আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উন্নয়নের নামে ঢাকা-চঃগ্রাঃ-ঢাকা মহাসড়কের লক্ষাধিক গাছ কর্তন।

wanna know and show everything I can......

রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা সেই সুন্দর বৃক্ষরাজিদের দেখে, শত জ্যামের মধ্যে থেকেও ভালো লাগতো, এই বলে যে গাছ বেঁয়ে সুন্দর বাতাস বইসে আর খেলে যাচ্ছে খেলা ছায়াগুলো তাদের অজান্তে। চঃগ্রাঃ থেকে ঢাকা মহাসড়কে যখন প্রথম ঢাকায় আসি, তখন ১৫ ঘন্টার ভ্রমণ খুব কষ্ট দিয়েছিলো, কিন্তু সরু রাস্তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে থাকা সেই বৃক্ষরাজদের দেখে চোখ জুড়িয়ে গিয়েছিলো। জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে, যানবাহনের চাপও তেমন হারে বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় দেশে রাস্তা খুবই অপ্রতুল। তাই, বর্তমান পরিস্থিতে রাস্তাঘাট বাড়ানো খুবই দরকার।

তবে সেই রাস্তা তৈরীতে যেন কোন সৌন্দর্য বিলীন না হয়, যেন জনজীবন ক্ষতির সম্মূখীন না হয়, যেন বিশ্বপরিমন্ডলে আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিফলন না ঘটে। আমরা হয়তো খুব সহজে ঢাকা-চঃগ্রাঃ-ঢাকা আসা যাওয়া করতে পারবো, কিন্তু যেখানকার অণ্চলের গাছ কাটা হবে, তাদের কি হবে? তার প্রতিফলন কি গোটা দেশে অর্থনীতিতে পড়বেনা? সেই উষ্ণায়ন কি গোটা দেশে সরিয়ে পড়বে না? উন্নয়নের নামে কি গোটা দেশ বিবর্ন হয়ে যাবে? তবে এই কথা সত্য যে, দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করার জন্য রাস্তার সম্প্রসারন খুবই দরকার। এতে করে বাড়বে যোগাযোগের সুবিধা। হয়তো অনেকে বলতে পারে, রাস্তার দুই ধারের গাছ কাটলে কি এমন ক্ষতি হবে, বরং ক্ষতির চেয়ে লাভই বেশিই হবে। হ্যাঁ কথাটা আক্ষরিক অর্থে এবং বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক।

তবে, দূর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করলে কথাটা মোটেও যৌক্তক নয়। এই গাছগুলো বড় হতে অনেক সময় নিয়েছে। তাই এই গাছগুলো কেটে নতুন গাছ লাগালে সেগুলোও বড় হতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু সেই সময়ের মাঝে আবহাওয়া কি চুপচাপ বসে থাকবে? হয়তো সেই সময়ের মাঝে বয়ে যাবে ঘূর্নিঝড়, দেখা দিবে অনাবৃষ্টি, হয়তো কিছুই নাও হতে পারে। তবে, এই সুন্দর গাছগুলো বাঁচিয়ে রেখে কি কোন বিকল্প পথ খুজে পাওয়া যাবে না? গাছগুলো রেখে কি রাস্তা সম্প্রসারন করা যাবেনা? হয়তো অনেকের জমি হারাতে হবে, তাদের ন্যায্য পাওনা দিয়ে কি সেই সমাধান করা যাবেনা? ন্যায্য পাওনা দিয়েও হয়তো জমি অধিগ্রহন করা যাবেনা।

কিন্তু রাস্তা সম্প্রসারন করতে যে জমির অধিগ্রহন হচ্ছে সেটা কি কোনভাবেই আর বাড়ানো যাবে না? রাস্তার উপর চাপ কমানোর জন্য কি রেল পরিবহনকে আধুনিকায়ন করা যাবে না? হয়তো এই কথাগুলো আমার পক্ষে বলা সহজ হচ্ছে। যারা এর জন্য নীতিনির্ধারন করছে, বা যারা পরিকল্পনা করছে তারাও হয়তো অনেক ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে। তারাও হয়তো আমাদের মতো করে ভেবে দেখেছে। কিন্তু উনারা যেভাবেই ভেবে দেখুকনা কেন, যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা পূনর্বার যাচাই বাচাই করা হোক। তাদের মূল উদ্দ্যেশ্য যেন গাছ বাঁচিয়ে রাস্তা সম্প্রসারন হয় সেইটাই কাম্য।

এতে করে অনেক বিকল্পের সন্ধান আসবে যাতে করে গাছগুলোকে বাঁচানো যায়। হয়তো, অনেকে চুপি চুপি বা প্রকাশ্যে হাসতে পারে, আবার অনেকে কয়েকটা কথা বলে বংশও উদ্ধার করতে পারে এই দেখে যে গুটিকয়েক বৃক্ষপ্রেমিকের মায়া কান্না। হয়তো দেখাবে অনেক মায়াময় স্বপ্ন যা করছে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ। হয়তো আরো অনেক স্বপ্ন দেখাবে যা আমাদের স্বপ্ন দেখাতে বাধ্য। একসময় দেশে অনেক গাছগাছালি ছিলো।

সেই গাছপালা আজ আর নেই। অনেকে গাছ কেটেছিলো জীবিকার জন্যে, আবার অনেকে বাড়ি ঘর বানানোর জন্যে, আবার অনেকে জমির পরিধি বাড়াবার জন্যে। বড় বড় বনায়ন ধংস করে আর নদী নালা ডোবা ভরাট করে অনেকে গড়েছে শিল্প কার-খানা, করেছে আরো নানান উন্নয়ন, জীবনযাত্রার উন্নয়নের নামে। আজও সেই উন্নয়নের নামে গাছগুলো কাটতে হবে। তা না হলে যে জীবনযাত্রা থমকে দাড়াবে!!! করা যাবেনা অর্থনীতিকে গতিশীল, তা না হলে যে দেশ আজ আমাদের পিছিয়ে পড়বে বিশ্বায়নের যুগে।

কেবল মাত্র সৌন্দর্যহানির জন্যে, আর কতিপয় ভবিষ্যৎ সমস্যার কারনে আমরা কেন পিছিয়ে পড়বো। এই হলো বিশ্বায়নের যুগে আমাদের চিন্তাভাবনা। এ যেনো আমাদের নিষ্ঠুরতা। ডাকাত, সন্ত্রাসীরা মানুষ খুন করে নিজেদের সপদশালী আর খবরদারি বাড়ানোর জন্য। আর আমরা বৃক্ষ নিধন করছি আমাদের উন্নয়নের জন্য।

সবকিছুই নিজের ভালোর জন্য। কে দোষী আর কে নির্দোষী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.