আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেশমাকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনকারী সাংবাদিক সায়মন ভাঁওতাবাজ ॥ হলুদ সাংবাদিকতার দায়ে গ্রেফতারও হয়েছিলো

সায়মন রাইট নিজেই ধোঁকাবাজি, হলুদ সাংবাদিকতা ও টাকার বিনিময়ে বানোয়াট সংবাদ তৈরি করে হয়েছে শিরোনাম। হয়েছে গ্রেপ্তার ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বহিষ্কার। আর এই সেই সায়মন রাইটই গত ৩০ জুন ২০১৩ ঈসায়ী তারিখে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড সানডে মিররে রেশমা উদ্ধার নিয়ে কথিত অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করে আবারো সংবাদ হয়েছে। বিতর্কিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “রেশমা উদ্ধার ঘটনা স্রেফ ভাঁওতাবাজি। ” তবে সবার ধারণা, এটাও সায়মনের ধোঁকাবাজি।

কেননা সায়মন নিজেই একটা ধোঁকাবাজ। রানা প্লাজা ভবন ধসের ১৭ দিন পর উদ্ধার করা রেশমার ঘটনা ভাঁওতাবাজি কিনা- এমন বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন করেছে যেই ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন রাইট, তাকে ছলচাতুরি ও র অপরাধে গ্রেফতার করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশ। তবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেখানোর জন্যে নাশকতার ছলনাময় ঘটনা সাজানোর অপরাধে। খবর সূত্র- ডেইলি স্টার। ইতিহাস বলছে, ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালে হলুদ-সাংবাদিক হিসেবে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শিরোনাম হয় কুচক্রী রাইট।

সে সময় তার কর্মকান্ডকে কুসাংবাদিকতা হিসেবে অভিহিত করা হয় বিভিন্ন মহল ও গণমাধ্যমে। কানাডাভিত্তিক অনলাইন বার্তা সংস্থা ‘নতুন দেশ’ সায়মন রাইট সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে গত সোমবার ১ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী তারিখে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। বিদেশী হলুদ মিডিয়া যখন রেশমাকে উদ্ধার ঘটনাকে সাজানো কাহিনী বলে বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার করছে, তখন তা পাল্টা অনুসন্ধান করে ভুল নাকি সঠিক এমন উদ্যোগ দেশী মিডিয়াগুলো না নিলেও হলুদ সাংবাদিক সায়মন রাইটকে নিয়ে কানাডাভিত্তিক অনলাইন বার্তা সংস্থা ‘নতুন দেশ’ অন্তত একটি হলেও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অবশ্য মিররের আগে দৈনিক আমার দেশ অনলাইনে রেশমাকে নিয়ে একই ধরনের (মিররের অনুরূপ) প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও তা নিয়ে দেশের শীর্ষ দৈনিক, অনলাইন সংস্থা বা রেডিও কোনো পাত্তা না দিলেও বিদেশী মিডিয়ায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে টনক পড়েছে। সে যাই হোক, দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে ধোঁকাবাজি ঘটনা সাজিয়েছিলো ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড সানডে মিররের কুচক্রী সাংবাদিক সায়মন রাইট।

ওই অপরাধে তাকে গ্রেফতারের খবরও সেসময় প্রকাশ করে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি)। গত রোববার (৩০ জুন ২০১৩ ঈ.) সানডে মিররে ‘এক্সক্লুসিভ’ হিসেবে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রেশমা বেগমকে উদ্ধারের ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। প্রতিবেদনটি লেখে সায়মন রাইট। ২৪ এপ্রিল ৯ তলাবিশিষ্ট রানা প্লাজা ধসে পড়ার ১৭ দিন পর রেশমাকে জীবিত উদ্ধার করা হয় ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে। বিশ্বকাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানসম্মত নয়- এটি প্রমাণ করতে পাভলোস জোসেফ নামে এক সমর্থককে ইংল্যান্ড ফুটবল দলের ড্রেসিং রুমে প্রবেশের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলো সায়মন।

আলজেরিয়ার সঙ্গে ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড ড্রেসিং রুমে প্রবেশের দায়ে ওই সমর্থককেও গ্রেফতার করা হয়। সানডে মিররও সেসময় সিমনের গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছিল। বিশ্বকাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলতেই একাজ হয় বলে আফ্রিকান পুলিশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। আফ্রিকান পুলিশ কর্মকর্তা ভেকি জানায়, সমর্থক পাভলোসকে যখন গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ খুঁজছিল তখন তাকে আশ্রয় দিয়ে তার সাক্ষাৎকার নেয়ার কথা স্বীকার করে সায়মন রাইট। ওই সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাভলোসের জন্য একটি বিলাসী হোটেলে রুমও ভাড়া করেছিলো সায়মন।

আদালতে কেপটাউন পুলিশ বলে যে, সায়মন রাইট নাম-ঠিকানা গোপন করে ব্রিটিশ তরুণ জোসেফের জন্য হোটেলের রুম বুকিং দেয়। সে-ই জোসেফকে ইংল্যান্ড দলের ড্রেসিংরুমে পাঠায়। পুলিশের ভাষ্য, সায়মনের লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মতো একটি দেশে বিশ্বকাপ আয়োজনে নিরাপত্তা ত্রুটির প্রশ্ন তুলে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করা। ঘটনাটি সৃষ্টি এবং পরবর্তীকালে ‘এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ’র জন্য জোসেফকে ৩৫ হাজার পাউন্ড দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয় সায়মন রাইট। জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তারের পর প্রতিদিন থানায় হাজিরা দেয়ার শর্তে তাকে জামিন দেয়া হয়।

তবে সে বিশ্বকাপ এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষিত হয়। এদিকে আদালত জোসেফকে জরিমানা আর রাইটের বিচার শুরু করে। পরে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার অভিযোগ প্রত্যাহার করে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেসনোটে বলা হয়, সায়মন রাইট দক্ষিণ আফ্রিকায় অনাকাঙ্খিত। সানডে মিররের রেশমা বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রানা প্লাজা ধসের দিন রেশমা তার (ওই সহকর্মী) সঙ্গে ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।

তারা দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর রেশমা নিখোঁজ হন। আর দুর্ঘটনার ১৭ দিন পর রেশমাকে দেখা যায় ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে আনা হচ্ছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.