাহল উপভোগের সুখটুকু, বিনষ্ট করেছ ফালি ফালি করে কেটে। এখন আমার আর দু:খ চাষের কোন বর্গা জমি নেই, তাই বলছি তোমাকে- বেচে থাকাটা খুব সহজ, যন্ত্র হয়ে, শাদা কালো স্বপ্ন বিসর্জনে, আলো-ছায়া আবেগ ছাড়া জড় দেহের পার্শ্বস্থ বৃদ্ধি নিয়ে। রচনা কাল : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১১ উৎসর্গ : লেখা শেষ হবার পরে আমার যে আনন্দ হয়েছিল সেটা কল্পনাতীত।

এই প্রথম আমি মুক্ত গদ্য লিখলাম। ভাবা যায় ? জীবনের চব্বিশটি বছর পার করে দিলাম একটা মুক্তগদ্য লেখা হল না। তো এই ব্লগে যাদের মুক্ত গদ্য পড়ে আমি মুগ্ধ, বিস্মিত, কিছু ক্ষেত্রে বাকরুদ্ধ হয়েছি তাদের একজন ব্লগার মতিউর রহমান সাগর । অসাধারণ সব মেটাফোর তার হাত দিয়ে বেড়োয়। সার্থক সব চিত্রকল্প তার মুক্তগদ্যে।

এইটি লেখা শেষ হবার পরেই মনে এল তার কথা। উৎসর্গ তাকেই। কিন্তু আজ পোস্ট করার কারণ আজ তার জন্মদিন (২৮ ফেব্রুয়ারি)। জন্মদিনের নিরন্তর শুভেচ্ছা। আমাকে না চিনে, না জেনে, বলা চলে ঠিক মত পরিচিত না হয়ে যে আপন তিনি করেছেন আমাকে আমি কি বলব, ভাষা হারিয়ে ফেলি এই ভালবাসায়।

অনেক অনেক শুভকামনা ভাইয়া। এবারের বইমেলায় প্রতিদিন মিস করেছি আপনাকে। বি.দ্র: সামঞ্জস্য পূর্ণ ছবি পেলে আমাকে এই পোস্টের মন্তব্যে দিয়ে যাবেন ভাই। আমি পেলাম না। কথোপকথন টা স্মৃতির সাথে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।