আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিডিং ক্লাবের আড়ালে হিযবুত তাহরীর!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিডিং ক্লাবের আড়ালে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ উঠেছে। ক্লাবটি নানা কৌশলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের সংগঠিত করছে বলে জানিয়েছে শিক্ষাথীরা। শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ জানায়, আরিফ খান নামের এক সাবেক শিক্ষার্থী ক্লাবটির পরিচালক। সে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীদের মটিভেশন দিয়ে প্রথমে রিডিং ক্লাবের সদস্য বানাচ্ছে। পরবর্তীতে তাদেরকে হিযবুত তাহরীরের কর্মী বানিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ও আশপাশের এলাকাগুলোতে হিযবুত তাহরীরের লিফলেট ও পোস্টার বিলি করতে দেখা যাচ্ছে ক্লাবটির সদস্যদের। তারা যে কোনো সময় ক্যাম্পাসে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্লাবটির পরিচালক আরিফ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা অবস্থায় সে হিযবুত তাহরীরের সক্রিয় কমী ছিলো বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যখন ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়, তখন আরিফ পড়াশোনার অজুহাতে লন্ডনে পাড়ি জমান।

এর এক বছর পর আবার দেশে ফিরে আসে। দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিডিং ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে। এরপর এ ক্লাবের ব্যানারে নানা ধরনের সভা-সেমিনার করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে সংগঠিত করতে থাকে। সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও ডাকসুর সামনে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বৈঠক করে আরিফ। বৈঠক চলাকালে কেউ পাশে গিয়ে দাঁড়ালে তাকে সরে যেতে বলা হয়।

এখানে প্রতিদিন জড়ো হয়ে কি করছে জানতে চাইলে ক্লাবের সদস্যরা বলে যে, “গ্রুপ স্টাডি করি। ” এ সময় তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও দেখা গেছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছে, বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ দেয়ার পর এক সপ্তাহ তারা গা ঢাকা দেয়। পরে আবার তাদের ক্যাম্পাসে বৈঠক ও অন্যান্য সাংগঠনিক কার্যক্রম করতে দেখা যায়।

রিডিং ক্লাবের সঙ্গে হিযবুত তাহরীরের সম্পর্ক আছে কিনা- জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ বলেন, রিডিং ক্লাবের সঙ্গে হিযবুত তাহরীরের সম্পর্ক রয়েছে- এমন একটি অভিযোগ সম্প্রতি আমার কাছে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্লাবটির পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে তাদেরকে ক্যাম্পাসে সভা-সেমিনার করতে নিষেধ করে দিয়েছি। তবে তারা হিযবুত তাহরীরের সদস্য নাকি ধর্মভিত্তিক অন্য কোনো সংগঠনের সদস্য তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়- বলেও জানান প্রক্টর। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রিডিং ক্লাবের পরিচালক আরিফ খানকে ফোন দিলে তারা নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০০ সালে প্রাথমিকভাবে হিযবুত তাহরীরের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লিবারেটেড ইয়ুথ’ ব্যানারে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করে।

এ ব্যানারে সংগঠনটি ২০০৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে একটি সেমিনারের প্রস্তুতি নেয়। তবে ছাত্রলীগসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর বাধার কারণে ওই সময়ে তারা নির্ধারিত সেমিনার আয়োজন করতে পারেনি। ২০০৪ সালে সিলেটে প্রথমে হিযবুত তাহরীরের লিফলেটসহ ১০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে ২০০৬ সালের প্রথমে তারা ‘ছাত্রমুক্তি’ নামে একটি ছাত্র সংগঠন গঠন করে। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ফিলিস্তিনে মুসলমানদের উপর হামলার প্রতিবাদে প্রকাশ্য উগ্রতাবাদী মিছিল করে।

এরপর থেকে মাঝে মধ্যেই হিযবুত তাহরীর খেলাফত আন্দোলনের নামে মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করে আসছিল। মূলত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলেই এ সংগঠনটি বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিস্তার লাভ করে । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.