আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উটকো-ঝুটকো পোলাপানদের বাংলিশ কথা বলার উপর হাইকোর্টের গজব পড়ছে । সাথে সাথে এই সকল লুচ্চাদের পালিত বাবাদের মাথায় হাত । এবার যদি বাংলাভাষ'র বিকৃতি কিছুটা বন্ধ হয় ।

শুনুন শুনুন দেশেবাসী শোনেন দিয়া মন শুরু হইছে রক্ষার করা বাংলাভাষার মান । । । । কতকিছু ভালো মন্দ ঘটছে প্রতিদিন কেউবা থাকে তাহার মাঝে হইয়া বেহুশ ।

। টেলিভিশন ও রেডিওতে ‘বিকৃত বাংলা উচ্চারণে’ অনুষ্ঠান প্রচার এবং ‘ভাষা দূষণ’ না করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলের শুনানি না হওয়ার পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য এই আদেশ দেয়। বাংলা ভাষায় দেওয়ার ওই আদেশে আদালত বলে, “আমরা আদেশ জারি করছি যে, বাংলা ভাষার পবিত্রতা রক্ষা করতে সর্বোতভাবে চেষ্টা করতে হবে। এই ভাষার প্রতি আর কোনো আঘাত যাতে না আসে সে বিষয়ে সচেষ্ট হতে হবে।

” একইসঙ্গে ভাষার পবিত্রতা রক্ষা ও দূষণ রোধে একটি রুলও জারি করেছে আদালত। সংস্কৃতি সচিব, তথ্য সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির চেয়ারম্যান, সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান কর্মকর্তা; রেডিও টুডে, রেডিও এবিসি ও রেডিও ফুর্তির প্রধান কর্মকর্তাকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে হবে। বাংলা ভাষার দূষণ, বিকৃত উচ্চারণ, ভিন্ন ভাষার সুরে বাংলা উচ্চারণ, সঠিক শব্দ চয়ন না করা এবং বাংলা ভাষার অবক্ষয় রোধে বাংলা একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে প্রধান করে একটি কমিটি করারও আদেশ দিয়েছে আদালত। এসব বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে- সে বিষয়ে ২০ মার্চের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে এই কমিটিকে। এই কমিটিতে কে কে থাকবেন, তা নির্ধারণে চূড়ান্ত ক্ষমতা দেওয়া হয় আনিসুজ্জামানকে।

তবে আদালত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কবি নির্মলেন্দু গুণ, রফিক আজাদ ও সৈয়দ শামসুল হকের নাম প্রস্তাব করেছে। আদালত বলে, “তাদেরকে কমিটিতে রাখা যেতে পারে। ” প্রথম আলোতে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা একটি নিবন্ধ বৃহস্পতিবার আদালতের নজরে আনার পর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রকিব উদ্দিন আহমেদ ‘ভাষাদূষণ নদী দূষণের মতোই বিধ্বংসী’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন। পরে আদালতে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও মুরাদ রেজা, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন।

আদেশে বলা হয়, “রকিব উদ্দিন আহমে স্বেচ্ছা-প্রণোদিত হয়ে বাংলা ভাষায় দূষণ প্রক্রিয়ায় ব্যথিত হয়ে, চিন্তিত হয়ে, এটা রোধ কল্পে আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি উপসম্পাদকীয় আমাদের নজরে এনেছেন, যাতে বলা হয়েছে, ভাষা দূষণ নদী দূষণের মতোই ভয়ঙ্কর। “এই ভাষা বঙ্গবন্ধুর ভাষা, রবীন্দ্রনাথের ভাষা, শরৎচন্দ্রের ভাষা, জীবনানন্দের ভাষা, বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষা, আলাওলের ভাষা, সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাষা, লালনের ভাষা, হাসন রাজার ভাষা, শাহ আব্দুল করিমের ভাষা, জসীম উদ্দীনের ভাষা ও কায়কোবাদের ভাষা। “এই ভাষার ওপর আজ বলৎকার চলছে। আমাদের জাতি সত্ত্বার অস্তিত্ত্ব রক্ষার জন্যই অনতিবিলম্বে এটা রোধ করতে হবে।

বাংলা আজ কেবল বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরার ভাষা নয়, এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি ভাষা। ” আদেশের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, “এই ভাষার জন্য রফিক-জব্বার শহীদ হয়েছেন, ভাষা দিবস আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই ভাষাতে রবীন্দ্রনাথ প্রথম এশীয় হিসাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এই ভাষা চর্চার কারণে আজ লন্ডনে শেক্সপিয়র জাদুঘরে তার ভাষ্কর্য স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, লালন ও হাসন রাজার ওপর গবেষণা হচ্ছে।

” “বিশ্বের নানা দেশ থেকে ভাষা বিশেষজ্ঞরা এদেশে এসে এই ভাষার প্রাচুর্য অনুসন্ধান করছেন। এই ভাষায় বঙ্গবন্ধু প্রথম জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছিলেন, যা সে সময় বিশ্ব নেতাদের মুগ্ধ করেছিলো। ” উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দিন থেকেই এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো উল্লেখ করে আদালত বলে, “পৃথিবীতে বাংলাই একমাত্র ভাষা যার জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এ রকম দৃষ্টান্ত আর দ্বিতীয়টি নেই। সুতরাং এ ভাষার পবিত্রতা আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে।

” ধর্মান্ধতার বশবর্তী হয়ে যারা বাংলা ভাষার ওপর একসময় আক্রমণ করেছিল- তাদের সেই চেষ্টা এখনো চলছে উল্লেখ করে আদালতের আদেশে বলা হয়, “তাদের অগ্রযাত্রা আমরা চলতে দিতে পারি না। ” এ মামলার শুনানিতে আগামীতে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিক উল হক, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার আকতার ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিন, লেখক সৈয়দ শামসুল হক ও সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের বক্তব্য শোনা হবে বলে জানিয়েছে আদালত। In Details Click Here ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।