আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেন এই মিথ্যাচার-ধাপে ধাপে সংশোধন করেও যীশুকে এখনো ক্রুস থেকে নামানো গেল না

পথ্য তো রোগীরও লাগে না ভালো! যদিও এটা তার রোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে,তথাপিও! সে যাই বলুন বিকৃত করে কি যথার্থ বানানো যায়, যা করা যায় তা নামেই মাত্র। যেমন ধরুন, প্রকৃত বিকৃতকারীদের কথা। কতবার পরিবর্তন, পরিমার্জন-পরিবর্ধন হল তবু কি মনুষ্য রচিত গ্রন্থের কোন উন্নতি হলো? ধাপে ধাপে সংশোধন করেও যীশুকে এখনো ক্রুস থেকে নামানো গেলনা, কেননা, কারো মতে তিনি ক্রুসবিদ্ধ আবার কারো মতে তিনি উর্ধগামী। তেমনি যোহনের মতে মধ্যপান স্বীকৃত কিন্তু অপরাপর লেখকদের মতে পরিহারকৃত। পলের মতে মিথ্যা বলাতে দোষ নেই যদি তা হয়ে থাকে ঈশ্বরের ধর্ম প্রচার-প্রসারের জন্য আবার একই গ্রন্থে পাওয়া যায় মিথ্যা বলো না।

আহ! জনাব এসব ছাড়ুন তো, আমাদের ঈশ্বরের কথা বলুন, সে নাকি একটা কান্ড করে বসেছে, এমন কাজ কি কেউ করে? আচ্ছা বলুন তো এ কথা সত্য কিনা? বলি কোন কথা? ঈশ্বর নাকি মিথ্যের দায়ে জেলে গেছেন? সর্বনাশ! এ কেমন কথা? এমন মিথ্যে কথা কেউ কি পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে বলতে পারে? তবে এটা শুনেছি! বিকৃত বাইবেলের মতে এটা নাকি অতি স্বাভাবিক। কেননা,বাইবেলের সম্মানিত বিকৃত সাদনকারীগণ পরমেশ্বরের ব্যাপারে যেসব গালগপ্প মেরেছে তাতে এমনটি ঘটা অস্বাভাবিক নয়। বাইবেলের আদিপুস্তক ২ এর ১৭ নং আর ২৩ নং গদ এ পাওয়া যায়- ‘'১৭ কিন্তু সদসদ্ জ্ঞানদায়ক যে বৃক্ষ তাহার ফল ভোজন করিও না, কেননা,যে দিন তাহার ফল খাইবে,সেদিন মরিবেই মরিবে। '' (আদিপুস্তক-২(১৭),পৃষ্ঠা-৩,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি) বাইবেলের আদিপুস্তকের ২ এর ২৩ নম্বর উক্তিতে বলা হয়েছে, ঐ বৃক্ষের ফল খাওয়ার (ভক্ষণের) ফলে আদমের কি মৃত্যু হয়েছিল? সদাপ্রভু ঈশ্বর কি আদমের অপরাধের পর তাঁর কথা বলবৎ রেখেছিলেন? ''২৩ এই নিমিত্ত সদাপ্রভু ঈশ্বর তাঁহার এদনের উদ্যান হইতে বাহির করিয়া দিলেন,যেন তিনি যাহা হইতে গৃহীত,সেই মৃত্তিকাতে কৃষিকর্ম করেন। ''(আদিপুস্তক-২(২৩),পৃষ্ঠা-৩,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি) ঈশ্বরের কথা অমান্য করলে আদমের মৃত্যু হবে।

ঈশ্বর মৃত্যু দিয়েই আদমকে ভীতি প্রদর্শন করেছিলেন,অথচ আদমের ভুলের জন্য সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে এদনের উদ্যান থেকে অপসরণ করলেন মাত্র। অর্থাৎ জান্নাত থেকে বের করে দিলেন মাত্র। সদাপ্রভু ঈশ্বর তাঁর কথার ব্যতিক্রম করলেন। যেখানে আদমের মৃত্যু হওয়ার কথা সুনিশ্চিত ছিল সেখানে আদম সুস্পষ্টভাবেই সুরক্ষিত থাকলেন। তাহলে কি ঈশ্বর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছিলেন অথবা সদাপ্রভু অহেতুক মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে তাঁর সৃষ্টিকে ভীতি প্রদর্শন করেছিলেন? তাহলে কি বলা যায় সদাপ্রভু ঈশ্বর মিথ্যাবাদী? হয়ত বলে উঠবেন- সদাপ্রভূ নিশ্চয় আদমকে শাস্তি দিয়েছিলেন এবং আদমের মৃত্যুও হয়েছিল।

তবে বাইবেলের মতে সে মৃত্যু ছিল ভিন্ন ধরনের মৃত্যু। বাইবেলের সম্মানিত দক্ষ লেখকগণ যখন কোনো প্রশ্নের উত্তরে কোনোঠাসা হয়ে যান তখন বাইবেলের শব্দগুলোর চুল ছেড়া ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে নেমে পড়েন আর সঙ্গে সঙ্গে উদ্ভাবন করেন নতুন কিছু অর্থ অথবা শব্দটিকে ভেঙ্গে সৃষ্টি করেন একাধিক ব্যাখ্যা। কখনো বলেন এটা হিব্রু আবার কখনো বলেন,এটা গ্রীক আবার কখনো বলেন,এটা হিব্রু বা গ্রীকের কোনোটিই নয় বরং এটা আমাদের ব্যক্তিগত ভাণ্ডার থেকে গৃহীত। উপরের আদিপুস্তকের ২(১৭) গদে আবশ্যিক যে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে, আদিপুস্তকের মূল ভাষা হিব্রুতে তাকে মউত বা ম'ত্ বলা হয়েছে। যার অর্থও দাঁড়ায় মৃত্যু বা ইংরেজিতে (to die) টু ডাই।

সুতরাং মূল মউত শব্দটিকে ভাঙ্গাভাঙ্গি করে যখন আর কোনো ফায়দা করা গেল না তখন বিকৃত সাধনে বিশেষ দক্ষ লেখকবৃন্দ আবিষ্কার করলেন এই শব্দাটির অর্থ কি কি প্রকারের হতে পারে বা হওয়া উচিত? যেখানে সদাপ্রভূ ঈশ্বর নিজেই এই শব্দটির অর্থের প্রকারভেদ প্রকাশ করেননি সেখানে তিনারা এই শব্দটির তিনটি প্রকার উদ্ভাবন করে নিলেন যাতে করে কেউ প্রশ্নবানে তাদেরকে জর্জরিত করতে সাহস না করেন। তিনারা বললেন- ঐ মৃত্যু বা মূল মউত শব্দটির মাধ্যমে তিন প্রকারের মউত বা মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে মূলত প্রথম প্রকার হল আদমের ঐ মৃত্যু যা ছিল আধ্যাত্মিক-ঐশ্বরিক মৃত্যু (Spiritual Death) স্পিরিচু্য়াল ডেটথ্। আর দ্বিতীয় প্রকারের মৃত্যু হল দৈহিক জাগতিক মৃত্যু (Physical Death), অপর প্রকারের মৃত্যু হল মনঃত্তাতিক মৃত্যু (Death of Soul)। আদৌ কি সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমের কাছে এই তিন প্রকারের মৃত্যুর কথা পরিষ্কার করে বর্ণনা করেছিলেন যখন তিনি তাকে মৃত্যু বা মউত এর ভয় প্রদর্শন করে বলেছিলেন 'অবশ্যই মরিবেই মরিবে' (surely die)? পরিবর্তনশীল নতুনত্বের প্রত্যয়ী লেখকবৃন্দ পরিবর্তন করতে করতে এতটাই যুগোপযুগী করেছেন যে, বাইবেল নিজেই ভুলতে বসেছে যে এর আরো দু' দুটি পুরাতন নাম ছিল? ভুলে যাওয়া নামগুলোর অভাব পূরণে নতুন দু'চারটে নাম যে রাখা হয়নি তাও নয়-ক্যথলিক বাইবেল, গ্রীক অর্থডক্স বাইবেল... (ধারাবাহিক ভাবে চলবে.........) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।